<p>ঘুমানোর আদর্শ বিছানা ও বালিশ কেমন হওয়া উচিত? এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অনারারি অফিসার ডাক্তার <strong>রায়হান উদ্দিন</strong>। লিখেছেন <em>জান্নাতিন তাজরীমিন রীথি।</em><br /> রাতে ঘুম ভালো না হলে দিনে তার প্রভাব পড়ে। ঘুমের সঙ্গে বিছানা এবং বালিশের ওতপ্রোত সম্পর্ক। বালিশ কিংবা বিছানা ঠিকঠাক না হলে শরীর ব্যথা, ঘাড় ব্যথা, কোমড় ব্যথাসহ আরও অনেক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই বিছানা এবং বালিশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবার সচেতন হওয়া জরুরি।<br /> বিছানা, বালিশ আরামদায়ক হলে ঘুম ভালো হয়। তবে তুলুতুলে বিছানা বা বালিশ ঘুমানোর জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। ঘুমানোর জন্য দৃঢ় বালিশ ও বিছানা শরীরের বক্রতাকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।<br /> বিছানার কথা বলতে গেলে তোশক, জাজিম, ফোম ইত্যাদি উপকরণের নাম চলে আসে।<br /> বালিশের মধ্যে তুলা, ফোম, ফাইবার ইত্যাদি উপকণ আছে। কোনটা ভালো হবে এবং কোন আকৃতিতে ব্যবহার করতে হবে সেই সম্পর্কে জানতে হবে।<br /> বিছানা কেমন নির্বাচন করবেন?</p> <ul> <li>  বিছানা খুব বেশি নরম কিংবা খুব বেশি শক্ত হওয়া যাবে না।</li> <li> তোশক ও জাজিম একসঙ্গে ব্যবহার না করাই ভালো। তবে খাট কিংবা বিছানার ওপর ভিত্তি করে দুটিই ব্যবহার করা যেতে পারে যদি সেটা সঠিক উপায়ে বানানো যায়। প্রথমে জাজিম বিছিয়ে তার ওপর শক্ত কাঠ বা হার্ডবোর্ড দিয়ে এর ওপর তোশক পাততে হবে।</li> <li>তোশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভালো মানের তুলা ব্যবহার করা উচিত। শিমুল তুলা ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। দামে অন্যান্য তুলার চেয়ে একটু বেশি হলেও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ভালো সিদ্ধান্ত হয় শিমুল তুলা ব্যবহার করলে।</li> <li>জাজিম সাধারণত পাঁচ-সাত ইঞ্চি এবং তোশক তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বানানো ভালো।</li> <li>ম্যাট্রেসের ক্ষেত্রে একটু শক্ত প্রকৃতির কেনাই উত্তম। বেশি নরম ম্যাট্রেস মেরুদণ্ডের হাড়ের গঠনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।</li> <li>শোয়ার সময় বিছানার কোনো অংশ যেন দেবে না যায় সেটা নিশ্চিত করে বিছানা কিনুন।  <div style="text-align:center"> <figure class="image" style="display:inline-block"><img alt="bed" height="600" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/Taposhi/2323.jpg" width="1000" /> <figcaption>আরামের কথা বিবেচনায় রেখে বিছানায় সুতির চাদর ব্যবহার করুন। ছবি: পিন্টারেস্ট</figcaption> </figure> </div> <p> </p> </li> </ul> <p>বালিশ কেমন হলে ভালো হয়</p> <ul> <li>বালিশের উপকরণ প্রাকৃতিক হওয়া উত্তম। ফোম বা কৃত্রিম ফাইবারের বালিশ নরম হলেও ঘুমের জন্য একদমই আরামদায়ক নয়। তুলার তৈরি বালিশ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।</li> <li>বেশি উঁচু বা নিচু বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়। বালিশের উচ্চতা এমন হবে যেন যাতে ঘাড় ও পিঠ সমান্তরালভাবে থাকে। তিন-পাঁচ ইঞ্চি উচ্চতার বালিশ সাধারণত আদর্শ উচ্চতা হিসেবে ধরা হয়।</li> <li> বালিশের মাপ খুব বেশি ছোট না হওয়াই ভালো। যেমন কুশন।</li> <li> বালিশের কভার বেশি খসখসে হওয়া যাবে না।</li> </ul> <p>আরো যা মাথায় রাখতে হবে</p> <ul> <li>  মেঝে কিংবা সোফায় শোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।</li> <li> বিছানার আয়তন এমন হতে হবে যেন আরাম করে হাত-পা স্বাচ্ছন্দ্যে রেখে ঘুমানো যায়।</li> <li> একপাশ হয়ে ঘুমানো ভালো, তবে শরীর কুঁকড়ে না ঘুমানোই উত্তম।</li> <li> কোলবালিশের আয়তন এমন হওয়া যাবে না যাতে ঘুমাতে গেলে বেগ পেতে হয়।</li> <li>বাতাসের বিছানা, বালিশ পরিহার করতে হবে।</li> <li>বিছানায় সুতির চাদর ব্যবহার করুন।</li> <li>২/৩ বছর অন্তর অন্তর বালিশ এবং বিছানা পরিবর্তন করুন।</li> <li>ঘুমের সময় নাক ডাকা বা নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৰকের পরামর্শ নিন।</li> </ul> <p>সাজানোর জন্য যা ব্যবহার করতে পারেন</p> <ul> <li> আরামের ঘুমের জন্য যেমন বিছানা বালিশ সঠিক হতে হয় তেমনি তার সাজানোর ধরনের উপরও নির্ভর করে রুচিশীলতা। সুন্দর করে সাজানো বিছানা মনের মধ্যে এক ধরনের ভালো লাগা সৃষ্টি করে যা ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।</li> <li> বিছানার চাদর এবং বালিশের এক রংয়ের কভার কিংবা বিপরীত রংয়ের ব্যবহার করুন।</li> <li> বিছানা সাজানোর জন্য বালিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আকারের কুশন ব্যবহার করতে পারেন।</li> <li> বিছানার এক পাশে সুন্দর নকশার কম্ফর্টার রাখতে পারেন।</li> <li> বিছানা জানালার পাশে হলে কার্টেইন বা পর্দা উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করতে পারেন।</li> </ul>
