<p>সরকার ও পুলিশ কর্তৃক বিরোধী মত দমনের হীনপথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ করতে না দেওয়া, বিএনপি অফিসে হামলা, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তি, নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা প্রদান এবং গণগ্রেপ্তার ও গায়েবী মামলা বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছে।</p> <p>আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি আদায় আগামী ১৩ ডিসেম্বর দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দিবস পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।</p> <p>বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ প্রমুখ।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সভা-সমাবেশ-মিছিলে বাঁধাদান করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারকে ক্রমাগত হরণ করে চলেছে। সরকারের দুঃশাসন ও লুটপাটের কারণে জাতীয় ও জনজীবনে সংকট সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। দেশের অর্থনীতির ভঙ্গুর চিত্র প্রতিদিনের সংবাদপত্রের খবরে প্রকাশ পাচ্ছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক ডাকাতেরা ঋণ নিয়ে ফেরৎ না দিয়ে বিদেশে পাচার করে ব্যাংকগুলো ফোকলা করে ফেলেছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা চাল-ডাল-তেল-চিনিসহ নিত্য পণ্যের দাম দফায় দফায় অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলেছে। আর গণতন্ত্রহীনতা ও অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে বিদেশি শক্তি ও দেশের অভ্যন্তরের অন্ধকারের শক্তিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আজ অসৎ রাজনীতিবিদ, সামরিক বেসামরিক আমলা, অসৎ ব্যবসায়ী এবং টাকা পাচারকারী, ঋণখেলাপি, ব্যাংক ডাকাত ও বাজার সিন্ডিকেটের দখলে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ যখন উদগ্রীব হয়ে রাস্তায় নামছে তখন পুলিশ দিয়ে মানুষ খুন করে, গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার, নির্যাতন নিপীড়ন করে দমন পীড়নের পথে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চাইছে, একই সাথে দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ, মিছিল করার অধিকার দেশের সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত। কিন্তু শাসক সরকার জনগণের সকল সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।</p> <p>আরো বলা হয়, বিএনপির ঢাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে জনসভার স্থান নিয়ে সরকার বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে মূল সমস্যা থেকে জনগণের দৃষ্টি আড়াল করে দেশের সম্পদ লুণ্ঠন, ব্যাংক ডাকাতি, অর্থপাচার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ জনজীবনের সংকট নিরসনে সরকার তার ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা করছে।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পাল্টাপাল্টি বাকযুদ্ধের পরে ৮ ডিসেম্বর রাতে জনসভার স্থান নিয়ে সমঝোতায় আসার খবর শুনে মানুষ যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিল তার পরেই গভীর রাতে মির্জা ফখরুলসহ নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুনরায় জনমনে উৎকণ্ঠা বেড়ে গিয়েছে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল বাম-গণতান্ত্রিক শক্তি ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে </p>