<article> <p style="text-align: justify;">হাফিজা খাতুন ইদানীং লক্ষ করছেন তাঁর দুই বছর বয়সী বাচ্চার এক চোখ রাতে বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে। প্রথম দিকে তিনি এটিকে গুরুত্ব না দিলেও আজ চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গেলেন পরামর্শের জন্য। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন যে, এই রোগটির নাম ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>রেটিনোব্লাস্টোমা কী?</strong></p> <p style="text-align: justify;">এই বিরল রোগ ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’ হচ্ছে চোখের ক্যান্সার।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">প্রাথমিকভাবে এটি পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ১০ বা বেশি বয়সীদের রেটিনোব্লাস্টোমাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। তবে সবার এই ধরনের রোগ হয় না। ১৫ থেকে ১৮ হাজার শিশুর মধ্যে হয়তো একজন এই ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এটি এক চোখে কিংবা দুই চোখেই হতে পারে। দুই চোখে আক্রান্ত হলে সাধারণত এক বছরের মধ্যে এবং এক চোখে আক্রান্ত হলে সাধারণত দুই বছরের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। রেটিনোব্লাস্টোমা হলো রেটিনার অপরিপক্ব কোষ, যা আমাদের প্রারম্ভিক জীবনে বৃদ্ধি পেয়ে রেটিনা গঠন করে। রেটিনোব্লাস্টোমা এই কোষগুলো বৃদ্ধির হারকে প্রভাবিত করে এবং তাদের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি করে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;"><strong>কারণ : </strong>রেটিনোব্লাস্টোমা প্রায়ই জিনের পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত। বংশগত কারণেও হতে পারে এই রোগ। পরিবারের কারো এই রোগ থাকলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ বেশি।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>লক্ষণ</strong></p> <p style="text-align: justify;">► রাতে চোখের মণি বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করা।</p> <p style="text-align: justify;">► চোখ ট্যারা হয়ে যাওয়া।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">► চোখ ফুলে যাওয়া।</p> <p style="text-align: justify;">► দুর্বল দৃষ্টিশক্তি।</p> <p style="text-align: justify;">► চোখ লাল হয়ে যাওয়া।</p> <p style="text-align: justify;">► চোখ ব্যথা।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>রোগ নির্ণয় :</strong> বিভিন্ন ইমেজিং কৌশল যেমন : আলট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই টিউমারের পরিমাণ এবং এটি চোখের  বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে কি না তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করে।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>চিকিৎসা : </strong>রেটিনোব্লাস্টোমার চিকিত্সা এই রোগের অবস্থার তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। বিভিন্ন ধরনের চিকিত্সা পদ্ধতি রয়েছে। যেমন—</p> <p style="text-align: justify;">► কেমোথেরাপি : টিউমার ছোট করতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">► বিকিরণ থেরাপি : ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করে।</p> <p style="text-align: justify;">► ক্রায়ো এবং লেজার থেরাপি : ছোট টিউমারের চিকিত্সায় কার্যকর।</p> <p style="text-align: justify;">► অপারেশন : গুরুতর ক্ষেত্রে চোখ অপসারণ করা প্রয়োজন হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">মনে রাখবেন প্রাথমিক অবস্থায় যদি রেটিনোব্লাস্টোমা ধরা পড়ে তাহলে এই ক্যান্সারের পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব। সময়মতো চিকিত্সা না করা হলে এই ক্যান্সার মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. মো. আরমান হোসেন রনি</strong></p> <p style="text-align: justify;">কনসালট্যান্ট (চক্ষু)</p> <p style="text-align: justify;">দীন মোহাম্মদ আই হাসপাতাল,  সোবহানবাগ, ঢাকা।</p> </article>