<article> <p><strong>আনন্দ-বেদনার ঈদ যাত্রা</strong></p> <p>ছুটি, প্রিয়জন, পরিবার। এই শব্দ তিনটির সঙ্গে মিলেমিশে আছে আনন্দ ও বেদনা। আপনজনকে পাশে পাওয়ার আনন্দ আর হারানোর বেদনা। সব মিলে কেটেছে এবারের ঈদে ঘরে ফেরা।</p> </article> <article><strong>এখন শুরু হয়েছে ফিরতি পথের যাত্রা। </strong> <p>ঈদের সঙ্গে নববর্ষ যুক্ত হওয়ায় এবার ছুটি হয়েছে লম্বা। ফলে ধাপে ধাপে ঢাকা ছেড়েছে মানুষ। ফিরছেও সেভাবেই। এতে করে ঘরে ফেরা ছিল স্বস্তির। সড়ক, মহাসড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়নি। অবশ্য শেষ মুহূর্তে ট্রেন যাত্রীর চাপ সামাল দিতে পারেনি। তবে বাকি সময়টা ছিল স্বাভাবিক।</p> </article> <article> <p>আবার শেষের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছে লঞ্চ। ফলে লঞ্চের অব্যবস্থাপনা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ছুটি শেষে গতকাল সোমবার ছিল প্রথম কর্মদিবস। তবে অফিসপাড়া এদিন তেমন জমেনি। রাজধানীর মূল সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। কোনো সড়কেই গাড়ির চাপ দেখা যায়নি। যদিও ছুটি কাটিয়ে কাজে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। তবু রাজধানীতে ঈদের আমেজ কাটতে আরো কিছুটা সময় লাগবে।</p> </article> <article> <p><b>সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুর্ঘটনা</b></p> <p>গত বৃহস্পতিবার ঈদের দিন এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ রশি দিয়ে সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ ঢোকানোর সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়।</p> <p>ওই রশির আঘাতে সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে থাকা পাঁচ যাত্রী প্রাণ হারান। কেউ কেউ পাশে থাকা লঞ্চের সঙ্গে বাড়িও খায়। ওই ঘটনায় মামলা হওয়ার পর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের তিন দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।</p> <p>সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দুর্ঘটনায় কোনো দুর্বলতা থাকলে সার্ভেয়ারদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।</p> <p><b>মহাসড়কে যানজট নেই, বাসে চাপ স্বাভাবিক</b></p> <p>ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকে গত রবিবার রাজধানীতে ফিরেছে। আবার যাঁরা ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাঁরা ঈদের পরে রাজধানী ছেড়েছেন। এই দুই ধরনের যাত্রীই আরামে ভ্রমণ করতে পেরেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রথম দফায় ঢাকামুখী যাত্রী হচ্ছে না।</p> <p>সব মিলিয়ে বাসে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক। মহাসড়কগুলোতে যানজট নেই। ফিরতি পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ খুব বেশি পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো যাত্রী বলছে, ভাড়া সামান্য কিছু বেশি নিচ্ছে।</p> <p>মহাসড়কে ঈদ যাত্রা প্রায় ভোগান্তিমুক্ত ছিল। তবে উত্তরের পথে ঈদের দুই দিন আগের রাত থেকে ঈদের আগের দিন দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের কিছু অংশে যানজট ছিল। যাত্রাপথে ভোগান্তি কমাতে বঙ্গবন্ধু সেতু একমুখী ও সেতুর পশ্চিম পারে ঢাকামুখী পরিবহন থেকে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়।</p> <p>টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, ‘মহাসড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও ময়মনসিংহগামী মানুষের ভোগান্তিমুক্ত ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করতে আমাদের সব প্রস্তুতি ছিল। সবার চেষ্টায় ঢাকাবাসী নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করেছে।’</p> <p><b>ভিড় বাড়ছে ফিরতি ট্রেনে</b></p> <p>গতকাল সকালে অফিস ধরার জন্য ট্রেনে করে ভোরে রাজধানীতে ফিরেছেন শফিকুর রহমান। পঞ্চগড় থেকে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৮টার দিকে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছায়। এই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন তিনি।</p> <p>শফিকুর রহমান বলেন, ‘আজ (গতকাল) থেকে অফিস শুরু হয়েছে। এখান থেকেই অফিসের উদ্দেশে চলে যাব। ঈদের ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় অনেক ঘোরাঘুরি করতে পেরেছি। ছেলেমেয়ের স্কুল কদিন পরে খুলবে, এ জন্য আমার স্ত্রী আরো কয়েক দিন পরে তাদের নিয়ে ফিরবেন।’</p> <p><b>সেতুতে টোলের রেকর্ড</b></p> <p>ঈদের ছুটিতে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে এক লাখ ৬৫ হাজার ৩১৯টি পরিবহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৫০ টাকা। গত শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত ১২টা থেকে গত বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত ১২টা পর্যন্ত পাঁচ দিনে বঙ্গবন্ধু সেতুতে এই টোল আদায় হয়। আগের বছর সেতুতে টোল আদায় হয়েছিল ১০ কোটি ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ১০০ টাকা।</p> <p>আর পদ্মা সেতুতে এক দিনে টোল আদায়ে আবারও নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার সেতুতে চার কোটি ৯০ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ টাকা আদায় হয়েছে। এদিন সেতু পাড়ি দিয়েছে ৪৫ হাজার ২০৪টি যান। এর আগে গত বছরের ২৩ জুন এক দিনে সর্বোচ্চ টোল আদায় হয়েছিল চার কোটি ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৩০০ টাকা।</p> <p><em>[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ ও টাঙ্গাইল প্রতিনিধি।]</em></p> </article>