<p>পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় চলছে প্রতিবাদ। সেই প্রতিবাদে রাজপথে নেমে অংশ নিলেন অভিনেতা পরমব্রতের স্ত্রী ও কণ্ঠশিল্পী পিয়া চক্রবর্তী। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ-প্রতিবাদে ফুঁসছে কলকাতা। বিভিন্ন হাসপাতালে চলছে কনিষ্ঠ ও আবাসিক চিকিৎসকদের কর্মবিরতি। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে অন্যান্য রাজ্যেও।</p> <p>এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাল কলকাতার রাজপথে নেমেছিলেন নারীরাও। এই দলে শামিল হয়েছিলেন পিয়া। দাবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আমাদের দাবি যথাযথ তদন্তের মধ্য দিয়ে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধর্ষণ ও খুনে জড়িত প্রতিটি নাম সামনে আনতে হবে, সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং এই সূত্রে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের যে বিভিন্ন যোগসাজশগুলো সামনে আসছে, সেগুলোর মুখোশ খুলে দিতে হবে এবং তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।</p> <p>মৈত্রীর পক্ষ থেকে দাবি, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, অবিলম্বে নিয়ম মেনে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির প্রত্যেক সদস্যদের নাম ও ফোন নম্বর পাবলিক করতে হবে। সেই মর্মে আর জি কর হাসপাতালের মধ্যে পোস্টার সাঁটাতে হবে।</p> <p>পিয়া যে প্ল্যাকার্ড বহন করছিলেন, তাতে লেখা- নারী শরীর যুদ্ধক্ষেত্র নয়। গতকাল কলকাতায় নাগরিক সমাজের ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে আরো অংশ নেন অভিনেতা কৌশিক সেন, ঋদ্ধি সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, চৈতী ঘোষালসহ বিশিষ্টজনরা।</p> <p>আন্দোলনকারীদের দাবি, ওই হত্যাকাণ্ড একজনকে দিয়ে সম্ভব নয়। এর পেছনে যারাই আছে, সবাইকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। যত দিন অপরাধীদের ধরা না হচ্ছে, তত দিন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলবে।</p> <p>কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছেন আর জি করসহ কলকাতার এনআরএস, পিজি, কলকাতা মেডিক্যাল, বাঙ্গুর হাসপাতালসহ রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।</p> <p>বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দিল্লির এইমস হাসপাতাল, মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজ, লেডি হারডিং মেডিক্যাল কলেজ, সফদার জং হাসপাতাল, দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতাল, বাবা সাহেব আম্বেদকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের এইমস, মুম্বাই ও কর্ণাটকের বিভিন্ন হাসপাতালে। এসব হাসপাতালেও চলছে কর্মবিরতি। চিকিৎসকদের মুখে একটিই স্লোগান, ‘নো সেফটি, নো ডিউটি’।</p> <p>চলমান আন্দোলন-ক্ষোভের সূত্রপাত গত শুক্রবার ভোরে। আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় দায়িত্ব পালন শেষে বিশ্রাম নেওয়া এক পোস্টগ্র্যাজুয়েট পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া নিয়ে। সেদিন থেকেই জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা ওই নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগ তুলে সোচ্চার হন। ডাক দেন কর্মবিরতির। দাবি তোলেন হত্যাকারীদের শাস্তির।</p> <p>পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সোদপুরে থাকতেন ওই নারী চিকিৎসক। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ওই চিকিৎসক এমবিবিএস শেষে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে পোস্টগ্র্যাজুয়েট করছিলেন। ছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেইনি চিকিৎসক হিসেবে হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। দিবাগত রাত ২টায় আরো চারজন চিকিৎসক বন্ধুর সঙ্গে তিনি নৈশভোজ সারেন। এরপর চারতলার একটি কক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। পরদিন সকালে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ম্যাট্রেসে অর্ধনগ্ন অবস্থায় মৃতদেহ পড়ে ছিল।</p>