<p>নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকি। রবিবার (২৩ জুন) বেলা ১১ টায় রায়পুরা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য সবাই অংশ নিলেও অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ। পরিষদে তাঁর কক্ষটিও তালাবদ্ধ। লায়লা কানিজ লাকি আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী। </p> <p>ছাগলকাণ্ডে আলোচিত হওয়ার পর রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-১ শাখার উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ড. মতিউর রহমানকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।</p> <p>সূত্র জানায়, ঈদের অগের দিন থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাগলকাণ্ড নিয়ে আলোচনা শুরু হলেও উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে মরজাল এলাকায় নিজবাড়িতে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈদ পুর্ণমিলনী ও ভোজের আয়োজন করেন লাকি। এরপর থেকে রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমানের পাশাপাশি লায়লা কানিজকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে জনসমক্ষের আড়াল হন তিনি। </p> <p>উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, ঈদের দুই দিন আগে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদে অফিস করেছেন লায়লা কানিজ লাকি। ঈদের ছুটি শেষে এ পর্যন্ত একবারের জন্যও কার্যালয়ে আসেননি তিনি। তাঁদের ধারণা, তিনি ছাগলকাণ্ডে বেশ বিব্রত। সাংবাদিকেরাও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে তাঁর কার্যালয়ে এসে খোঁজাখুজি করছেন।</p> <p>রায়পুরার ইউএনও ইকবাল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজকে মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিং ছিল। ওসি আসেননি। আমি যোগাযোগ করেছিলাম। মনে হয় তিনি অসুস্থ।’</p> <p>স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস ছাদেক ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে পদটি শূন্য হয়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন রাজুর সহযোগিতায় প্রথমে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিয়ে নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ঘোষণা দেন লায়লা কানিজ লাকি। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হয়। পরে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নও বাগিয়ে আনতে সক্ষম হন লায়লা কানিজ লাকী। </p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সহজে চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্নে বাঁধ সাধেন প্রতিদ্বন্দ্বী ৬ প্রার্থী। একপর্যায়ে অর্থের জোরে প্রভাব বিস্তার করে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে অন্য ছয় প্রার্থীকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লায়লা। এবার ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২২ মে এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে তা স্থগিত করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এবারও লায়লা কানিজ লাকি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফেরদৌস কামাল জুয়েল। তিনি উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান ছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। </p>