<p style="text-align: justify;">দেশে করোনাভাইরাসের নতুন উপধরন জেএন.১-এর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত এক মাসে সংক্রমণের হার বেড়েছে চার গুণের বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শীত কমলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা সংক্রমণ আরো কয়েক গুণ বাড়তে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৮.৭০ শতাংশ। শনাক্ত রোগীদের ৩২ জনই ঢাকা মহানগরের এবং একজন করে কক্সবাজার ও চাঁদপুরের। এই সময়ে আক্রান্তদের মধ্যে কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।</p> <p style="text-align: justify;">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিদপ্তর যে শনাক্তের হার দেখাচ্ছে, প্রকৃত হার এর চেয়ে অনেক বেশি। সংক্রমিত ব্যক্তি সাধারণ জ্বর, ঠাণ্ডায় কভিড-১৯ শনাক্তের পরীক্ষা করাচ্ছে না। তাই শনাক্তও হচ্ছে না। যারা পরীক্ষা করাচ্ছে তারা কোনো জরুরি প্রয়োজনে করাচ্ছে। হয় সার্জারি করার আগে, নয়তো বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে।</p> <p style="text-align: justify;">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরে করোনা শনাক্ত হওয়া ৬৪৩ জনের মধ্যে ৬২৪ জনই ঢাকা মহানগরের। অর্থাৎ মোট শনাক্তের ৯৭ শতাংশ রোগী ঢাকার। এই সময়ে মৃত চারজনের দুজন ঢাকা মহানগরের ও দুজন চাঁদপুরের।</p> <p style="text-align: justify;">অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বর্তমানে ২৯ জন কভিড রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। এর মধ্যে সাধারণ শয্যায় ছয়জন, আইসিইউতে ২২ জন ও এইচডিইউ শয্যায় একজন।</p> <p style="text-align: justify;">নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫। মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৮১ জনের। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ২০ লাখ ১৪ হাজার ৩০৩ জন।</p> <p style="text-align: justify;">সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, সাধারণত শীতকালে বাংলাদেশে করোনা রোগী কম থাকে। বর্তমানে করোনার নতুন উপধরন জেএন.১-এর কারণে সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, শীত কমলে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়তে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">মুশতাক হোসেন বলেন, নতুন উপধরন মারাত্মক না হলেও এর সংক্রমণের হার অনেক বেশি। যাঁরা মেডিক্যাল বা হাসপাতালে কাজ করেন, যাঁদের বয়স ৬০ বছরের বেশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, দীর্ঘমেয়াদি রোগ বা কোমরবিডিটি আছে, তাঁদের জন্য এখনো করোনা ঝুঁকিপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, এসব ব্যক্তির জন্য কডিভ মৃত্যুর কারণ হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, এখন যেহেতু টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যারা টিকা নেয়নি তাদের টিকা নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থান, যেমন—হাসপাতাল, গণপরিবহন বা যেখানে লোকসমাগম বেশি সেখানে মাস্ক পরা নিরাপদ। <br /> বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে বছর শনাক্ত হয় পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জন। মৃত্যু হয় সাত হাজার ৫৫৯ জনের।</p> <p style="text-align: justify;">পরের বছর ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৯ জন। মৃত্যু হয় ২০ হাজার ৫১৩ জনের। ওই বছরে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন শনাক্ত হয় ২৮ জুলাই। ২০২২ সালে শনাক্ত হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৫৮৬ জন। মৃত্যু হয় এক হাজার ৩৬৮ জনের। ২০২৩ সালে শনাক্ত হয় ৯ হাজার ১৮৯ জন। মৃত্যু হয় ৩৭ জনের।</p>