<p>পরীক্ষার মাধ্যমে কারো রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম শনাক্ত হলে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধের মতোই অক্সিজেন ব্যবহার করতে হয়। নাকে নল দিয়ে সাধারণত এ অক্সিজেন দেওয়া হয়ে থাকে। অনেকে ঘরে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনেও ব্যবহার করেন।</p> <p>অক্সিজেন সিলিন্ডার হচ্ছে অক্সিজেন রাখার জন্য লোহার তৈরি একটি বিশেষ পাত্র, যার ভেতরে অক্সিজেন উচ্চচাপে রাখা হয়। উচ্চচাপের ফলে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন ধারণ করে সিলিন্ডারটি। মিনিটে এক লিটার অক্সিজেন দিলে একটি মাঝারি ধরনের সিলিন্ডারে রোগী আনুমানিক ২২ ঘণ্টা অক্সিজেন পায়।</p> <p><strong>অক্সিজেন কনসেনট্রেটর</strong><br /> এটি একটি মেশিন, যেটা বিদ্যুৎ বা ব্যাটারির মাধ্যমে চালানো যায়। এ মেশিনটি বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে রোগীকে প্রদান করে। এ মেশিনে সাধারণত রোগীকে মিনিটে পাঁচ লিটার অক্সিজেন দেওয়া যায়।</p> <p><strong>তরল অক্সিজেন</strong><br /> তাপমাত্রা কমিয়ে গ্যাসীয় অক্সিজেনকে তরল অক্সিজেনে রূপান্তর করা হয়। এ অক্সিজেন রোগীকে দেওয়ার সময় আবার গ্যাসে পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।</p> <p><strong>অক্সিজেন একটি ওষুধ</strong><br /> মনে রাখতে হবে, রোগীর জন্য যে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে তা এক ধরনের ওষুধ। কাজেই এটি ব্যবহার করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো। তা ছাড়া এর পরিমাণ ও সময়সীমা পরিবর্তন করা যাবে না।</p> <p><strong>সতর্কতা</strong><br /> অক্সিজেন ব্যবহারের সময় আগুন যেন লেগে না যায়—সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অক্সিজেন ব্যবহারের রয়েছে কিছু নিয়ম-কানুন ও সতর্কতা, যা দেওয়া হলো :</p> <p>❏  আগুন ধরতে পারে এমন দাহ্য পদার্থ যেমন—ম্যাচ, মোমবাতি, সিগারেট, গ্যাস বার্নার, ফায়ারপ্লেস বা অন্য কোনো দাহ্য পদার্থ এবং কোনো তাপের উৎস যেমন—স্পেস হিটার, স্টিম পাইপ, চুলা ও অন্য কোনো ঘর গরম রাখার যন্ত্র থেকে কমপক্ষে পাঁচ ফুট দূরত্বে অক্সিজেন সিলিন্ডারটি রাখুন।</p> <p>❏  সিলিন্ডারকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন।</p> <p>❏  অক্সিজেন ইউনিটের কাছে কোনো ধরনের অ্যারোসল যেমন—এয়ারফ্রেশনার বা হেয়ার স্প্রে ব্যবহার করবেন না। অ্যারোসল একটি বিশেষ ধরনের দাহ্য পদার্থ।</p> <p>❏  গ্যাসের চুলায় রান্না করার সময় চুলার কাছে অক্সিজেন ব্যবহার করবেন না।</p> <p>❏  যে ঘরে অক্সিজেন আছে সে ঘরে ধূমপান করবেন না এবং অন্যকেও ধূমপান না করতে বলুন।</p> <p>❏  অক্সিজেন ইউনিটটিতে কখনো তেল দেবেন না, তৈলাক্ত বা চর্বিযুক্ত হাত দিয়ে ধরবেন না।</p> <p>❏  যখন অক্সিজেন ব্যবহার করবেন না, তখন সম্পূর্ণরূপে তা বন্ধ করে রাখুন।</p> <p><strong>লেখক : বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইনজিনিয়াস পালমোফিট, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।</strong></p>