<p style="text-align:justify">অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর অধীন ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিবদের সঙ্গে আজ সোমবার বৈঠকে বসবেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আজ সকাল ১১টায় এ বৈঠক হবে। গতকাল রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত চিঠি ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে শুধু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর/সংস্থার সচিবদের সভায় যোগ দিতে হবে না। কারণ জনপ্রশাসন, ভূমিসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে চার-পাঁচজন করে সচিব কাজ করছেন। তাই যেসব সচিব বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থায় আছেন, তাঁদের এ সভায় উপস্থিত হতে হবে না।</p> <p style="text-align:justify">সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মপরিধি এবং ভিশন ও মিশন উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের চলমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করবেন সচিবরা। এরপর প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হতে পারে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কম সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রের কিছু সংস্কার করতে চায়। এ জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন কালের কণ্ঠকে গতকাল রাতে বলেন, বৈঠকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় সম্পর্কে একটি কর্মপরিকল্পনা আসতে পারে। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আমরা কিভাবে কাজ করব, তা এ বৈঠকে বোঝা যাবে।’</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সচিব কালের কণ্ঠকে বলেন, নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁরা প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন। সদ্যোক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব কাজ ‘বিশেষ অগ্রাধিকার বা দলীয় বিবেচনায়’ করা হয়েছে, সেগুলোও প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হবে।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত ১৫ বছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়নের সার্বিক চিত্রের প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করছেন।</p> <p style="text-align:justify">শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করছে। এ জন্য দিনব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছ থেকে সার্বিক পরিস্থিতির প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও সংহতি জানানো জনতার যৌথ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় গত সোমবার। এরপর তিন দিন দেশে সরকার ছিল না। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। পরদিন এই সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করা হয়। গতকাল ছিল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস। এর মধ্যে অনেক উপদেষ্টা তাঁদের অধীন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">প্রধান উপদেষ্টার অধীন ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হলো—মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।</p> <p style="text-align:justify"><strong>প্রধান উপদেষ্টা ছেড়ে দিলেন দুই মন্ত্রণালয়</strong></p> <p style="text-align:justify">প্রথমে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে রাখা হয়েছিল ২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব। গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় দুই উপদেষ্টার হাতে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। কারণ সরকারের আরো দুই উপদেষ্টা গতকাল শপথ নিয়েছেন। শপথের পর তাঁদের দপ্তর দেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এর মধ্যে বিধান রঞ্জন রায় পেয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সুপ্রদীপ চাকমা। প্রধান উপদেষ্টাসহ এই সরকারের সদস্যসংখ্যা ১৭। এর মধ্যে তিনজন ঢাকার বাইরে থাকায় বৃহস্পতিবার শপথ নিতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে বিধান রঞ্জন রায় ও সুপ্রদীপ চাকমা গতকাল শপথ নিয়েছেন। ফারুক-ই-আজম এখনো শপথ নেননি।</p>