<p style="text-align: justify;">স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে সেটি হয়ে ওঠে প্রাণঘাতী। বিশেষজ্ঞদের মতে, নারীরা পুরুষদের তুলনায় স্ট্রোকের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। বিষয়টি উদ্বেগজনক হলেও অধিকাংশ নারী এ বিষয়ে এখনও সচেতন নন।</p> <p style="text-align: justify;">স্ট্রোক ঘটে তখনই, যখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় বা কোনো রক্তনালি ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলো অক্সিজেন ও পুষ্টির অভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না নিলে এতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">বিশ্বব্যাপী গবেষণা বলছে, ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় দ্বিগুণ। অথচ এই বয়সের অধিকাংশ নারী স্ট্রোক সম্পর্কে সচেতন নন।</p> <p style="text-align: justify;">নারীদের মধ্যে বিষণ্ণতার হার তুলনামূলক বেশি। বিষণ্ণতায় স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রায় ২৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে ধূমপান, স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও শরীরচর্চার অভাব। তাই ধূমপান ও তামাক, জর্দা, সাদা পাতা ছাড়তে হবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জীবনযাপনে আনতে হবে শৃঙ্খলা।</p> <p style="text-align: justify;">চিকিৎসকরা বলছেন, দৈনিক ১০ ঘণ্টার বেশি বা খুব কম ঘুম, উভয়ই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। আর প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাতে ৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। এছাড়াও ঘুমের সময় যাঁরা নাক ডাকেন, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেশি।</p> <p style="text-align: justify;">নারীদের মধ্যে মাইগ্রেনের প্রবণতা বেশি, যা স্ট্রোকের আরেকটি ঝুঁকিপূর্ণ কারণ। পুরুষদের তুলনায় নারীরাই মাইগ্রেনের সমস্যায় বেশি ভোগেন। বিশেষ করে মাইগ্রেন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ না খাওয়া উত্তম।  </p> <p style="text-align: justify;">বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরানো ও বুকব্যথা এগুলো হলো অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশনের লক্ষণ। এ সমস্যায় অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন হয়। এটা রক্ত জমাটবাঁধা, স্ট্রোক, হার্ট ফেইলিউর ও অন্যান্য জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। যাঁদের এ সমস্যা রয়েছে, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি পাঁচ গুণ বেশি।</p> <p style="text-align: justify;">সহজেই রেগে যাওয়া বা আগ্রাসী আচরণ নারীদের মধ্যে ঘাড়ের ধমনির পুরুত্ব সহনশীল মানুষের তুলনায় বেশি, যা স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। ধমনির অধিক পুরুত্ব স্ট্রোকের ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ হিসেবে বিবেচিত।</p> <p style="text-align: justify;">নারীদের মধ্যে লুপাসজাতীয় রোগের প্রবণতা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির ব্যবহার স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের অন্যতম ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত। নারীদের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার প্রবণতা রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত করতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর জন্য দিনে অন্তত ৪০ মিনিট সময় বের করতে হবে হাঁটার জন্য বা ব্যায়ামের জন্য। গবেষণা বলছে, সপ্তাহে স্বাভাবিক গতিতে দুই ঘণ্টা হাঁটলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে। আর দ্রুত হাঁটলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।</p>