<p>ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থা তিন পর্বের ৭০ পৃষ্ঠার একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে শুধু আনার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ই নয়, উঠে এসেছে ঝিনাইদহের রাজনৈতিক দলাদলির পাশাপাশি নেতাদের নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। প্রতিবেদনটি সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। </p> <p>ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমপি আনার হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন। মূলত শাহীনের পরিকল্পনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা যুক্ত হন। মূলত অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ কামানোকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে সেখানে। এসবই তাঁদের দ্বন্দ্বের মূল কারণ।</p> <p>এমপি আনারের রাজনৈতিক উত্থানসহ জেলার অন্যদের সঙ্গে তাঁর বিরোধের বিষয় তুলে ধরে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনবারের এমপি আনার। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। এ সময়ের মধ্যে এলাকার অনেকেই তাঁর শক্র হয়ে ওঠে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।</p> <p>এলাকার সাবেক এক সংসদ সদস্যের এমপি মনোনয়ন নিয়ে আনারের সঙ্গে বিরোধ ছিল জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এমপি আনারের বিরোধ ছিল। এ ছাড়া একসময় এমপি আনারের ব্যাবসায়িক অংশীদার ছিল আখতারুজ্জামান শাহীন। তবে তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তাঁরা একসময় একে অপরের শক্র হয়ে যান। </p> <p>প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতা তিন বছর আগে শাহীনের সঙ্গে অর্থ বিনিয়োগ করে চোরাচালানির অংশীদার হন। ঝিনাইদহের মহেশপুর, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও যশোরের চৌগাছা সীমান্ত নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন শাহীনসহ তাঁর সহযোগীরা। তবে সীমান্তবর্তী ওই এলাকার সাবেক এক এমপির সঙ্গে চোরাচালান নিয়ে বিরোধ শুরু হয় তাঁদের। তখন পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান সেই এমপি আনার। সেই বাধা দূর করতে শাহীন ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাঁকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন।</p> <p><strong>ডিবির তদন্ত অব্যাহত  </strong><br /> এদিকে এমপি আনার হত্যা তদন্তে ডিবি জানতে পেরেছে, আখতারুজ্জামান শাহীনের পরিকল্পনায় চরমপন্থী নেতা শিমুল ভূঁইয়া এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের সার্বিক কলকাঠি নাড়েন।</p> <p>তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমপি আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহীন কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনে কিলিং মিশনের নেতা শিমুল ভূঁইয়াকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় ফিরে আসেন। ১৮ মে তিনি আবার দিল্লি হয়ে নেপাল যান। ২১ মে নেপাল থেকে দুবাই। আর ২২ মে দুবাই থেকে আমেরিকা চলে যান। তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা এই আট দিন শাহীন ঘরে বসে থাকেননি। আনার হত্যা নিয়ে অনেকের সঙ্গে তাঁর চ্যাটিং বা কথা হয়েছে।<br />  </p>