<p>শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে শিক্ষকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে দক্ষ করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।</p> <p>আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইউনাইট ফর বডি রাইটস (ইউবিআর) বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স আয়োজিত পরামর্শ সভায় এ আহ্বান জানান বক্তারা।</p> <p>পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি)'র নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মশিউর রহমান, নেদারল্যান্ডস'র বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি মাশফিকা জামান সাটিয়ার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মো. বিন কাশেম দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সালমা আক্তার, অধ্যাপক সৈয়দা তাহমিনা আক্তার ও অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান, টিসার্স ট্রেনিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মমতাজ শাহানার, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, ড. ডি এম ফিরোজ শাহ, ইউবিআর সদস্য হাবিবুন নেসা প্রমুখ।</p> <p>উপ-উপাচার্য মশিউর রহমান বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। আমরা ৭২-এর সংবিধান পেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সংবিধান ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। বিজ্ঞানমুখী স্বাস্থ্যশিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বাহাত্তরের সংবিধানের চার মূলনীতিতে ফিরতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন পাঠ্যপুস্তকের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় ব্যয় করে। কিন্তু সেখানে মৌলবাদী-জঙ্গিবাদীদের বিভ্রান্তিকর প্রচারণাই বেশি। শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি ভার্চুয়াল জগতেও সুশিক্ষার বিষয়ে প্রচারণা চালাতে হবে।</p> <p>কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত  করার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক সৈয়দা তাহমিনা আক্তার বলেন, 'শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ নিলেও সামাজিক জড়তার কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে পারেন না। যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পান। তাই প্রশিক্ষণকালে অনুশীলন করাতে হবে।' তিনি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন।</p> <p>মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, কৈশোর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে পারিনি। সে জন্য যুব সমাজকে দক্ষ ও যোগ করে গড়ে তুলতে হবে। সেক্ষেত্রে কিশোর-কিশোরী ও যুবদের যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশাধিকার এবং সহিংসতামুক্ত সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।</p> <p>সভায় মূল প্রবন্ধে বলা হয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কারিকুলামে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দিয়ে শিক্ষকদের  জেন্ডার সংবেদনশীল যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য শিক্ষা এবং অধিকার সংক্রান্ত শিক্ষা প্রদানের জন্য যথাযথ দক্ষ করে তুলতে হবে।</p> <p>ব্যাচেলর অব ফিজিক্যাল এডুকেশন (বিপিএড) কোর্স ও মাধ্যমিক পর্যায়ের যেসব শিক্ষক শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে পাঠদান করেন তাঁদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। একইসঙ্গে তাঁদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।</p>