<p>ভালোবাসার মাধ্যমে মনের গভীর আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ পায়। একজন মুসলিমের প্রেম ও ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলামের সুনির্দিষ্ট সীমারেখা দেওয়া হয়েছে। একজন মুসলিমের প্রেম ও ভালোবাসা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত হবে। </p> <p><strong>ভালোবাসার কথা জানানো সুন্নত</strong> : কাউকে ভালোবাসলে বিষয়টি তাকে জানানো মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। মিকদাম বিন মাদি কারিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ অন্য ভাইকে ভালোবাসলে সে যেন তাকে জানায়।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৩৯২) </p> <p>অপর হাদিসে এসেছে, আলি বিন হুসাইন বিন আলি বিন আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ অন্য ভাইকে ভালোবাসলে সে যেন এ বিষয়ে তাকে জানায়। কেননা তা সম্প্রীতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনে এবং ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী করে।’ (আজ জুহদ : ৬২/২; আল সিলসিলা আস সহিহাহ, হাদিস নং : ১১৯৯)</p> <p><strong>কেউ ভালোবাসে জানলে যা বলবেন</strong> : অন্য হাদিসে কেউ ভালোবাসার কথা জানালে প্রত্যুত্তরে কী বলা হবে তাও বলা হয়েছে। আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন ব্যক্তি চলে যায়। আরেক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি এই ব্যক্তিকে ভালোবাসি। তিনি বললেন, ‘তুমি বিষয়টি জানিয়েছ?’ সে বলল, না, জানাইনি। তিনি বললেন, ‘তুমি ওঠো, তাকে বিষয়টি জানাও।’ তখন লোকটি গিয়ে বলল, ‘হে অমুক, (উহিব্বুকা ফিল্লাহ) অর্থাৎ আমি তোমাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি।’ প্রত্যুত্তরে ওই লোক বলল, ‘(আহাব্বাল্লাজি ইউহবিবনি ফিহি) অর্থাৎ তিনি তোমাকে ভালোবাসুক যার জন্য তুমি আমাকে ভালোবাস।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৫১২৫)</p> <p><strong>আল্লাহর জন্য ভালোবাসা</strong> : মুমিনের সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হবে। তাই একে অপরের ভালোবাসার মূল উদ্দেশ্যও হবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে পরষ্পরকে ভালোবাসে তারা কিয়ামতের দিন উঁচু মর্যাদা লাভ করবেন। অন্যরা তাদের দেখে ঈর্ষা করবে। </p> <p>উমর বিন খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর অনেক বান্দাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছেন যারা নবী বা শহিদ কোনো কিছু হবেন না। তদুপরি আল্লাহর কাছে তাদের উঁচু সম্মানের কারণে নবী ও শহিদরা কিয়ামতের দিন তাদের ঈর্ষা করবেন। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমাদেরকে তাদের সম্পর্কে বলুন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা এমন দল যারা পরষ্পরকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসে। আত্মীয়তার সম্পর্ক বা সহায়-সম্পদ লাভ তাদের উদ্দেশ্য থাকে না। তাঁরা (কিয়ামতের দিন) নুরের মিম্বারে অবস্থান করবেন। মানুষ ভীত হলেও তারা ভীত হবে না। মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়লেও তারা দুশ্চিন্তায় পড়বেন না। অতঃপর তিনি এই আয়াত পড়েন : ‘শুনে রাখো, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা ভীত হবে না।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত : ৬২) (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩৫২৭)</p>