<article> <p style="text-align: justify;">নারী যখন গর্ভবতী হন, তখন তাঁর শরীরের অভ্যন্তরে অনেক রকম পরিবর্তন ঘটে, যার কিছু বহিঃপ্রকাশ ত্বকের ওপরও আমরা দেখতে পাই। সাধারণভাবে যা প্রায় সব গর্ভবতীর ক্ষেত্রেই দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে :</p> <p style="text-align: justify;">* গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি পর্যায় থেকেই মেছতা দেখা দেয়। এর ফলে গালে, কপালে ও নাকে কালচে দাগ তৈরি হয়।</p> <p style="text-align: justify;">* স্তনবৃন্তের চারপাশের ত্বক কালো হয়ে যায়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">* গর্ভাবস্থার প্রথম ভাগ থেকেই নাভি থেকে শুরু করে তলপেটের শেষ ভাগ পর্যন্ত লম্বা একটি কালো রেখা দেখা যায়, এটাকে বলা হয় ‘লিনিয়া নাইগ্রা’।</p> <p style="text-align: justify;">* ঊরুর মাঝামাঝি থেকে শুরু করে হাঁটু পর্যন্ত বেশ বিস্তৃত জায়গাজুড়ে অনেক ক্ষেত্রেই বেশ কালো হয়ে যায়। অনেক সময় হাঁটুর নিচেও এটা বিস্তৃত হয়ে থাকে।</p> <p style="text-align: justify;">* উপরোক্ত উপসর্গগুলো প্রধানত ত্বকে অতিরিক্ত মেলানিন তৈরি হওয়ার কারণে ঘটে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">শরীরের হরমোন পরিবর্তনের কারণেও এটা হয়ে থাকে বলে মনে করা হয়।</p> <p style="text-align: justify;">* ত্বক ফেটে যাওয়া বা ‘স্ট্রেচ মার্কস’ মূলত তলপেটেই বেশি দেখা যায়। স্বল্প সময়ের ভেতর অতিরিক্ত সম্প্রসারিত হওয়ার কারণে তলপেটের ত্বকের ভেতরে থাকা ইলাস্টিন টিস্যু স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে ‘স্ট্রেচ মার্কস’ তৈরি হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">অতিরিক্ত মেলানিন তৈরি হওয়ার কারণে গর্ভাবস্থায় যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয়, সন্তান প্রসবের পর মাস ছয়েকের মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো পুরো নিরাময় হতে দেখা যায়। তবে স্ট্রেচ মার্কসের ক্ষেত্রে সেটা ঘটে না। এর হাত থেকে পুরোপুরি নিষ্কৃতি না পাওয়া গেলেও উপযুক্ত চিকিৎসায় উন্নতি ঘটে।</p> <p style="text-align: justify;">* গর্ভাবস্থায় ত্বকের আরেকটি সমস্যা যা প্রায়ই লক্ষ করা যায়, সেটি হলো ব্রণ।</p> <p style="text-align: justify;">* আগে একসময় যাঁদের ত্বকে ব্রণের প্রকোপ ছিল, তাঁদের ব্রণ আরো বৃদ্ধি পায়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আবার এ রকমও হতে দেখা যায় যে আগে ব্রণ ছিল না, অথচ গর্ভাবস্থায় ব্রণের আক্রমণ ঘটছে। এ রকম হলে সন্তান প্রসবের পর এই ব্রণ এমনিই সেরে যায়। ব্রণের প্রকোপ বেশি ঘটলে অবশ্যই ত্বকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে, যিনি সন্তানের নিরাপত্তা বজায় রেখে চিকিৎসা দেবেন।</p> <p style="text-align: justify;">* গর্ভাবস্থায় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানিসহ বিভিন্ন রকম গোটা উঠতে দেখা যায়, যাকে ‘গর্ভকালীন একজিমা’ বলা হয়। এ অবস্থায় ত্বকের যে পরিবর্তনই ঘটুক না কেন তার চিকিৎসা অবশ্যই স্বাভাবিক অবস্থায় দেওয়া চিকিৎসার মতো হবে না, কেননা এ সময় বেশির ভাগ ওষুধই অনাগত সন্তানের নিরাপত্তার জন্য নিষিদ্ধ থাকে। তবে ত্বকের স্বাভাবিক যত্নে সাধারণ ত্বক ময়েশ্চারাইজার ক্রিম, সানব্লক, নিরাপদ ফেসওয়াশ ব্যবহার বিশেষভাবে জরুরি।</p> <p style="text-align: justify;">উপরোক্ত সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে চিকিৎসায় যতটুকু উন্নতি ঘটবে ততটুকুই মেনে নিতে হবে।</p> <p style="text-align: justify;">পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p style="text-align: justify;"><b>ডা. যাকিয়া মাহফুজা যাকারিয়া</b></p> <p style="text-align: justify;">সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজি</p> <p style="text-align: justify;">উত্তরা স্কিন কেয়ার অ্যান্ড লেজার, ঢাকা</p> </article>