<p>শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কম্পানি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পেপারস মিলস লিমিটেড। আজ বুধবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হওয়া কম্পানিটির ৩০ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের কম্পানির পরিচালকমণ্ডলীর বিবরণী, নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাব ও প্রতিবেদনগুলো অনুমোদন করা হয়। সেই সঙ্গে ১১ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিচালকগণের পূনঃ নির্বাচনসহ ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের জন্য বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকগণ নিয়োগ বিষয়ক আলোচ্য-সূচী সমূহ সর্বসম্মতিক্রমে আনুমোদিত হয়।  </p> <p>শেয়ারহোল্ডাররা চলমান সংকট প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আলোচ্য বছরের নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণাকে কম্পানির সাফল্যের ইতিবাচক প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে সন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।</p> <p>কম্পানির উর্ধ্বতন উপদেষ্টা ও বিকল্প পরিচালক এ আর রশীদির সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন নিরপেক্ষ পরিচালক খাজা আহমেদুর রহমান, পরিচালক মো. ইমরুল হাসান, মো. নাজমুল আলম ভূঁইয়া, মোস্তফা আজাদ মহিউদ্দিন। এছাড়াও সভায় সংযুক্ত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান (এফসিএ), চীফ অপারেটিং অফিসার মির্জা মুজাহিদুল ইসলাম, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসানসহ কম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকগণ। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন কম্পানি সচিব এম. মাজেদুল ইসলাম। এসময় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার বার্ষিক সাধারণসভায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। </p> <p>অনুষ্ঠানের সভাপতি এ আর রশীদ বলেন, 'বর্তমানে কাগজ ও কাগজজাত পণ্যের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড এদেশের কাগজ ও কাগজজাত পণ্য নির্ভর খাতের প্রায় ৩০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার তীব্র প্রতিযোগীতার মধ্যেও ধরে রেখেছে। একই সঙ্গে দেশে বর্তমান টিস্যু পণ্যের বাৎসরিক চাহিদা প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন, এ ক্ষেত্রে বসুন্ধরা পেপার মিলের অবদান মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ।'</p> <p>তিনি বলেন, 'বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিও আলোচ্য বছরে কিছুটা ঝুঁকির সম্মুক্ষীণ হয়েছে। যার বিরুপ প্রভাব দেশের অন্যান্য শিল্পের মত কাগজশিল্পেও পড়েছে। কাগজ শিল্পের চুড়ান্ত চাহিদার মৌসুমে মুদ্রাস্ফীতি, ব্যাপক হারে ডলার সংকট, কাঁচামালের অপ্রতুলতা, আর্ন্তজাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে আমাদের কম্পানীর কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। </p> <p>কিন্তু দক্ষ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবসায়িক কৌশল পরিবর্তন ও অক্লান্ত পরিশ্রম করে অত্র কম্পানীর ব্যবস্থাপনা পর্ষদ ব্যাপক ক্ষতি রোধ করে, সুরক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছে আপনাদের বিনিয়োগ। আলোচ্য বছরে উৎপাদনের পরিমান কিছুটা হ্রাস পেলেও বিগত বছরের তুলনায় মোট আয় ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে কর-পরবর্তী নীট মুনাফা এ বছর ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৪৫ দশমিক ৫০ কোটি টাকা হয়েছে।’</p> <p>এ আর রশীদ আরো বলেন, বিশ্বজুরে সৃষ্ট অর্থনেতিক সংকটের মধ্যেও কম্পানিটি ১০১২ দশমিক ১২ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আলোচ্য বছরে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অত্র কম্পানি প্রায় এক কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।'</p> <p>কম্পানির এই উপদেষ্টা ও বিকল্প পরিচালক আরো বলেন, 'শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত হওয়ার পর অর্থাৎ বিগত ছয় বছরে চার হাজার ৪৪৫ জন কর্মী বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত এই কম্পানি আলোচ্য বছরের ১৫৬ দশমিক ৬৬ কোটি টাকাসহ আয়কর, আবগারী শুল্ক, সমপূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ মোট ৬০১ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে পরিশোধ করে সরকারের মিলিনিয়াম ডেভলাপমেন্ট গোল-২০৪১ বাস্তবায়নের অংশীদার হওয়ার মর্যাদা লাভ করেছে।'</p>