<p>সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির একটি গণমাধ্যম ‘আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’ এমন শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে একটি শিশুর ছবি দিয়ে খবরটি প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, সেই শিশু ওই ধরনের কথা বলেনি। এনিয়ে দৈনিকটি একটি সংশোধনী প্রকাশ করে বলছে, ছবির ভুলে এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়।</p> <p>দেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল একাত্তর টিভি বলছে, ‘‘দৈনিক প্রথম আলোর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ভাইরাল হওয়া খবরের ছবি ছিল, ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে এক শিশু। নাম জাকির হোসেন। উদ্ধৃতি ছিলো এমন- ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে গিয়ে ছবিটি দেখাতেই সবাই ছবির শিশুকে চিনতে পারলো। তবে, নাম ভুল ছেপেছে দৈনিক প্রথম আলো। শিশুটির নাম জাকির নয়, সবুজ।’’</p> <p>তারা আরো বলছে, ‘‘সবুজ স্কুলে পড়ে। পড়াশেষে বাড়ি ফিরে গোসল আর খাওয়া দাওয়া সেরে মার সাথে স্মৃতিসৌধে ফুল বেচতে আসে। তাই কুরগাঁও পাড়ায় সবুজের বাড়িতে কথা হয় তার মা মুন্নী বেগমের সঙ্গে। তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সবুজের নাম কিভাবে জাকির হোসেন হলো, আর তার প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া সন্তানকে কেনো দিনমজুর বলা হলো তাতে তিনি অবাক। তিনি জানালেন, রাজমিস্ত্রী বাবা আর তার আয়ে এ বছরই লাগোয়া বাথরুমসহ ঘর ভাড়া নিয়েছেন। ঘরের টিভি বন্ধক রেখেছেন সাত হাজার টাকায়। যেনো ঈদটা ভালোভাবে করা যায়। ভাতের জোগাড় হয়। আর ছোট সবুজ কেমন করে জানবে বাজারের খবর।’’</p> <p>দেশের বেসরকারি এই টিভি চ্যানেলটি বলছে, ‘‘লাগোয়া বাথরুম থেকে গোসল সেরে বের হওয়া সবুজকে দেখে বোঝা গেল বাজার স্বাধীনতা আর চাল ডালের রাজনীতি বোঝার বয়স থেকে সে এখনও বহুদূরে। সে ওইসব কথাও বলেনি। ছবি আর ছাপানো কথায় তার অপার বিস্ময়। প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সবুজ আহমেদের কাছেও কোনো জবাব নেই।’’</p> <p>সংবাদটি নিয়ে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ একাত্তরকে বলেন, ১৭ মিনিট পরেই নিউজটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার বিষয়টি তাদের জানার কথা নয়।</p> <p>এদিকে, এই নিউজ নিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। তারা বলছে, প্রথমে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনাম এবং ব্যবহার করা ছবির মধ্যে অসঙ্গতি থাকায় ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছে এবং শিরোনাম সংশোধন করা হয়েছে। শিরোনামে উদ্ধৃত বক্তব্য ছবিতে থাকা সবুজ মিয়ার ছিল না, ছিল দিনমজুর জাকির হোসেনের। একই কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।</p>