অসুখটা বুড়ো মানুষদেরই বেশি কাবু করে ফেলে। তাই তাঁদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি। বড়দিনের আনন্দ উদযাপন তো একজন বুড়োকে ছাড়া ফিকে। এবার কী করে উপহার নিয়ে আসবে সান্তা ক্লজ! বড়দিন যত এগিয়ে এসেছে, হাজারো শিশুর মনে এই ভয়টাই ভিড় জমিয়েছে। কেউ দেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছে, ‘সান্তাকে বলে দিয়ো, ও যেন স্যানিটাইজার ব্যবহার করে।’ কেউ আবার সোজা সান্তাকেই চিঠি পাঠিয়েছে, ‘আমার দাদুকে বাড়ি থেকে বেরোতেই দেওয়া হয় না। তুমি কী করে অত দূর থেকে আসবে?’ খুদেদের ভরসা জোগাতে এবার এগিয়ে এলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। বুধবার সংস্থার অন্যতম শীর্ষ কর্তা মারিয়া ভ্যান কারকোভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সান্তা ক্লজের বয়স অনেক বেশি। তাই তাঁকে নিয়ে চিন্তা হবেই, তবে চিন্তার কিছু নেই। আমরা জানতে পেরেছি, করোনাভাইরাস সান্তাকে ছুঁতেই পারবে না।’ সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান বলছে, ১০ বছরের নিচে পাঁচটি শিশুর মধ্যে একজন বিশ্বাস করে যে সত্যিই সান্তা ক্লজ বলে এমন কেউ রয়েছে, যে ২৪ ডিসেম্বর মাঝরাতে এসে তার জন্য উপহার রেখে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের করা একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সেখানে চার বছরের নিচে ৮৫ শতাংশ, ছয় বছরের নিচে ৬৫ শতাংশ এবং আট বছরের নিচে ২৫ শতাংশ শিশু সান্তা ক্লজে বিশ্বাস করে।
স্কুলে যাওয়া প্রায় বন্ধ, বাইরে খেলাধুলা করতে বা বন্ধুর বাড়িতে যাওয়াতেও কোপ পড়েছে। অন্য শহরে থাকা দাদু-ঠাকুর মার সঙ্গেও দেখা হয় না আর নিয়মিত। প্রায় এক বছর ধরে মহামারির এই আবহে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেছে শিশুরাও।
সামনেই বড়দিন। অন্য বছরের থেকে এবারের ক্রিসমাস যে আলাদা, তা টের পাচ্ছে খুদেরাও। কিন্তু বড়দিনের সবচেয়ে প্রিয় রেওয়াজ, সান্তা বুড়োর উপহার, তা-ও কি বাদ পড়বে এবার? শিশুদের মনে এই ভয় যে দানা বাঁধছে, তা টের পাওয়া যাচ্ছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। আদ্যন্ত বৈজ্ঞানিক এক সংস্থার এই ‘মিথ্যাচরণ’কে তাই সাদরে গ্রহণ করছেন মনোবিদরা। সবাই এক বাক্যে বলছেন, দুশ্চিন্তায় দীর্ণ এই সময়ে ভরসা জোগাক একটু রূপকথা, নতুন বছরে সব কিছু পাল্টে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঝরাতে এসে হাজির হোক সান্তা বুড়ো। সূত্র : আনন্দবাজার।
মন্তব্য