<p style="text-align:justify">আন্দোলনের মুখে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মো. আজিজুর রহমান। সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে তিনি পদত্যাগপত্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রেরণ করেছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা পদত্যাগের বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।  </p> <p style="text-align:justify">এর আগে গত রবিবার অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমানকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। সোমবারও দাবির পক্ষে মানববন্ধন করেন তারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিকেলে পদত্যাগ করেন পরিচালক। </p> <p style="text-align:justify">দুই দিন ধরে পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে সরব আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একাধিক কর্মকর্তা সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে অধিদপ্তরে নতুন করে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ হয়নি। কোনো পদোন্নতিও হয়নি। জনবল কমতে কমতে প্রয়োজনের চেয়ে অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। অন্যদিকে অধিদপ্তরের কাজের বিস্তৃতি বেড়েছে। এ ছাড়া পরিচালকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিজের মেয়াদ বাড়ানো এবং বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও ক্রয় দুর্নীতির অভিযোগও করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। </p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পরিচালকে বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালক চাপের মুখে পদত্যাগপত্র সচিব বরাবর প্রেরণ করেছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানের করা এবং পূর্বাভাস ও বিভিন্ন সতর্কবার্তা দেওয়ার মাধ্যমে জনগণের সেবা করা। সে ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম, অসাম্য নীতি অথবা কোনো রকম দুর্নীতি যাতে পরবর্তীতে কেউ করতে না পারে, সে বিষয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সোচ্চার থাকবেন।’ </p> <p style="text-align:justify">অধিদপ্তরের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিচালকে হিসেবে মেয়াদ পার হওয়ার পরও আজিজুর রহমান দুই বছর অবৈধভাবে নিজের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। এ ছাড়া অনেক কেনাকাটা ও প্রকল্পে অনিয়ম করেছেন এবং সার্বিকভাবে তিনি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ বিবেচনা করেননি। শীর্ষ পদে থেকে আরেকজনকে যদি সেই পদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে না পারেন তাহলে তিনি কেমন যোগ্য কর্মকর্তা হলেন?’ </p> <p style="text-align:justify">এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘একজন সেনা অফিসার তৈরি করতে যে রকম দীর্ঘ সময় লাগে, একজন আবহাওয়াবিদ তৈরি করতে ঠিক সে রকম দীর্ঘ সময় লাগে। সে জন্য আমাদের জরুরি নিয়োগ এবং নিয়োগবিধি সংশোধন করা দরকার।’ </p> <p style="text-align:justify">এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আজিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে অধিদপ্তরের পরিচালকের পদ থেকে আজিজুর রহমানের পদত্যাগের পর ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিস্থিতি বুঝে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত আগামীকাল মঙ্গলবার জানাব। কর্মবিরতির পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত। কিন্তু মন্ত্রণালয় যদি নীতিমালার বাইরে বা অধিদপ্তরের স্বার্থের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তাহলে আমরা সরাসরি বিমানবন্দরসহ সব অফিসে কর্মবিরতিতে যাব।’</p>