<p>বিগত ছয় করবর্ষের আয়কর বাবদ আরো ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯০ টাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দিতে হবে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণকে।</p> <p>আজ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।</p> <p>এ রায়ের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড. ইউনূসের সাতটি রেফারেন্স মামলা শুনানির পর হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে ছয় করবর্ষের আয়কর বাবদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯০ টাকা টাকা দিতে হবে।’</p> <p>গ্রামীণ কল্যাণ হচ্ছে একটি অলাভজনক, সামাজিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।</p> <p>সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি কালের কণ্ঠকে বলেন, “২০১১ থেকে ২০১৬-১৭ ছয় করবর্ষে গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ২৫ কোটি ৫৯ লাখ ১৫ হাজার ২২৫ টাকা আয়কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর। এ দাবির বিরুদ্ধে আয়কর আপিল আদালতে আবেদন করে গ্রামীণ কল্যাণ। এনবিআরের দাবি বহাল রেখে খারিজ হয় গ্রামীণ কল্যাণের আবেদন। পরে আয়কর আপিল আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে গ্রামীণ কল্যাণ। এদিকে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ১২০ ধারা অনুসারে গ্রামীণ কল্যাণের তর্কিত করবর্ষের আয়কর নথি পুনর্মূল্যায়ন করে এনবিআর। পুনর্মূল্যায়নে গ্রামীণ কল্যাণের ‘শেয়ার ডিভিডেন্ট’ থেকে প্রাপ্ত আয়ের পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। এর ফলে এনবিআরের আয়কর দাবি বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৬২৪ টাকায়।”</p> <p>এ আইন কর্মকর্তা জানান, চূড়ান্ত শুনানির পর ২০১৫ সালে চারটি, ২০১৬ সালে একটি ও ২০১৮ সালে তিনটি আপিলের রায় দেন আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে গ্রামীণ কল্যাণের আপিল খারিজ করা হয়। পরে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে সাতটি রেফারেন্স মামলা করে গ্রামীণ কল্যাণ। চূড়ান্ত শুনানির পর গ্রামীণ কল্যাণের রেফারেন্স মামলা খারিজ করে রায় দিলেন উচ্চ আদালত।</p> <p>রাষ্ট্রপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মোট আয়কর থেকে উৎসে থেকে বাবদ ৩৯৬ কোটি ৯৪ লাখ ৬৯ হাজার ১৪১ টাকা কেটে নেওয়ার পর আয়কর বাবদ ৩৯ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৩ টাকা কর পরিশোধ করে গ্রামীণ কল্যাণ। ফলে বাকি থাকে ১১৯ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯০ টাকা। এ টাকাই এখন গ্রামীণ টেলিকমকে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গ্রামীণ কল্যাণের আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী।</p>