গাইবান্ধা জেলার পৌর এলাকায় দাফনের ৯ মাস পর কবর থেকে এক বৃদ্ধ নারীর উঠে আসার দাবির খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা এলাকায়।
মৃত্যুর ৯ মাস পর ওই নারীর বাড়িতে তাকে জীবিত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে এমন খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে ওই বাড়িতে রীতিমতো ভিড় করে মানুষ। তবে এরই মধ্যে বিষয়টিকে সম্পূর্ণ গুজব হিসেবে অভিহিত করে জীবিত ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
গত বুধবার দুপুরে (১১ মে) দুপুরে গাইবান্ধা পৌর এলাকার ডেভিট কোম্পানিপাড়ার আব্দুর রশিদ ওরফে গেদার বাড়িতে ঘটে এ ঘটনা।
বিজ্ঞাপন
মুহূর্তে ঘটনাটি জানাজানি হলে আশপাশের লোকজন তাকে এক নজরে দেখে বাড়িতে ভিড় জমায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ওই নারীকে থানায় নিয়ে যায়।
আব্দুর রশিদ ওরফে গেদা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে স্টেশন এলাকায় ওই নারীকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন তিনি। বৃদ্ধ নারী দেখতে তার মায়ের মতোই হওয়ায় তার সঙ্গে কিছু সময় কথাবার্তা বলেন আব্দুর রশিদ। পরে তার শোয়ার জায়গায় তাকে একটি কয়েল জ্বালিয়ে দিয়ে বাসায় ফেরেন। তবে বুধবার সকালে কে বা কারা ওই বৃদ্ধাকে তার বাসায় রেখে যায়।
ওই বৃদ্ধা নিজেও প্রথমে সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেন তিনি কবরে ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমি এই ৯ মাস শুধু পান খেয়েছি, আর কিচ্ছু খাইনি। আর কিচ্ছু খেতেও পারতাম না। '
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, কবর থেকে লাশ উঠে আসার ঘটনাটি পুরোপুরি একটা গুজব। আটক ওই নারী মৃত বাছিরন বেওয়ার মতো দেখতে হওয়ায় হৈচৈ পড়ে যায়। খবর পেয়ে এসআই জাহাঙ্গীরকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ওই নারীসহ বাসার মালিক আব্দুর রশিদকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
ওসি জানান, পরে অবশ্য তিনি পুলিশের কাছে সব বলেছেন জানিয়ে তিনি জানান, ৭৫ বছর বয়সের ওই নারী নিজের নাম পদ্ম রানী, বাবার নাম বাচা চন্দ্র এবং বাড়ি খুলনার আশাশুনি থানার মৎস্য কালীবাড়ি বলে জানিয়েছেন। ট্রেনে সাহায্য চাইতে চাইতে তিনি গাইবান্ধায় চলে এসেছেন। তবে ওই নারী কিছুটা মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় আর বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি। ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করার পর আত্মীয়-স্বজনদের ডেকে তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
এদিকে তিনদিনেও ওই নারীর সঠিক পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। যার ফলে গাইবান্দায় গুঞ্জন এখনো থামেনি। ওই নারীর প্রকৃত পরিচয় ও স্বজনদের শনাক্ত করতে খুলনা রেঞ্জসহ সকল থানা পুলিশের কাছে ছবিসহ বার্তা পাঠানো হয়েছে। গণমাধ্যম ও ফেসুবকসহ বিভিন্ন মাধ্যমেও অনুসন্ধান করে পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, ৭৫ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধা নারী ঠিকমতো কথা বলতে না পারায় তার পরিচয় বের করতে সময় লাগছে। বর্তমানে ওই নারী গাইবান্ধা সদর থানায় পুলিশের হেফাজতে আছেন। তবে পরিচয় ও পরিবারের কাউকে না পেলে সমাজ সেবা অধিদফতরের মাধ্যমে তাকে আশ্রমে রাখা হবে। তাকে সুস্থ করে তুলতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।