<p>পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)-এর সুপারিশপ্রাপ্ত চারজনকে আবহাওয়া অধিদপ্তরে ‘সহকারী আবহাওয়াবিদ’ পদে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিরক্ষা সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও কমিশনের চেয়ারম্যান এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের নিয়োগ দিতে বলেছেন আদালত।</p> <p>এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের দ্বৈত বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. কায়সারুজ্জামান কায়েস। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আব্দুর রহিম, সাফফাত হোমায়রা ও শেখ কানিজ ফাতেমা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ রুমি।</p> <p>৩৫ তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল ৩৯৮ জনকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডারের বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে নিয়োগের জন্য এই প্রার্থীদের সুপারিশ করেছিল পিএসসি।</p> <p>এর মধ্যে ১১ প্রার্থীকে আবহাওয়া অধিদপ্তরে সহকারী আবহাওয়াবিদ হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ২০১৮ সালের ২৯ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে জানায়, আবহাওয়া অধিদপ্তরে কর্মকর্তা নিয়োগের বিধিমালাটি ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চের ফরমান অনুসারে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক কর্তৃক প্রণীত। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২০১১ সালে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী বাতিল ঘোষণার রায়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারি করা ফরমান অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ফলে আবহাওয়া অধিদপ্তরে কর্মকর্তা নিয়োগের বিধিমালাটি কার্যকারিতা হারিয়েছে। ফলে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন না করা পর্যন্ত নতুন করে নিয়োগের সুযোগ নেই।</p> <p>এর মধ্যে ৩৫তম বিসিএসে সুপারিশ পাওয়া এই ১১ প্রার্থীর মধ্যে কয়েকজন ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে নন-ক্যাডারের জন্য তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু পিএসসির নিয়ম অনুযায়ী একবার প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলে পরবর্তীকালে আর আবেদন করা যায় না। তাই পিএসসি তাদের আর নতুন করে কোনো পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেনি।</p> <p>এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই আরিফুল হাসান, জিহাদ আলী, উজ্জল হোসেন ও তানজিমা আফরিন হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে তাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ১৮ আগস্ট আদালত রুল দেন। রুলে এই চারজনকে অবিলম্বে নিয়োগ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়। শুনানির পর সে রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত।</p> <p>রিটকারীদের আইনজীবী কায়েস কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই চারজনকে নিয়োগ দিতে বিপিএসসি সুপারিশ করে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল। ২০১৮ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায় অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালাটি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কারণে অকার্যকর। অথচ ২০১৭ সালের ১২ জুন ৩৪তম বিসিএসের সুপারিশপ্রাপ্ত তিনজনকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।'</p> <p>যে বিধিমালা বাতিলের কারণে এই চারজনের নিয়োগ আটকে রাখা হয়েছে, সেই একই বিধিমালায় অন্য তিনজনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আদালত রিটকারীদের নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।</p>