ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫
৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৭ মহররম ১৪৪৭

কম্পিউটার পাসওয়ার্ড উদ্ভাবন ও হ্যাক করার ইতিহাস

কালের কণ্ঠ অনলাইন
কালের কণ্ঠ অনলাইন
শেয়ার
কম্পিউটার পাসওয়ার্ড উদ্ভাবন ও হ্যাক করার ইতিহাস

১৯৬২ সালে এমন একটি জিনিস আবিষ্কার হয় যা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর একটি এবং অনেকেই হয়তো বলবেন, এটি আধুনিক জীবনের সবচেয়ে বিরক্তিকর একটি জিনিসও বটে।

আর সেটা হলো পাসওয়ার্ড - কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড।

ততদিনে পৃথিবীতে কম্পিউটার চালু হয়ে গেছে এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হয়ে উঠেছে এই যন্ত্রটি। কিন্তু তখনও এর নিরাপত্তার জন্যে সেরকম কোনও ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।

সেসময় এই নিরাপত্তার এক উপায় বের করলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি বা এমআইটি। এই ব্যবস্থাটিই আজকের দিনের পাসওয়ার্ড।

পাসওয়ার্ড উদ্ভাবন
কম্পিউটার অ্যানালিস্ট অ্যালান শেয়ার বলছেন, "সেসময় কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্যে একটা অ্যাকাউন্ট নম্বর ছিল। তখন অবশ্য ‌সেটাকে বলা হতো প্রবলেম নম্বর।

আজকের দিনে সেটা হবে ইউজার আইডি বা ব্যবহারকারীর নম্বর।"

এই নম্বর ব্যবহার করে একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী টেলিফোনের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে তার কম্পিউটারের সাথে যুক্ত হতে পারতেন। এমআইটির উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তির নাম ছিল টাইম শেয়ারিং সিস্টেম।

এর উদ্দেশ্য ছিল যেকোনো স্থান থেকে একটি কম্পিউটারকে ব্যবহার করতে পারা।

এই পাসওয়ার্ড সিস্টেম যারা প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেছিলেন তাদেরই একজন ছিলেন এই অ্যালান শেয়ার। সেসময় তিনি এমআইটিতে পিএইচডি করছিলেন।

তিনি বলেন, ‘এমআইটির একদল লোক মিলে এই সিস্টেমটা তৈরি করেছিল। ওই সিস্টেম প্রোগ্রামিং-এর নেতা ছিলেন ফার্নান্দো কোরবাতো। সিস্টেমের নিরাপত্তার জন্যে তার নেতৃত্বে তখন কিছু পাসওয়ার্ড তৈরি করা হলো।

কম্পিউটিং আর স্মার্টফোনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগে আজকাল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী বিষয় হয়ে উঠেছে এসবের নিরাপত্তা, যার সূচনা হয়েছিল গত শতাব্দীর ষাটের দশকের শুরুতে।

‘এই পাসওয়ার্ডের উদ্দেশ্য হলো- কেউ যখন কোন একটি কম্পিউটারে লগ ইন করবে তাকে চিনতে পারা। যতো দূর মনে করতে পারি লগ অন কমান্ড দিয়ে তখন আমাদেরকে একটা কম্পিউটারে লগ ইন করতে হতো। তখনই লগ অন, লগ ইন এসব শব্দের উদ্ভাবন ঘটলো,’ - বলেন মি. শেয়ার।

লগ ইনের জন্যে কিছু নম্বর দিয়ে এই পাসওয়ার্ড তৈরি করা হলো।

তিনি বলেন, ‘টাইম শেয়ারিং সিস্টেমে যারা কাজ করতো তাদের জন্যে নির্দিষ্ট কিছু সময় বরাদ্দ করা থাকতো। সময় শেষ হয়ে গেলে তারা আর ওই কম্পিউটারে লগ ইন করতে পারতো না। এটা নিশ্চিত করতেই পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল - যাতে নিজের সময় পার হয়ে যাওয়ার পর অন্যের জন্যে নির্ধারিত সময়ে কেউ কম্পিউটার ব্যবহার করতে না পারেন।’

পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা
পাসওয়ার্ডটি নিশ্চিত করে দিতো কম্পিউটার ব্যবহারকারীর পরিচয় এবং তিনি কতক্ষণ ধরে কম্পিউটারটি ব্যবহার করেছেন।

কিন্তু তখনও কি তাদের মনে এই ধারণা তৈরি হয়েছিল যে এসব পাসওয়ার্ড শুধুমাত্র তার নিজের এবং এটাকে গোপন রাখতে হবে?

এই প্রশ্নের জবাবে অ্যালেন শেয়ার বলেন যে তিনি সেরকম কিছু মনে করতে পারছেন না।

‘একজন আরেকজনকে এবিষয়ে কিছু বলেছে বলে আমার মনে নেই। তারা তো খুবই মেধাবী লোক ছিলেন। তাদেরকে আলাদা করে বলার কোন প্রয়োজন ছিল না যে পাসওয়ার্ড গোপন রাখতে হবে। এটা তো একজনকে তার ওয়ালেটে টাকা রাখতে বলার মতো।’

‘এই পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা এমআইটির সব গবেষক মেনে নিয়েছিল। তারা সবাই জানতো যে লগ ইন করতে হলে তার একটি পাসওয়ার্ড লাগবে। কিন্তু ‘একটা পাসওয়ার্ড মানে একজন মানুষের পরিচয়’ তখনও এরকম কোন বিষয় ছিল না। এটাকে কারিগরি একটি বিষয় বলেই মনে করা হতো।’

তবে পাসওয়ার্ড যে একেবারেই নতুন একটি বিষয় একথা বলা যাবে না। কারণ এর আগেও এই পাসওয়ার্ডের ব্যবহার ছিল। বিশেষ করে যুদ্ধের সময়।

প্রথম হ্যাকিং
যেকোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে যেমন কিছু সময়ের দরকার হয়, ঠিক তেমনটা ঘটলো কম্পিউটার পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রেও। তাহলে কোন ব্যক্তি প্রথমবারের মতো এই কম্পিউটার পাসওয়ার্ড হ্যাক করেছিল?

এই কাজটা করেছিলেন আর কেউ নন, অ্যালান শেয়ার নিজেই।

‘পিএইচডি গবেষণার অংশ হিসেব টাইম শেয়ারিং সিস্টেম কতোটা কার্যকরী ছিল আমি সেটা নিয়ে কাজ করছিলাম। যেমন ব্যবহারকারীদের রেসপন্স টাইম কতোটুকু ছিল, কোন কিছুতে সাড়া দিতে একজন ব্যবহারকারীর কতো সময় লাগতো, তারা আসলে কী করছিল, তাদের প্রোগ্রাম কতো বড় ছিল ইত্যাদি নানা বিষয়ে আমি কাজ করতাম।’

তিনি বলেন, ‘এসব করার জন্যে অপারেটিং সিস্টেমে আমার একটা এক্সেস ছিল। সমস্যা হলো আমার জন্যে হয়তো বরাদ্দ ছিল মাত্র ১০ ঘণ্টা কিন্তু আমি তারচেয়েও আরো বেশি সময় কম্পিউটারে কাজ করতে চাইতাম। কিন্তু তারা তো আমাকে সেই সময় দিতে চাইতো না। তখন আমি একটা কাজ করলাম যাতে আমি আরো বেশি সময় ধরে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারি।’

‘আমি তাদেরকে দেখালাম যে আমি যতোটুকু সময় কম্পিউটার ব্যবহার করেছিলাম সেটা ছিল শূন্য ঘণ্টা। তখন তারা আমাকে ওই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার জন্যে আবারও অনুমতি দিতো।’

কিভাবে করলেন এই কারসাজি?
অ্যালেন শেয়ার বলেন, ‘আমাদের একটা পাসওয়ার্ড ফাইল ছিল যার নাম আমি জানতাম। নামটা ছিল ‘ইউজার অ্যাকাউন্ট সিক্রেট’। আমি দেখলাম যে সিক্রেট শব্দটির বানান উল্টো করে লেখা। তখন আমি ভাবলাম আমি তো আসলে ওই ফাইলের একটা প্রিন্ট নিতে পারি। পাসওয়ার্ডের তালিকা থেকে আমি সবকটা পাসওয়ার্ড নিয়ে নিলাম এবং তারপর থেকে আমি যখন ইচ্ছা, যতক্ষণ ইচ্ছা, এই সিস্টেম ব্যবহার করতে পারতাম। আর সেটা করতাম আমার ব্যবহৃত সময় শূন্য দেখানোর মাধ্যমে।’

এমআইটিতে টাইম শেয়ারিং সিস্টেম এবং তার কম্পিউটার ব্যবহারের জন্যে অর্থ দিতো এডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি নামের একটি সংস্থা। অ্যালান শেয়ার তখন তাদের সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছালেন।

‘যিনি এসব খরচের মূল দায়িত্বে ছিলেন তাকে ফোন করে আমি যা করেছি সেটা তাকে বলে দিলাম। এই অপরাধ থেকে আমি মুক্তি চাইলাম তার কাছে এবং বললাম আমার কাছে যেসব পাসওয়ার্ড আছে সেগুলো তাকে পাঠিয়ে দেব। তিনি তাতে রাজি হলেন।’

এখন যেমন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পাসওয়ার্ডের দরকার হয় তখনও পর্যন্ত বিষয়টা সেরকম ছিল না। কিন্তু সেরকম কিছু যে হতে যাচ্ছে সেটা তখন থেকেই আঁচ করা যাচ্ছিল।

‘ষাটের দশকের মাঝামাঝি আপনি যদি কোন বিমানবন্দরে এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন তখনও আপনার পাসওয়ার্ডের দরকার হতো। রিজার্ভেশন, বোর্ডিং কার্ড এসবের জন্যে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে হতো। সত্তরের দশকে ব্যাঙ্কেও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এই লগ অন সিস্টেম চালু হলো। তারপর আশির দশকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে যখন একটি মাত্র কম্পিউটার বহু মানুষ ব্যবহার করতে শুরু করলো তখন সেখানেও পাসওয়ার্ড সিস্টেম চালু হয়ে গেল,’ বলেন অ্যালান শেয়ার।

এমআইটি শেষে মি. শেয়ার আইবিএমে কাজ করেছিলেন - যেখানে তিনি তৈরি করেছিলেন যোগাযোগের সফটওয়্যার থেকে শুরু করে মিনি কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্যে নানা রকমের অ্যাপস।

সূত্র: বিবিসি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রিলস দেখতে আর স্ক্রল করতে হবে না, যে আপডেট নিয়ে আসছে ইনস্টাগ্রাম

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রিলস দেখতে আর স্ক্রল করতে হবে না, যে আপডেট নিয়ে আসছে ইনস্টাগ্রাম
সংগৃহীত ছবি

আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিলস বা শর্ট ভিডিও অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শত কাজের মাঝে একটু সময় পেলেই অনেকে ঢুঁ মারেন ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে। কিন্তু রিলস দেখতে গেলে বারবার স্ক্রল করতে হয়। তবে এখন থেকে আর তেমনটা স্ক্রল করতে হবে না ইনস্টাগ্রামে।

আরো সহজ হতে চলেছে রিলস দেখা।

কী এই ফিচার

খুব শিগগির রিলসে ‘অটো স্ক্রল’ ফিচার আনছে ইনস্টাগ্রাম। এর ফলে রিলস দেখতে গেলে আর স্ক্রল করতে হবে না। মোবাইল স্ক্রিনে চলতে থাকবে একের পর এক রিলস।

ইতিমধ্যেই আইফোনে এসে গেছে ইনস্টাগ্রামের নতুন এই ফিচার। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কবে আসবে, তা এখনো জানা যায়নি।

আরো পড়ুন
ঘড়ি বাঁ হাতে পরা হয় কেন, ডান হাতে পরলে কী হয়?

ঘড়ি বাঁ হাতে পরা হয় কেন, ডান হাতে পরলে কী হয়?

 

কিভাবে এই ফিচারটি চালু করবেন

‘অটো স্ক্রল’ ফিচারটি চালু করতে গেলে প্রথমে যেকোনো একটি রিলস ওপেন করতে হবে। তারপর ডানদিকে নিচে তিনটি বিন্দু দেওয়া একটি অপশন ক্লিক করতে হবে।

তারপর ‘অটো স্ক্রল’ ফিচারটি চালু করতে হবে। একবার এই ফিচারটি চালু করা হয়ে গেলে রিলস দেখার সময় আর বারবার স্ক্রল করতে হবে না।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন

মন্তব্য

অ্যানোনিমাস পেজ থেকে গুজব ছড়াচ্ছে বেটিং চক্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অ্যানোনিমাস পেজ থেকে গুজব ছড়াচ্ছে বেটিং চক্র

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাস। এই স্ট্যাটাসটি ছিল ২০ জুলাইয়ের। যেখানে দাবি করা হয়, ‘একটি বিদ্যালয়ের বিল্ডিং ধসে পড়বে, অনেক শিশুর প্রাণহানি ঘটবে। এমনটা ঘটবে বিদ্যালয়ের বিল্ডিংয়ের দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণের কারণে।

এরপরই সোমবার উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজের প্রাইমারি ভবনে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরেই অনেকে দাবি করতে শুরু করেন, হয়তো এই ঘটনার সঙ্গে স্ট্যাটাসের কোনো যোগসাজশ রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই একই পেজ থেকে উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরই অপর এক স্ট্যাটাসে দাবি করা হয়, তারা আগেই সতর্ক করেছিল। একদিন আগেই এমন কিছু ঘটবে, সেটার আগাম বার্তা দিয়েছিল। একের পর এক গুজব ছড়ানো হচ্ছিল পেজটি থেকে।

এছাড়া সোমবার সন্ধ্যায় ওই একই পেজ থেকে আরো একটি স্ট্যাটাসে দাবি করা হয়- বাংলাদেশে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি বোমা বিস্ফোরিত হবে। এটি হতে পারে কোনো হোটেল কিংবা হাসপাতালে।

মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুলস্থূল শুরু হয়। অনেকেই তাদের সেই পোস্ট শেয়ার করে এক ধরনের আতঙ্ক-উদ্বিগ্নের কথাও প্রকাশ করেন।

তবে বিষয়টি বেশি দূর গড়ানোর আগেই এই ফেসবুক পেজের মুখোশ উন্মোচন করেছেন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির। 

নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অনলাইন জুয়াড়িদেরকে খোদা বানিয়ে ফেলা বন্ধ করুন! আজকের এই দিনে এমন জিনিসে অ্যাটেনশন দিতে হবে তা ভাবাও কষ্টকর। ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নিয়ে যে হাইপ তোলা হয়েছে, তারপর একটু সময় দিলাম পেইজটার পেছনে। যা পেলাম তা হচ্ছে--- প্রথমত, এটি অ্যানোনিমাস হ্যাকার গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু নয়। অ্যানোনিমাস এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যে ফেসবুক পেইজ দেওয়া আছে সেটি এই পেইজ নয়।

‘দ্বিতীয়ত, ‘অ্যানোনিমাস মেইন পেজ’ নামক পেইজটি ঘেঁটে জানা গেছে, এটি একটি অনলাইন জুয়ার পেইজ। মূলত অনলাইন জুয়া প্রমোট করা (টিকিট বিক্রির), নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তারা অনলাইন গেমিং বা জুয়া সংক্রান্ত পোস্ট দিয়ে থাকে। তৃতীয়ত, তাদের যে পোস্ট ভাইরাল হয়েছে ‘স্কুল ভবন ধসে’ পড়া সংক্রান্ত সেটিতে লেখা হয়েছিল: ‘A school building will collapse leaving lots of kids l!veless. We see a terrible disaster fast coming, This will be as a result of poor maintenance on the building. We shall do everything in our power to avert this terrible catastrophe we’ve seen coming.’

‘এখানে কোনোভাবেই বাংলাদেশের নাম উল্লেখ নেই। আর বাংলাদেশে আজ যে ঘটনা ঘটেছে তাতে স্কুল ভবন ধসে পড়েনি। ভবনের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। যারা মারা গেছেন কেউ ভবনের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কারণে মারা যাননি। মারা গেছেন বিমান বিস্ফোরিত হয়ে লাগা আগুনে। ফলে এটা কোনোভাবেই বলার সুযোগ নেই যে, ওই পেইজে বাংলাদেশের এই ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল।’

‘গুজবে আজমসহ কিছু আওয়ামী লীগার তাদের ফেসবুক পেইজগুলোতে এই উপসংহার টানার চেষ্টা করেছেন, যা আসলে মূল পোস্টের সঙ্গে মিলে না। চতুর্থত, এই পেইজটি যে একটি স্ক্যামার জুয়াড়ি গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত তা স্পষ্ট হচ্ছে তাদের ওই পোস্টটি বাংলাদেশে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে। ভাইরাল হওয়ার প্রথম দিকেও পেইজটির ট্রান্সপারেন্সি সেকশন চেক করে দেখা গেছে এটি ৩টি দেশ থেকে চালানো হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপ, আরেকটি নাইজেরিয়া এবং তৃতীয়ত দেশের নাম এডমিন প্রকাশ করেনি।’ 

‘পোস্ট ভাইরাল হওয়ার পর তাদের পেইজের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় এডমিনদের অবস্থানকারী দেশের তথ্য তারা হাইড করে দিয়েছে। আফ্রিকায় নাইজেরিয়া অনলাইন জুয়াড়িদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। জুয়ার প্রমোশনমূলক ওদের একটা পুরনো ভিডিওতে একজন আফ্রিকানকে দেখা গেছে। অর্থাৎ, এটির সঙ্গে নাইজেরিয়ান জুয়াড়িদের কানেকশন থাকার খুবই সম্ভাবনা রয়েছে।’

‘তাদের পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পরে যখন বুঝতে পেরেছে তারা বাংলাদেশিদের অ্যাটেনশন পাচ্ছে (বিকেল থেকে তাদের ফলোয়ার ২ লাখের কাছাকাছি থেকে ৩ লাখের ওপরে উঠেছে) তখন একের পর এক বাংলাদেশ বিষয়ক পোস্ট দেওয়া শুরু করেছে। এবং আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভয়ঙ্কর কিছু বাংলাদেশের মার্কেটগুলোতে ঘটবে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। একইসঙ্গে তাদের আরো নানান জুয়ার পেইজ প্রমোট করা শুরু করেছে বাংলাদেশি নতুন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে। আহ্বান জানাচ্ছে দ্রুত ফলোয়ার হওয়ার জন্য। এই পেইজটি ফলো করে জানি না কতজন অনলাইন জুয়ায় ঝুঁকে ফতুর হয়। এমনিতেই বাংলাদেশে অনলাইন জুয়া নানানভাবে বাড়ছে।’

মন্তব্য

চলতি সপ্তাহেই আসতে পারে আইওএস ২৬

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চলতি সপ্তাহেই আসতে পারে আইওএস ২৬
ছবি : অ্যাপল

চলতি বছরের জুন মাসে অ্যাপলের ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপারস কনফারেন্স (ডব্লিউডব্লিউডিসি) থেকে আইওএস ২৬ ডেভেলপার বিটা প্রকাশ করা হলেও সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি প্রকাশ হয়নি। তবে ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর, গুজব রয়েছে আইওএস ২৬ পাবলিক বিটা এ সপ্তাহেই প্রকাশ হতে যাচ্ছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক মার্ক গুরম্যানের সর্বশেষ পাওয়ার অন নিউজলেটারে এমন তথ্যই জানা গেছে। সেখানে গুরম্যান জানিয়েছেন, আইওএস ২৬ আগামী সপ্তাহে পাবলিক বিটা পর্যায়ে যাবে বলে সব ধরনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

এটি আপডেট করা অপারেটিং সিস্টেমটিকে বর্তমানে যে পরিমাণ দর্শক আছে তার চেয়ে অনেক বেশি দর্শকের কাছে নিয়ে যাবে। যদিও এটি প্রকাশের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত নয়, এটি সেপ্টেম্বরে আইফোন ১৭-এর সঙ্গে প্রকাশ হতে পারে।

গত সপ্তাহে এক্সে একটি পোস্টে গুরম্যান বলেছিলেন, আইওএস ২৬ পাবলিক বিটা ২৩ জুলাই বা তার কাছাকাছি সময়ে প্রকাশ হতে পারে। পরবর্তী পাওয়ার অনের তথ্য থেকে মনে হচ্ছে, গুরম্যান সেই সময়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।

গুরম্যানের প্রতিবেদনে ২০২৬ সালে প্রকাশ হতে যাওয়া আইওএস ২৭ সম্পর্কেও সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে। গুরম্যান বিশ্বাস করেন, অ্যাপল ইতিমধ্যেই এই সফ্টওয়্যারটির উন্নয়নকাজ শুরু করেছে, যা অ্যাপলের ভাঁজযোগ্য আইফোনের সঙ্গে আসতে পারে। গুজব রয়েছে যে এটি ২০২৬ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৭ সালের প্রথম দিকে বাজারে আসবে। বাজারে বর্তমান সেরা ভাঁজযোগ্য ফোনগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাপলের এটি প্রথম প্রচেষ্টা।

আইওএস ২৬ ছাড়াও অ্যাপল প্রায় নিশ্চিতভাবেই একই সময়ে ম্যাকওএস ২৬, আইপ্যাড ২৬, ওয়াচওএস ২৬, টিভিওএস ২৬-এর জন্য পাবলিক বিটা ও হোমপ্যাডের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আপডেট প্রকাশ করবে।

আইওএস ২৬ আপগ্রেডটি লিকুইড গ্লাসের নতুন নকশার পাশাপাশি স্প্যাম কল থেকে বর্ধিত সুরক্ষা, নতুন গেমস অ্যাপ, অ্যাপল ইন্টেলিজেন্সের আপডেট ও আরো অনেক কিছুর আমূল পরিবর্তন ও নতুন অনুভূতি নিয়ে আসবে।

সূত্র : টেক রাডার

মন্তব্য

প্রথমবারের মতো এআই দিয়ে তৈরি দৃশ্য ব্যবহার করল নেটফ্লিক্স

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রথমবারের মতো এআই দিয়ে তৈরি দৃশ্য ব্যবহার করল নেটফ্লিক্স
ফাইল ছবি : এএফপি

নেটফ্লিক্স তাদের টেলিভিশন শোতে প্রথমবারের মতো উৎপাদনক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) তৈরি ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ব্যবহার করেছে।

স্ট্রিমিং জায়ান্টটির সহ-প্রধান নির্বাহী টেড সারান্দোস বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার বিজ্ঞান কল্পকাহিনি শো ‘দি এটারনাউট’ একটি ভবন ধসের দৃশ্য তৈরি করতে প্রম্পটের ওপর ভিত্তি করে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রযুক্তি প্রযোজনা দলকে দ্রুত ও কম খরচে দৃশ্য সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে।’

অন্যদের কাজ ব্যবহার করে তাদের সম্মতি ছাড়াই কনটেন্ট তৈরি করায় ও মানুষের কাজ প্রতিস্থাপন করার আশঙ্কায় বিনোদন শিল্পে উৎপাদনক্ষম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেশ বিতর্কিত।

 

সারান্দোস এমন একটি সময়ে এ মন্তব্য করলেন যখন, জুন মাসের শেষ পর্যন্ত তিন মাসে নেটফ্লিক্সের আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মুনাফা ২.১ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩.১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

‘দি এটারনাউটে’ ব্যবহৃত জেনারেটিভ এআই প্রযোজনা দলকে বুয়েনস এইরেসে ভবনধসের একটি দৃশ্য স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুত সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছে সারান্দোস।

সারান্দোস বলেন, ‘এটি আসলে পর্দায় প্রদর্শিত নেটফ্লিক্সের একটি অরিজিনাল সিরিজ বা ছবিতে প্রথম এআই তৈরি দৃশ্য।

তাই নির্মাতারা এর ফলাফলে রোমাঞ্চিত।’

২০২৩ সালে হলিউড ধর্মঘটের সময় উত্থাপিত প্রধান উদ্বেগগুলোর মধ্যে এআই ছিল অন্যতম। তিন মাসের ওই ওয়াকআউটের সময় স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড-আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্টস ইউনিয়ন এআই ব্যবহারের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছিল।

চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই এআইকে শিল্পের জন্য অবমাননাকর বলে অভিহিত করেছেন।

সিঙ্গাপুর অ্যানিমেশন স্টুডিও ক্রেভএফএক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেভিয়ার ইউন বলেছেন, ‘নেটফ্লিক্সের এআই গ্রহণ কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়, কারণ অন্য বড় স্টুডিওগুলোও প্রযুক্তিটিকে স্বাগত জানাচ্ছে। এটা সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। এআই অবশ্যই ছোট স্টুডিওগুলোকে বড় বাজেটের ভিজ্যুয়াল তৈরির সুযোগ করে দেওয়ার দরজা খুলে দিচ্ছে। তবে অবশেষে এআই নয়, শিল্পীই সিদ্ধান্ত নেন চূড়ান্ত ছবিতে কী থাকবে।’

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ