<p>করোনা পরিস্থিতিতে টানা দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে সব সরকারি অফিস আজ খুলছে। যদিও বন্ধের মধ্যে সচিবালয়ে অর্ধেকের মতো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সীমিত পরিসরে কাজ চালিয়েছিল। আজ থেকে ১৫ দিনের জন্য সব মন্ত্রণালয়ই সীমিত পরিসরে খুলছে। পরীক্ষামূলক এই দুই সপ্তাহে কর্মকর্তারাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অফিস করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যাঁরা অফিসে আসবেন তাঁদের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। তবে কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা অসুস্থ ও অন্তঃসত্ত্বা তাঁদের অফিসে আসতে হবে না।</p> <p>মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) খলিলুর রহমান বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের অফিসে না আসতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগ প্রধান তাঁর অফিশিয়াল কার্যক্রম পরিচালনায় যাঁদের প্রয়োজন শুধু তাঁদেরকে অফিসে ডাকবেন। এভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, আজ প্রথম দিন হয়তো কর্মকর্তাদের বেশির ভাগই আসবেন। এরপর নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে স্ব স্ব অনুবিভাগ কাদের কোন দিন অফিস করা প্রয়োজন তা ঠিক করে নেবেন।</p> <p>দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) আবুল বায়েছ মিয়া জানান, তাঁর মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আলাদাভাবে অফিস আদেশ জারি করা হয়নি। যাঁরা অফিসে আসার প্রয়োজন মনে করবেন তাঁরা নিজস্ব গাড়ি বা মন্ত্রণালয়ের গাড়িতে অফিস করবেন। তিনি বলেন, অনেক দিন বন্ধ থাকায় কে কী অবস্থায় আছে সব বোঝা যাচ্ছে না। অফিস শুরু হলে সেটা বোঝা যাবে।</p> <p>খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ছুটির পর কিভাবে অফিস করতে হবে সে বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা এখনো হয়নি। প্রথম দিন হয়তো সবাই অফিসে আসবে। এরপর এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেসব কর্মচারীর অফিসে না এলে চলে তাঁদের বাড়িতে থাকতে বলা হবে।</p> <p>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক ফাইল যোগাযোগ হয়। এ ক্ষেত্রে অজ্ঝাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার (এও) এবং পার্সোনাল অফিসারদের (পিও) তেমন প্রয়োজন হয় না। তাই পিয়ন, এও এবং পিওদের মধ্যে যাঁদের প্রয়োজন না হয় তাঁদের না আসার বিষয়টি উৎসাহিত করা হচ্ছে। সব মন্ত্রণালয়েই এ উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে আলাদাভাবে কোনো অফিস আদেশ জারি করা হবে না।</p> <p>গত বৃহস্পতিবার আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সীমিত পরিসরে অফিস চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ ক্ষেত্রে কর্মর্কতা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।’</p> <p>জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘সব মন্ত্রণালয় নিজেদের মতো করে সীমিত পরিসরে অফিস পরিচালনা করবেন। এর মাধ্যমে আগামী দিনে আমাদের কী ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তা বুঝতে পারব।’</p>