বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব কথা বলেছেন তা শুধু নজিরবিহীন নয়, আপত্তিকর, অরুচিকর। প্রধানমন্ত্রীর কথা বাদই দিলাম, একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেও তিনি এ ধরনের কথা বলতে পারেন বলে আমি মনে করি না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন '২৫ মার্চ যখন দেশবাসী রাস্তায় ব্যারিকেড দিচ্ছিল তখন চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান গুলি করেছেন।' কত বড় ইতিহাস বিকৃতকারী প্রধানমন্ত্রী তিনি?
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আসলে আল-জাজিরায় এই সরকারের কুকীর্তি নিয়ে চারদিক থেকে এত ধিক্কার উঠেছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা ছিলেন জাতীয় পর্যায়ে তাদের সন্তানরা যেসব বই লিখছেন এবং শেখ হাসিনার কেবিনেটে যেসব মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তারা যেসব বই লিখছেন, সেখানে জিয়াউর রহমানকে যেভাবে মহিমান্বিত করেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে তার যেসব অবদান, শেখ হাসিনা এগুলোকে ঢাকা দিতে পারেন না, আড়াল করতে পারছেন না। তাই ওনার এত গাত্রদাহ।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চ জিয়াউর রহমানের ঘোষণা একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা। রাজনীতিবিদ, গবেষক সবাই এটাকে শুধু স্বীকারই করেন না, তারা এটা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। শুধু শেখ হাসিনা করেন না। ইতিহাস গবেষণা, বিশেষ করে শেখ হাসিনার কেবিনেটের বিশেষ ব্যক্তিদেরও গবেষণায় এবং স্মৃতিচারণায় মেজর রফিকুল ইসলামের বইতে, এ কে খন্দকারের বইতে স্পষ্টভাবে জিয়াউর রহমানের বিষয় উঠে এসেছে। সুতরাং শেখ হাসিনার তো কিছুই বলার নেই। তাই প্রতিদিন বানানো মিথ্যাচার এই কথাগুলো বলছেন।
তিনি বলেন, এখন সত্যি প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা চায়নি। তাদের নেতা আজকের প্রধানমন্ত্রীর পিতা বৃহত্তর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। যারা যুদ্ধ শুরু করেছেন, প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি- এটার কারণেই তাদের ক্ষোভ। জিয়াউর রহমান জাঞ্জুয়াকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। সেই ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন যারা চট্টগ্রামে ব্যারিকেড দিয়েছেন তাদের নাকি হত্যা করেছেন। জিয়াউর রহমানের শত্রুরাও এ কথা বলতে পারবেন না। যে ব্যক্তি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, তার প্রতি কিভাবে কলঙ্ক লেপন করলেন?
তিনি আরো বলেন, একদলীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রতিদিনের যে নির্যাতন, সে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। সেখান থেকে কিন্তু কখনোই বিচ্যুত হয়নি সরকার। এই নির্যাতন কেন করতে হচ্ছে। এটা করতে হচ্ছে এ জন্য যে দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের ধারা চালু হলে মানুষ সত্যি ইতিহাস নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। বিএনপির কোনো কর্মসূচি থাকুক বা না থাকুক; কিন্তু নেতার্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা জেলার সহ-সভাপতি তমিজউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার অপরাধ এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় থাকে সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য