বৃহস্পতিবার । ১২ ডিসেম্বর ২০১৯। ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৬। ১৪ রবিউস সানি
এখনও কারণ জানা সম্ভব হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন দুর্ঘটনার। প্রাথমিকভাবে চালকের সিগন্যাল অমান্যের বিষয়টি ধারণা করা হলেও আরও কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে তদন্ত কমিটি। চালকের ঘুমিয়ে পড়া, ব্রেকের সঠিক ব্যবহার না হওয়া ও সিগন্যালের সীমাবদ্ধতা এ বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে বার বার।
১২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দবাগ রেলস্টেশনে উদয়ন এক্সপ্রেসের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়, তূর্ণা-নিশীথা এক্সপ্রেসকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল ২৯০০ সিরিজের ২৩ নম্বর ইঞ্জিন।
২৯০০ সিরিজের ইঞ্জিনগুলো পরিচালন পদ্ধতি পুরানো হলেও সুবিধা অন্য ইঞ্জিনের তুলনায় বেশি। হাত দিয়ে সাধারণ ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করা হয়, আছে জরুরি থামানোর ব্রেক। পা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে চলে আধুনিক প্রযুক্তির আরও একটি ব্রেক।
প্রাথমিক তথ্যে জানা যায়, চালক পরপর তিনটি সিগন্যাল অমান্য করে উদয়ন এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়। শেষ পর্যায়ে এসে চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবে চালকরা বলছেন, এটার ইমার্জেন্সি ব্রেক দিয়ে কয়েক মুর্হূতেই ট্রেনটি থামিয়ে দেয়া সম্ভব ছিল।
ট্রেনের একজন চালক সময় সংবাদকে বলেন, ৪৪০ গজের মধ্যে যেকোনো গাড়ির ব্রেক পাওয়ার যদি ভালো থাকে তাহলে অবশ্যই থামানো সম্ভব।
চালকের ঘুমিয়ে পড়া, কিংবা ‘পায়ের ব্রেক ডেডম্যান্স প্যাডেলের’ অপব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় আসে। চালকরা জানান, প্যাডেলটিকে ১০-১৫ সেকেন্ড পরপরই পাঞ্চ করে সচল রাখতে হয়, ঘুমিয়ে পড়লে সেটি সম্ভব নয়।
তারা আরও বলেন, ৯ সেকেন্ড পর পর আবার পা দিয়ে নাড়তে হয়। না হয় যেকোনো সময় অটোমেটিক গাড়ির সঙ্গে ইঞ্জিন ব্রেক লেগে যাবে।
প্রাথমিকভাবে কুয়াশার কারণে সিগন্যাল না দেখতে পাওয়া এবং চালকের অসর্তকতার বিষয়গুলো বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন রেলসচিব মোফাজ্জেল হোসেন।
তিনি বলেন, একটা হতে পারে কুয়াশার কারণে সিগন্যাল ঠিকমতো দেখতে পাননি চালক। তিনি হয়তো তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারেন। তদন্ত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশনে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হন। এছাড়া অর্ধশতাধিক যাত্রী আহত হন।
সারাদেশের ৩ হাজার কিলোমিটার রেল লাইন ও ২৭৩টি ইঞ্জিনের বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ ও ঝুকিঁপূর্ণ। এতে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করেন যোগাযোগ বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য