ছবি : মোহাম্মদ আসাদ
কড়া জাতিগোষ্ঠীর প্রথম সন্তান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া লাপোল কড়াকে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেবে বলে জানিয়েছে পে ইট ফরোয়ার্ড বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা পর্যন্ত এই টাকাটা পাবেন লাপোল।
কড়া নৃগোষ্ঠীর মাত্র ২৮টি পরিবার টিকে আছে দেশে। জনসংখ্যা মোট ১০৪ জন।
বিজ্ঞাপন
অনেকেই প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে লাপোলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁর পাশে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
পড়ুন সেই প্রতিবেদন : কড়াদের প্রথম ‘তারা’
মায়ের সঙ্গে লাপোল।
নিজের লড়াই এখনো শেষ হয়নি বলে জানিয়েছেন লাপোল। পাড়ার অন্য সব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াতে চান তিনি। এ প্রসঙ্গে লাপোল বলেন, "জন্ম নিয়ে জীবন পেয়েছি। বয়সের সঙ্গে ক্ষুধা বেড়েছে। ক্ষুধা ‘খেয়ে’ ক্ষুধা নিবারণ করে বড় হয়েছি। অনেক কষ্টের ফল পত্রিকার পাতায় ‘তারা’ হয়েছি। সত্যিকারের ‘তারা’ যেন হতে পারি আমি। কোটি মানুষের না হোক, নিজের মানুষদের, কড়াদের, ওঁরাওদের, মুণ্ডাদের, মুশহরদেরসহ আমাদের পিছিয়ে পড়া শিশুদের জীবন আলোকিত করায় ভূমিকা রাখতে পারি। এ প্রার্থনা সেসব মানুষের কাছে, যাঁদের ভালোবাসা পেয়ে আমি বুঝতে পেরেছি ‘সূর্য রাতের অন্ধকার দূর করে’। "
তিনি বলেন, ‘আমি জানি এই পৃথিবীতে হাজারো সূর্য উদিত হয়ে আছে, যারা হতদরিদ্র, অসহায় মানুষের জীবনের অন্ধকার দূর করে থাকে, তাঁদের সবাইকে আমার অন্তরের গভীর থেকে জানাই শ্রদ্ধা। ’
লাপোল কড়া ও তাঁর বোন পূর্ণিমা।
ইতোমধ্যে ছোট বোন পূর্ণিমাকেও দিনাজপুরের বিরল থেকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন লাপোল। ভর্তি করেছেন মিরপুরের বনফুল গ্রিনহার্ট আদিবাসী স্কুল অ্যান্ড কলেজে, নবম শ্রেণিতে। এশিয়াটিক ইভেন্টস মার্কেটিং লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ মাসিক পাঁচ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে পূর্ণিমার পড়াশোনার খরচ বহন করব আমি। ’
এ ছাড়া দলিতদের নিয়ে কাজ করা উন্নয়ন সংস্থা নাগরিক উদ্যোগও পূর্ণিমার জন্য একটি বৃত্তি দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
লাপোলের মা সাতোল কড়া বলেছেন, ‘আমি কোনো দিন স্কুলে যাই নাই। বিশ্ববিদ্যালয় কী জিনিস তাও জানি না। অনেক কষ্টে ছেলেটাকে পড়াইছি। আপনাদের কল্যাণে ছেলে-মেয়ে দুজনই এখন ঢাকায় গেল। এই জন্য খুব ভালো লাগছে। ’