<p><em>কিংবদন্তি অভিনেতা বুলবুল আহমেদের কন্যা তাজরিন ফারহানা ঐন্দ্রিলা। নিজেও অভিনেত্রী, করেন উপস্থাপনা ও গান। এবার বাবাকে নিয়ে নির্মাণ করতে যাচ্ছেন চলচ্চিত্র। বলেছেন বিস্তারিত। </em></p> <p><strong>বাবাকে নিয়ে ঐন্দ্রিলার পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি</strong></p> <p>৪ সেপ্টেম্বর ছিল ‘মহানায়ক’ বুলবুল আহমেদের জন্মদিন। সেদিনই তাঁর মেয়ে তাজরিন ফারহানা ঐন্দ্রিলা জানালেন, বাবাকে নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। এর আগে তিনি বুলবুল আহমেদকে নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। ‘বুলবুল’ গবেষক হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এবার বড় পরিসরে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে চান বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্মের ওপর পড়াশোনা করেছি। ভালো রেজাল্টও এসেছে।</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আমাকে শিক্ষকতা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। তবে বিভিন্ন কারণে রাজি হতে পারিনি। মূলত আমার পড়াশোনা ছিল মার্কেটিং বিষয়ে। শুধু বাবাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করব বলে পরবর্তী সময়ে ফিল্মে ভর্তি হয়েছিলাম। এখন নিজেকে উপযুক্ত মনে করছি, তাই ঘোষণা দিয়েছি চলচ্চিত্রটির।’ ঐন্দ্রিলা আরো যোগ করেন, ‘বাবাকে ছোটবেলা থেকেই কাছ থেকে দেখেছি। তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন শুটিংয়েও গিয়েছি। তিনি শুটিং স্পটে কেমন, সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর চলাফেরা—সবই আমার স্পষ্ট মনে আছে। তাই বিশ্বাস, বাবাকে বড় পর্দায় নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করতে পারব। বুলবুলভক্তদের দারুণ একটি চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারব।’</p> <p>ঐন্দ্রিলা এরই মধ্যে পান্ডুলিপির কাজ শুরু করেছেন। খুব শিগগির তৈরি করবেন চিত্রনাট্য। ষাট, সত্তর ও আশির দশকের চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানালেন। নানা তথ্য সংগ্রহ করবেন তাঁদের কাছ থেকে। সরকারি অনুদানের জন্যও পান্ডুলিপিটি জমা দেবেন। সেটা পেলে তো কথা নেই! আর না পেলে প্রযোজক খুঁজতে হবে। তিনি বলেন, ‘বড় পরিসরেই চলচ্চিত্রটি করব। অনেক টাকা দরকার। আমার একার পক্ষে সেটা বহন করা সম্ভব নয়। সরকারি অনুদান না পেলে বিভিন্ন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করব। আশা করছি, ফান্ড জোগাড় হয়ে যাবে।’</p> <p>ঐন্দ্রিলা জানালেন, আগামী বছরের মাঝামাঝি শুটিং শুরু করতে চান। তার আগে পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করবেন। নতুনদের নিয়েই কাজটি করার ইচ্ছা তাঁর।</p> <p> </p> <p><strong>উপস্থাপনায় নিয়মিত</strong></p> <p>মাত্র দেড় বছর বয়সে ঐন্দ্রিলা ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। অভিনয় করেছেন দর্শকনন্দিত অনেক নাটকে। ‘রূপনগর’, ‘মোহর আলী’, ‘জীবন কাহিনী’, ‘শেষ থেকে শুরু’, ‘অভিমানে অনুভবে’—প্রতিটি নাটকই নব্বইয়ের দশকের দর্শকদের মনে গেঁথে আছে। শেষবার অপূর্বর সঙ্গে ‘সাংসারিক ভালোবাসা’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। এরপর অভিনয় থেকে দূরে আছেন। একটা সময় গান গাইলেও সেখানেও এখন অনিয়মিত। শুধু উপস্থাপনায় নিয়মিত পাওয়া যায় ঐন্দ্রিলাকে। চার বছর ধরে বাংলাভিশনে ‘আমাদের রান্নাঘর’ উপস্থাপনা করছেন তিনি। বলেন, ‘রান্নাবান্নার প্রতি আমার আলাদা একটা প্যাশন কাজ করে। দর্শকও আমাকে এ ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় দেখতে পছন্দ করে। দেশের প্রায় প্রতিটি চ্যানেলেই রান্নার অনুষ্ঠান করেছি।’</p> <p>আজকাল প্রায়ই অভিনয়ের প্রস্তাব পাচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। তবে ব্যাটে-বলে মিলছে না বলে জানালেন। বলেন, ‘ওয়েব ছবি বা ওয়েব সিরিজ, এমনকি একক নাটকেও নিয়মিত প্রস্তাব পাই। কিন্তু নাম, গল্প, প্রোডাকশন—কিছুই মনের মতো হচ্ছে না। দর্শক আমাকে যেসব নাটকে দেখেছেন, আমাকে মনে রেখেছেন, এখন এসে তো সস্তা কিছু করতে পারি না। তবে অপেক্ষায় আছি, আশা করছি, ভালো পান্ডুলিপি, নির্মাতা পাব।’</p> <p> </p> <p><strong>নির্মাতাদের প্রতি অনুরোধ</strong></p> <p>ঐন্দ্রিলার বেড়ে ওঠা রুপালি জগতের দেশে। ছোটবেলা থেকেই সিনেমার পোকা মাথায়। সেটা এখনো নামেনি। সময় পেলেই চলে যান স্টার সিনেপ্লেক্স বা ব্লকবাস্টারে। গত ঈদেও ‘তুফান’ দেখেছেন। দেখেছেন ওয়েব সিরিজ ‘মহানগর ২’। আশফাক নিপুণ বরাবরই তাঁর প্রিয় নির্মাতাদের একজন। শাকিবও প্রিয় তারকা। বলেন, ‘নিপুণের প্রতিটি কাজই আমি দেখি। অন্যদিকে শাকিবের ছবি না দেখে কি উপায় আছে! সে নিজেকে দিন দিন যেভাবে গড়ে তুলেছে, পরিবর্তন এনেছে অভিনয়ে—আমি কেন, দর্শকও মুগ্ধ। আমি কিন্তু এখনকার নাটকও দেখি। তবে যে নাটকগুলো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চর্চা বেশি হয়, সেগুলো খুঁজে খুঁজে দেখি। নাটকের নির্মাতাদের কাছে অনুরোধ, প্লিজ, গল্প ও নামের ক্ষেত্রে আরো বেশি নজর দেবেন।’</p> <p> </p>