<p>ইউনিসেফের মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ পেয়েছেন তিনজন শিশু সাংবাদিকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১৫জন সাংবাদিক। আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৮তম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী শিশু অধিকার রক্ষায় সাংবাদিকদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।</p> <p>অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শিশু অধিকার বিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য বাংলা ট্রিবিউনের নগর সম্পাদক উদিসা ইসলাম ও সিভয়েজ ২৪-এর প্রতিবেদক শারমিন রিমা। শিক্ষা ও শিশু বিষয়ে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক প্রথম আলোর আহমাদুল হাসান ও ঢাকা নোটের রবিউল আলম। শিশুরা পরিবর্তনের দূত বিষয়ে পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম তামিম। জলবায়ু পরিবর্তন ও শিশু বিষয়ে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের সাধন কুমার সরকার। ঝুঁকিতে থাকা শিশুরা বিষয়ে পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের মুসা মল্লিক। একই ক্যাটাগরিতে লিঙ্গ সমতা ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে ঢাকা পোস্টের নজরুল ইসলাম এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু বিষয়ে ঢাকা পোস্টের মো. জসিম উদ্দিন এ পুরস্কার পেয়েছেন।</p> <p>এবার ভিডিও জার্নালিজম ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন যমুনা টিভির মো. বনি আমিন এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির মো. সবুজ মাহমুদ। ফটোজার্নালিজম ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক মো. সাজিদ হোসেন। ফটোজার্নালিজম অনূর্ধ্ব ১৮ বছর ক্যাটাগরিতে মো. সাফায়েত হোসেন শান্ত, ভিডিও জার্নালিজম অনূর্ধ্ব ১৮ বছর ক্যাটাগরিতে এটিএন বাংলার মো. মোজাহিদুল ইসলাম এবং প্রিন্ট জার্নালিজম অনূর্ধ্ব ১৮ বছর ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন মো. নাঈম ইসলাম।</p> <p>অনুষ্ঠানে অনূর্ধ্ব ১৮ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অন্যান্য বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন কথাসাহিত্যিক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, অভিনেত্রী ও ইউনিসেফ ন্যাশনাল অ্যামবাসেডর বিদ্যা সিনহা মিম, বাংলাদেশে রয়টার্সের সাবেক ব্যুরো প্রধান সিরাজুল ইসলাম কাদির। ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট,  ইউনিসেফের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিগাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিসেফের ইয়ুথ অ্যাডভোকেট রাবা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরিন ইসলাম, আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন প্রমুখ।</p> <p>অনুষ্ঠানের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী পুরস্কার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘শিশুদের প্রয়োজনগুলো সবার সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিশু সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে তাদের অন্তর্দৃষ্টিমূলক বিশ্লেষণ, সমাজ ও নীতিনির্ধারক উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। এরফলে শিশু অধিকারগুলো নিশ্চিতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়। তিনি আরো বলেন, পুরস্কারবিজয়ী ও পুরস্কারের জন্য মনোনীত সাংবাদিকেরা যে গল্প তুলে ধরেছেন, তাতে শিশু ও তাদের জীবনের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী নানা জরুরি বিষয় উঠে এসেছে। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর পরিস্থিতি; পিরিয়ডকালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার ক্ষেত্রে কন্যাশিশুদের চ্যালেঞ্জসমূহ; পথশিশুদের অবস্থা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের গল্প।’</p> <p>ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, ‘প্রতিবেদন, ফটো ও ভিডিও সাংবাদিকদের যে কাজগুলো আমরা দেখলাম, সেগুলো শিশুদের জীবনে কেবল কী প্রয়োজন তাই তুলে ধরেনি, বরং তাদের জীবন আরো সুন্দর করে গড়ে তোলার জন্য কী কী করণীয় সেদিকেও আলোকপাত করেছে। আজকে, মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে বিজয়ীদের সম্মান জানানোর এই সুবর্ণ ক্ষণে, আমরা শিশুদের কথাগুলো শোনার, তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেওয়ার এবং তাদের অধিকারগুলোর নিশ্চিত করার আমাদের যে অঙ্গীকার রয়েছে, তা পুনর্ব্যক্ত করছি।’</p> <p>নয় সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ বিচারক প্যানেল ১২টি ক্যাটাগরিতে (শ্রেণিতে) মনোনীত ৬৫ জনের মধ্য থেকে পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচিত করেছেন। মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রিন্ট, ফটো ও ভিডিও সাংবাদিকদের কাছ থেকে এক হাজারের বেশি কাজ জমা পড়েছে। গত বছর যেখানে জমা পড়েছিল ৩০০টি, সেখানে এবারের সংখ্যা তার চেয়ে প্রায় তিন গুনেরও বেশি। গণমাধ্যমে (প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম) প্রকাশিত সংবাদের স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজকে এগিয়ে নিতে ২০০৫ সালে মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান শুরু হয়।</p>