<p>‘বিশ্বকবির সোনার বাংলা<br /> নজরুলের বাংলাদেশ<br /> জীবনানন্দের রূপসি বাংলা,<br /> রূপের যে তার নেইকো শেষ—বাংলাদেশ...’</p> <p><br /> গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা এই গীতটির মতো বঙ্কিমচন্দ্রও এই বাংলা অঞ্চলকে ‘বঙ্গদেশ’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সত্যজিৎ রায় সবসময় ‘বাংলাদেশ’ লিখেছেন বলেছেন। সাহিত্য বা কাব্য ভাষায় যে নামেই করা হোক না কেন বিশ্বে ভাষার নামে দেশের নামে পরিচিতি কেবল আজ বাংলাদেশই।<br /> ভাষা একটা জাতির মূল পরিচয়। কিন্তু সেই ভাষা অর্জনেই দেশ-ভাগের পরই পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় পশ্চিম-পাকিস্তান। ১৯৫২-তে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ভাষার অধিকার পাওয়ার পর পূর্ব-পাকিস্তান কেন পূর্ব-বাংলা হবে না? সে প্রশ্নটি বাংলার নায়কেরা মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু প্রমুখ উত্থাপন করেন। নানান প্রতিঘাতের পর পূর্ণতা পায় ‘বাংলাদেশ’। ভাষার নাম ও দেশের নামে পূর্ণতা পায় পুণ্যভূমি।</p> <p><strong>ইতিহাসের শুরু যেভাবে</strong><br /> ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ নামকরণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় ঘোষিত নাম কিংবা দেশটির ইতিহাস তো অর্ধশত বছরের নয়। সেই ইতিহাস হাজার-হাজার বছর আগের। </p> <p>অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, বঙ্গ নামের উৎপত্তি জানতে ‘বংশী’ ও ‘বাঙালি নদীর’ ইতিহাস উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন। ১৯৪৭ সাল থেকেই আদি বাংলার পশ্চিম অংশ পূর্ব থেকে ছিন্ন হয়ে যায়; যা বর্তমান ভারতের একটি রাজ্য। প্রাচীন যুগেই বাংলা মূলত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পরে। গুপ্ত শাসনের পতন হলে ৫৫১ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ববাংলা এলাকা নিয়ে বঙ্গ-সমতট রাজ্য ও বঙ্গের পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে গৌড় নামে আলাদা রাজ্য গড়ে ওঠে। সেই যে ৫৫১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গ রাজ্য দুভাগে বিভক্ত হলো সুদীর্ঘ দেড় হাজার বছরেও বাংলা এক হতে পারেনি। প্রাচীন বাংলা ভাষাভাষীদের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ১০ হাজার বছরের অতীত বলে ধারণা করেন ইতিহাসবেত্তা ও প্রত্নতাত্ত্বিকবিদের অনেকে। সেই সভ্যতা ‘গঙ্গা-রিদি’ সভ্যতা নামে পরিচিত ছিল। পদ্মা (বাংলাদেশে) ও গঙ্গা (ভারতে) নদীর তীরে এ সভ্যতার গোড়াপত্তন।</p> <p>গ্রিক ইতিহাসবেত্তারা বাংলাকে উল্লেখ করেছেন ‘গঙ্গারিডাই’ হিসেবে। গঙ্গারিডাই (গঙ্গারিডাই, গঙ্গারিডেই এবং গঙ্গারিদুম শব্দরূপগুলির উৎপত্তি গঙ্গারিড (Gangarid) থেকে। ধারণা করা হয় যে, গঙ্গারিড হলো ভারতীয় ‘গঙ্গাহূদ’ শব্দের গ্রিক রূপ। এর অর্থ ‘যে ভূমির বক্ষে গঙ্গা প্রবাহিত’ (গঙ্গাহূদ> গঙ্গারিদ> গঙ্গারিডাই, গঙ্গারিড-এর বহুবচনার্থে), যা ‘পেরিপ্লাস’ গ্রন্থের লেখকের বর্ণিত গাঙ্গে দেশের সাথে বেশ মানিয়ে যায়।) প্রথম খ্রিষ্টপূর্ব থেকে দ্বিতীয় খ্রিষ্টাব্দ মধ্যবর্তী সময়ে গ্রিক ও ল্যাটিন লেখায় একটি জনগোষ্ঠী ও একটি দেশের নাম হিসেবে উল্লিখিত। ক্লাসিক্যাল লেখকদের বর্ণনায় ‘গঙ্গারিডাই’ এবং এর রূপভেদে ‘গঙ্গারিডেই’ (Gangaridae), ‘গঙ্গারিদুম’ (Gangariridum) ও ‘গঙ্গারাইডেস’ (Gangarides) শব্দগুলো পাওয়া যায়।</p> <p>আলেকজান্ডার ৩২৫-৩২৬ খ্রিষ্টপূর্বে (কারও মতে খ্রিষ্টপূর্ব ও খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে) মোট ১৯ মাস ভারত আক্রমণ চালান। গঙ্গারিডি রাজা আলেকজান্ডারকে বাধা দিতে দিতে ৮০,০০০ অশ্বারোহী, ২ লাখ পদাতিক, ৮,০০০ রথ, ৬,০০০ যুদ্ধ হাতি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু মহামতি আলেকজান্ডার বাংলায় না এসে বিপাশা নদী তীর থেকে ব্যবলিনে ফিরে যান। চন্দ্রগুপ্ত নামে এক বাঙালির সাথে পাঞ্জাবে আলেকজান্ডারের সাক্ষাৎ হয়েছিল। দশ হাজার বছর পূর্বের গঙ্গা-রিদি সভ্যতার ‘প্যালিওথিক ও মাইক্রোলিথিক’ অস্ত্র পশ্চিমবঙ্গে পাওয়া গেছে। তা থেকে আর অপেক্ষা থাকে না প্রাচীনকালে বাংলাদেশ কতটা শক্তিশালী ছিল। এবং এ সম্পর্কে বাংলাপিডিয়া বলছে, আলেকজান্ডার ও তাঁর সৈন্যবাহিনীর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ডিওডোরাস (৬৯ খ্রিষ্টপূর্ব - ১৬ খ্রিষ্টাব্দ) সিন্ধু পরবর্তী দেশ সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, গঙ্গা পেরিয়ে যে অঞ্চল সেখানে ‘প্রাসিয়ই’(Prasioi) ও গঙ্গারিডাই-দের আধিপত্য। টলেমি (দ্বিতীয় খ্রিষ্টাব্দ) গঙ্গারিডাই-এর অবস্থান সম্পর্কে কিছুটা বিশদ বিবরণ দিয়েছেন।</p> <p>তিনি লিখেছেন যে, গঙ্গার পাঁচটি মুখ সংলগ্ন প্রায় সমস্ত এলাকা গঙ্গারিডাইগণ দখল করে রেখেছিল, ‘গাঙ্গে’ (Gange) নগর ছিল এর রাজধানী। যদিও টলেমি গঙ্গার পাঁচটি মুখের অবস্থানের অক্ষ ও দ্রাঘিমা-সহ নাম উল্লেখ করেছেন, তথাপি সেগুলি সঠিকভাবে শনাক্ত করা যায়নি মাপ নির্ভুল না হওয়ার কারণে। তবুও তার বর্ণনাকৃত চারটি দ্রাঘিমা ডিগ্রি সমুদ্র উপকূলের সর্বপশ্চিম থেকে সর্বপূর্বের নদীমুখ পর্যন্ত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত করছে। কার্যত এর অর্থ হলো ‘গঙ্গারিডাই’ বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী গঙ্গার সর্বপশ্চিম এবং সর্বপূর্বের নদীমুখ পর্যন্ত অঞ্চলে বিস্তৃত ছিল। কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো যে, ভাগীরথীর (তমলুক-এর নিকটে) এবং পদ্মার (চট্টগ্রামের নিকটে) নদীমুখের দ্রাঘিমা রেখার পার্থক্য ৩.৫ ডিগ্রির সামান্য কিছু বেশি। তাই টলেমির তথ্যানুযায়ী গঙ্গারিডাই-কে শনাক্ত করা যায় বর্তমান ভারতের পশ্চিমবাংলা ও বাংলাদেশে গঙ্গার প্রধান দুটি শাখার মধ্যবর্তী অঞ্চলটিতে। তবে তথ্য অপ্রতুলতার কারণে ‘গাঙ্গে’ (Gange) নগরটির অবস্থান শনাক্ত করা যায় না।</p> <p>বর্তমান সুন্দরবনের হরিণঘাটাকে ‘গঙ্গে’ বলে কল্পনা করা হয়। প্রাচীন বাংলার রাজধানী বিক্রমপুরের কালিগঙ্গা নদীর পশ্চিমতীরে এবং পদ্মা বা গঙ্গা নদীর পূর্বতীরে ‘গঙ্গানগর’ নামে একটি প্রাচীন নগরের অবস্থান বিক্রমপুরের মানচিত্রে সার্ভেয়ার জেনারেল এফআরএস দেখিয়েছেন। পদ্মার দিক পরিবর্তনে নগরটি বিলীন হয়ে গেছে। প্রাচীন বাংলায় স্বর্ণের খনি ছিল বলেও গ্রিক ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন বাংলায় বা বর্তমান বাংলাদেশে কোনো সোনার খনি নেই। তবে প্রাচীন বাংলার বিক্রমপুরে সোনারং, স্বর্ণগ্রাম, সোনারগাঁও, সোনাকান্দ এখনও বিদ্যমান। মহারাজ চৈতন্য গুপ্ত (৫০৭-৫০৮ খ্রিষ্টাব্দ) পূর্ব বাংলা অঞ্চল শাসন করতেন। তিনি বাংলায় স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন করেন। এছাড়া সমাচার দেব নামক বাংলার আরও একজন রাজা স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন করেছিলেন। </p> <p>এসময়ের ইতিহাসবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সংস্কৃত ‘বঙ্গ’ থেকে বাংলা শব্দটি আসে এবং আর্যরাও বঙ্গ নামেই ডাকতেন এই অঞ্চলকে। বঙ্গে বসবাসকারী মুসলমানরা এই ‘বঙ্গ’ শব্দটির সাথে ‘ফারসি’ ‘আল’ প্রত্যয় যোগ করে বলতেন ‘বাঙাল’ বা ‘বাঙ্গালাহ্’। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী ‘আল’ শব্দের অর্থ—‘জমির সীমা নির্দেশক বাঁধ’।<br /> সেই দেশ-ভাগের পর পশ্চিমবঙ্গে দুটো শব্দ মানুষের মুখে মুখে ঘুরে। ‘বাঙাল-ঘটি’। ‘পদ্মা পাড়ের বাঙাল ও গঙ্গা পাড়ের ঘটি’। যাঁরা এই পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে চলে গিয়েছিলেন তাঁদের ‘বাঙাল’ সম্বোধন করা হয়। আর পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয়রা নিজেদের ঘটি দাবি করেন। দুঃখের বিষয়, অনেক স্থানীয় হেয় বা অপমান করতে ‘গালি’ হিসেবেও বাঙাল শব্দটি ব্যবহার করেন।</p> <p>ইতিহাসবিদ আবুল ফজলের মতে, মুসলমান শাসনামলে বিশেষ করে ১৩৩৬ থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত সুলতানি আমলে এবং ১৫৭৬ সালে মোঘলরা বাংলা দখল করার পরে এই অঞ্চলটি বাঙাল বা বাঙালাহ্ নামেই পরিচিতি পায়। তবে বাংলা, বাঙাল বা দেশ—এই তিনটি শব্দই ফার্সি ভাষা থেকে এসেছে। কোনটিই বাংলা শব্দ নয়।</p> <p>স্বাধীন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলাও বাংলা, আসাম, বিহার, উড়িষ্যার মতো কয়েকটি প্রেসিডেন্সি নিয়ে ‘বঙ্গ’ নাম দেন। পরবর্তীকালে ব্রিটিশ শাসকরা নবাবকে ছলনায় হত্যা তথাপি ক্ষমতাচ্যুত করে বাংলাকে ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি’ নাম দেয়। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গে গোটা বাংলা একটি প্রশাসনিক বিভাজন হয়। বঙ্গের পশ্চিম অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্বাংশ পূর্ব-বাংলা। ব্রিটিশ তাদের শাসন গুটিয়ে নিলে ১৯৪৭-র পর পশ্চিমবঙ্গ ভারতের সাথে যুক্ত হয় ধর্ম বিবেচনায়।</p> <p>পাকিস্তানের শোষকেরা এই অঞ্চলের নাম পূর্ব-পাকিস্তান দিতে চাইলে ১৯৫৭ সালে করাচিতে পাকিস্তানের গণপরিষদের তরুণ সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা দেওয়ার সময় ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নামটির প্রতিবাদ করে বলেন, ‘পূর্ব-বাংলা নামের একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। আর যদি পূর্ব-পাকিস্তান নাম রাখতেই হয়, তাহলে বাংলার মানুষের জনমত যাচাই করতে হবে। তারা নামের এই পরিবর্তন মেনে নেবে কি-না সেজন্য গণভোট নিতে হবে।’ ১৯৬২ সালে সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে ‘নিউক্লিয়াস’ নামে ছাত্রলীগের একটি গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা পায়। যারা স্বাধীনতার পক্ষে চিন্তাভাবনা করত। তারা এই অঞ্চলকে বলতেন স্বাধীন পূর্ব-বাংলা।</p> <p>১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানেই আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে স্লোগানে ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনি প্রথম প্রস্ফুটিত হয় আন্দোলনকারীদের মুখে—‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’ এরপরই ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘আমাদের স্বাধীন দেশটির নাম হবে বাংলাদেশ।’ ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করেন। পরে শেখ মুজিবুর রহমান ‘বাংলাদেশ’ নামটি প্রস্তাব করলে তাতে সবাই একবাক্যে সায় দেন। এই নাম দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ১৯৫২ সালে সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলা ভাষা থেকে ‘বাংলা’, এরপর স্বাধীন দেশের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে দেশ। এই দুটো ইতিহাস ও সংগ্রামকে এক করে ‘বাংলাদেশ’ নামকরণ করা হয়।</p> <p>স্বাধীন হওয়ার আগপর্যন্ত মুখে মুখেই জনপ্রিয় হয় ‘বাংলাদেশ’। মনের ভেতরে প্রোথিত হয় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ভাষণে।  ‘This may be my last message, from today Bangladesh is Independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.<br /> — Sheikh Mujibur Rahman<br /> 26th March 1971’</p> <p>বাংলা অনুবাদ করলে হয়, ‘এটাই হয়তো আমাদের শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যে যেখানে আছ, যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।<br /> — শেখ মুজিবুর রহমান<br /> ২৬ মার্চ ১৯৭১’</p> <p>সেখানে স্পষ্ট করে পূর্ব-পাকিস্তান বা পূর্ব-বাংলা না বলে ‘বাংলাদেশ’ বলেছেন। সে সময় স্বাধীন বাংলার বিরোধিতাকারীরা দেশের নামেরও বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তবুও লাভ হয়নি কোনও। বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানেও প্রণীত ও গৃহীত হয় ‘বাংলাদেশ’। তবে একটি দুঃখ সীমান্তে থেকে যায় ৪৮ বছর। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ‘সীমান্ত পিলার’ থেকে PAKISTAN/PAK লেখা অপসারণ করে BANGLADESH/BD লেখার কার্যক্রম সম্পন্ন করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ২০১৯ থেকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কোনো পিলারে PAKISTAN/PAK লেখা নেই; থাকবে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের নাম।</p> <p>এভাবেই ভাষার নামে দেশ। পূর্ণতায় বাংলাদেশ।</p> <p>সূত্র:<br /> ১. বাংলাপিডিয়া<br /> ১. বাঙালির ইতিহাস — ড. মোহাম্মদ হান্নান।<br /> ২. শ্রেষ্ঠ বাঙালি — সম্পাদনা: মোনায়েম সরকার এবং মোহাম্মাদ হাননান<br /> লেখক: শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা কলেজ।</p>