<p>মাথা ব্যথার নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা দেওয়া কঠিন। বলা হয়, এটি এমন এক ধরনের ব্যথা বা ব্যথার অনুভূতি, যা মাথা ও মাথার চারপাশে হতে পারে। যেহেতু এটা সব মানুষেরই হয়, তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি গুরুতর কোনো রোগ নয়। তবে কিছু মাথা ব্যথা আছে সেগুলোকে কিছু গুরুতর রোগের উপসর্গ বা নির্দেশক বলা হয়ে থাকে।</p> <p>বিশ্ব হেডেক সোসাইটি মাথা ব্যথাকে দুই ভাগে ভাগ করে।</p> <p><strong>প্রাইমারি হেডেক : </strong>প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে মাথা ব্যথাগুলো প্রাইমারি হেডেক। এগুলো সিরিয়াস কোনো রোগ নির্দেশ করে না।</p> <p><strong>সেকেন্ডারি হেডেক : </strong>এটি মাথা, ঘাড় বা শরীরের অন্য কোনো অংশের সিরিয়াস কোনো রোগ নির্দেশ করে। মোট মাথা ব্যথার ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটি দেখা যায়। ১ শতাংশ মাথা ব্যথা ব্রেন টিউমারের কারণে হয়ে থাকে। রোগীর মধ্যে কোনো খারাপ লক্ষ্মণ বা রেড ফ্ল্যাগ সাইন আছে কি না তা যেমন একজন চিকিৎসকের জন্য জানা জরুরি, তেমনি মাথা ব্যথার রোগীদেরও কিছু ধারণা রাখা দরকার।</p> <p><strong>খারাপ লক্ষণগুলো নিম্নরূপ</strong></p> <p>* যেকোনো মাথা ব্যথা ৫০ বছর বয়সে বা তার বেশি বয়সে প্রথম দেখা দেয়।</p> <p>* সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাথা ব্যথা বাড়তে থাকা। এর মানে মাথা ব্যথাটা শুরু হওয়ার পর থেকে দিনে দিনে এটার সংখ্যা ও মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে থাকা। যেমন ব্রেন টিউমারে এ রকম দেখা যায়। ব্রেন টিউমার ছাড়াও টিবি মেনিনজাইটিস, সারকোইডোসিস, লিম্ফোমা বা অন্যান্য কর্কট রোগ বা মেটাস্টেসিসের মতো দেখা যায়।</p> <p>* হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা, ডায়াবেটিস বা রক্তনালির সমস্যা আছে—এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যথা হলে স্ট্রোক, সাব-অ্যারাকনয়েড হেমারেজ ইত্যাদি নির্দেশ করে।</p> <p>* তীব্র মাথা ব্যথার সঙ্গে জ্বর, গায়ে ফুসকুড়ি, প্রচণ্ড দুর্বলতা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া।</p> <p>* মাথা ব্যথার সঙ্গে আচার-আচরণ, চলাফেরা বা কথাবার্তায় অসংলগ্নতা হতে শুরু করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।</p> <p>* জীবনে প্রথমবারের মতো প্রচণ্ড মাথা ব্যথা যেটা সেকেন্ডের মধ্যেই সর্বোচ্চ তীব্রতায় চলে যায়। এটাকে বলে থান্ডারক্ল্যাপ হেডেক।</p> <p>* মাথায় আঘাতের পর থেকে মাথা ব্যথা।</p> <p>* প্রেগন্যান্সি বা প্রেগন্যান্সি-পরবর্তী সময় মাথা ব্যথা হতে পারে।</p> <p><strong>করণীয়</strong></p> <p>যদি দেখেন মাথা ব্যথার কারণে আপনি আপনার স্বাভাবিক কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলছেন, পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বারবার হচ্ছে বা ওপরে উল্লিখিত কোনো রেড ফ্ল্যাগ সাইন বা খারাপ লক্ষণ দৃশ্যমান হচ্ছে, তাহলে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভীষণ জরুরি।</p> <p><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong></p> <p>ডা. আলমগীর মো. সোয়েব<br /> নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড নেক সার্জন<br /> চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</p>