<p>শীত আসতেই শুরু হয় ভ্রমণপিয়াসুদের ছুটে চলা। নতুন বা পুরানো গন্তব্যে সারা বছরই তারা দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে বেড়ান। তবে শীতের সময় এর পরিমাণ অনেক বেশি। বাংলাদেশের পর্যটকদের প্রথম পছন্দই বলা চলে কক্সবাজার। তবে তারা বারবার একই জায়গায় ঘুরে আসেন। কক্সবাজারের যে আরো কিছু সৌন্দর্য আছে সেটা তারা জানেনই না।</p> <p>সাধারণত আমরা কক্সবাজার গেলে পরিচিত গন্তব্যের বাইরে যেতে চাই না। অথচ এই পরিচিত জায়গাগুলো ছাড়াও আরো কিছু নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট রয়েছে কক্সবাজারে। এমন পাঁচটি স্পট নিয়ে আজকের আয়োজন। চলুন দেখে নিই-</p> <p><strong>পাটুয়ার টেক-শামলাপুর সৈকত</strong></p> <p>আমরা কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা, কলাতলী—এই জায়গাগুলোই সাধারণত ঘুরতে যাই। কিন্তু কক্সবাজারে এমন কিছু অসাধারণ নির্জন সমুদ্রসৈকত রয়েছে, যা এককথায় দারুণ অনুভূতি এনে দেবে। কক্সবাজারের ডলফিন মোড় থেকে পাটুয়ার টেক পার হয়ে শামলাপুর বিচের দূরত্ব প্রায় ৪৭ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মতো। সিএনজি, চান্দের গাড়ি সহজেই পাওয়া যাবে। সারা দিনের জন্য দরদাম করে ভাড়া করলে দেড় হাজার টাকায় পাওয়া যাবে। যাওয়ার পথে একপাশে ঝাউবন, আরেক পাশে পাহাড় আর সমুদ্রসৈকতের মনোরম দৃশ্য, মৃদুমন্দ বাতাস ও সমুদ্রের গর্জন মুগ্ধ করবে।</p> <p style="text-align:center"><img alt="1" height="600" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/12/06/my1199/Untitled design - 2024-12-06T154415.889.jpg" width="1000" /></p> <p>শামলাপুর সৈকত অতটা পরিচিত নয়। ফলে পর্যটকদের বেশ নির্জন, ভিড় একেবারেই কম। ঝাউবন, সারি সারি সাম্পান নৌকা মুগ্ধ করবে যে কাউকে। এই বিচ থেকে ১৭ কিলোমিটার পেছনে গেলে পাটুয়ার টেক সৈকত। শামলাপুর বিচের তুলনায় পাটুয়ার টেক সৈকত বেশ ব্যস্ত। মানুষের ভিড়ও বেশি। এখানে মূল আকর্ষণ হচ্ছে মোটররাইড ৩০০-৬০০ টাকার মধ্যে। ৬০০ টাকার রাইডে আপনি যেতে পারবেন লাল কাঁকড়ার সৈকতে। অভূতপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে চাইলে যেতে পারেন সেখানে।</p> <p><strong>টেকনাফ জেটিঘাট ও বাহারছড়া</strong></p> <p>কক্সবাজার ডলফিন মোড় থেকে যেতে হবে টেকনাফে। এই জেটি ঘাটটি অসম্ভব সুন্দর। প্রচুর বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য হচ্ছে এই টেকনাফ। বাহারছড়া মূলত কচ্ছপের রাজত্ব। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা এখান থেকে ট্রলার ভাড়া নিয়ে চলে যেতে পারবেন মাঝ সমুদ্রে। উপভোগ করতে পারবেন মাঝসমুদ্রের নিস্তব্ধতা আর জেলেদের জীবন।</p> <p><strong>রেজু খাল কায়াকিং ও সালসা সৈকত</strong></p> <p>ইনানী সৈকতের আগেই পড়বে রেজু খাল। এর উৎপত্তি মিয়ানমারে। এখানে রয়েছে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা। দুজনের আধা ঘণ্টা কায়াকিংয়ের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। এর পরেই আছে সালসা সৈকত, যেখানে নানা রকম স্থানীয় ফল দিয়ে বুফের মতো করে পরিবেশন করা হয়। একে কাঁকড়া বিচও বলা হয়ে থাকে।</p> <p style="text-align:center"><img alt="2" height="600" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2024/12/06/my1199/Untitled design - 2024-12-06T154518.311.jpg" width="1000" /></p> <p>এখানে আরো আছে প্যারাসেইলিংয়ের ব্যবস্থা। রেজু খালের অনেকটা অংশ কাঠের সেতু বেয়ে পার হয়ে যেতে হবে সালসা বিচের প্যারাসেইলিং পয়েন্টে। সেতু পার করেই দুপাশে ঝাউবনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় সমুদ্রসৈকতে। এর দৃশ্য অন্য সব সৈকতের চেয়ে নিঃসন্দেহে আলাদা। </p> <p><strong>দরিয়ার নগর সৈকত</strong></p> <p>এখানেও আছে প্যারাসেইলিংয়ের ব্যবস্থা। সূর্যাস্তের সময় প্যারাসেইলিং দারুণ এক অভিজ্ঞতা হতে পারে। পারাসেইলিংয়ের খরচ দুই থেকে আড়াই কিলোমিটারের জন্য ২০০০ টাকা আর আড়াই থেকে তিন কিলোমিটারের জন্য ২৫০০ টাকা।</p> <p><strong>সি পার্ল ওয়াটার পার্ক</strong></p> <p>সি পার্ল ওয়াটার পার্ক যেতে হলে কলাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে হোটেল সি ক্রাউন গিয়ে বাস ধরতে হবে। সেখান থেকে পার্কের উদ্দেশে সকাল সাড়ে ১০টায় বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৩০ টাকা। এছাড়া অটোরিকশা বা মাইক্রোবাসেও যাওয়া যাবে। সেজন্য ভাড়াও পড়বে বেশি। ওয়াটার পার্কের টিকিট জনপ্রতি ৬০০ টাকা। টিকিটের সঙ্গে থাকবে আটটি রাইড—থান্ডারবোল, ওপেন স্লাইড, মাল্টিল্যান্ড, উইন্ড স্টর্ম, কামাকাজি রাইড ও অ্যাকুয়ালোভ।</p> <p>এ ছাড়া রয়েছে নয়নাভিরাম আরো পর্যটন স্পট। তাই যাওয়ার আগে জেনেশুনে যাবেন। যারা ইতিমধ্যে ঘুরে এসেছেন তাদের থেকে অভিজ্ঞতা শুনবেন। তাহলে আপনার ভ্রমণ আরো আনন্দদায়ক হবে।</p>