আনুশকাহ নূর আমিন
রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার সহপাঠিসহ চারজনকে আটক করেছে কলাবাগান থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতাল থেকে বিকেল সোয়া চারটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে কলাবাগান থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে বাসায় নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তবে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, শারীরিক সম্পর্কের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হতে পারে।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্র জানায়, ওই শিক্ষার্থীর বাসা ধানমন্ডির সোবহানবাগে। বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বেলা ১২টার দিকে সে তার বাসা থেকে বের হয়। পরে কলাবাগানের ডলফিন গলিতে এক বন্ধুর বাসায় যায়। সেখানে ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই বন্ধু তার তিন বন্ধুকে ফোন করে ডেকে আনে। পরে তারা অসুস্থ শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য মডার্ণ আনোয়ার খান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিত্ক বিকেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিক্যাল সূত্র জানায়, শারীরিক সম্পর্কের কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার পেটের ডান পাশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে রমনা ডিভিশনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর শরীরের উপরের দিকে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। মৃতদেহ ঢাকা মেডিক্যালে রাখা হয়েছে।’
তার চাচাতো দুলাভাই শরীফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিকেল চারটার দিকে এক ছেলে বন্ধু তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে হয়তো কোনো সম্পর্ক ছিলো। আমাদের ধারণা তাকে অত্যাচার করে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। এই ঘটনার পর পরিবারের সবাই হতভম্ব হয়ে আছেন।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউ মার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইহসানুল ফেরদৌস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঘটনার পর পরই তার মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করি আমরা। এরপর পরিবার ও অন্যান্য বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য পাই। তার সঙ্গে কারোর শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকতে পারে। যার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে।’
তিনি আরো জানান, ‘মেয়েটার বয়স ১৭ বছর। ছেলেটাও তার সমবয়সি। তাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো বলে পরিবারের লোকজন দাবি করেছে। তাই তাকেসহ চারজনকে আটক করে প্রকৃত ঘটনা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে ঘটনার পর পরই দিহান নামের ছেলেটি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং মেয়েটাকে সুস্থ করার চেষ্টা করে।
মন্তব্য