মন্টুর বাপ খুব ভোরে ট্রেনে ঢাকা থেকে রওনা করেছে উত্তরবঙ্গের পথে। নাস্তা মুখে দেওয়ার সময় হয়নি। ভেবেছিল স্টেশনে খেয়ে নেবে কিছু। কিন্তু নোংরা পরিবেশের মাছি ভনভন করা খাবার পছন্দ হয়নি। ‘সমস্যা নেই, ট্রেনে কিছু খেয়ে নেব’- এই বলে নিজেকে বুঝ দেয় সে। কিন্তু ট্রেনের খাবারও পছন্দ হলো না। ওদিকে খিদে তো আর বাঁধ মানছে না!
প্রায় দুই ঘণ্টা চলার পর ট্রেন একটা স্টেশনে থামলো ৫ মিনিটের জন্য। দূরে একটা রেস্টুরেন্টে গরম সিঙ্গারা ভাজা হচ্ছে- ঘ্রাণে মন্টুর বাপের খিদে আরো বেড়ে গেল। কিন্তু সিঙ্গারা আনতে গেলে ট্রেন ছেড়ে দিতে পারে। এসময় কাছেই প্ল্যাটফর্মে একটা বাচ্চা ছেলেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মন্টুর বাপ চোখে আশা দেখতে পেল। মনে হচ্ছে ছেলেটা স্থানীয়। ইশারায় তাকে কাছে ডেকে বললো-
- বাবা, তুমি কি সামনের দোকান থেকে আমাকে দুটো সিঙ্গারা এনে দিতে পারবে?
- তা পারবো
- এই নাও বিশ টাকা। সিঙ্গারা তুমিও খেও দুটো। ঠিক আছে বাবা?
ছেলেটি টাকা নিয়ে মাথা নেড়ে ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গেল।
কিন্তু ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেল। তবু ছেলেটির দেখা নেই। হুম, ছেলেটা মনে হয় তার অনুরোধ ভালোমতো নেয়নি। তাই তাকে শিক্ষা দিতে টাকা নিয়ে বাসায় চলে গেছে।
চরম খিদে আর হতাশায় মন্টুর বাপ চোখে অন্ধকার দেখা শুরু করলো। ট্রেন চলতে শুরু করেছে। নিজের বোকামির জন্য নিজেকে দুষতে থাকা মন্টুর বাপ এসময় দেখলো ছেলেটি দৌড়াতে দৌড়াতে তার জানালার দিকে আসছে, তবে হাত খালি। মন্টুর বাপ চিৎকার করে ছেলেটিকে বলে
- সিঙ্গারা পাওনি বাপু?
- পেয়েছিলাম আঙ্কেল? তবে মাত্র দু'টো ছিল, আমি আমার ভাগেরটা খেয়ে নিয়েছি। আর এই নিন আপনার দশ টাকা!
ছেলেটি প্রাণপণে দৌড়ে তার হাতে দশটাকার একটি নোট গুঁজে দেয়।
মন্টুর বাপ এমন ধাক্কা জীবনে আর খায়নি। জ্ঞান হারিয়ে সিটে ঢলে পড়লো।
(২)
কুখ্যাত সন্ত্রাসী হেলমেট জামান খেতে বসেছে, বউ চুমকি রুই মাছের মাথাটা স্বামীর পাতে দিতে দিতে অনুযোগের স্বরে বললো
- ওগো, বিয়ের পর থেকে তুমি আর আমাকে আগের মতো ভালোবাস না কেন?
- আমি তো তোমারে আগেই কইছিলাম যে বিবাহিত মহিলাদের প্রতি আমার কোনো ইন্টারেস্টই না-ই! ভুইলা গেছ?
(সংগৃহীত)
মন্তব্য