<p style="margin-bottom:13px">গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় না-ফেরার দেশে চলে গেছেন চাইম ব্যান্ডের ভোকাল সংগীতশিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহ। আজ দুপুরের পর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে দাফন করা হয় তাঁকে। খালিদের শেষ ঠিকানা হয়েছে মা-বাবার পাশের কবর।</p> <p>আজ ভোর নাগাদ তাঁর লাশ নেওয়া হয় গ্রামে। সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যর। ছুটে আসেন তাঁর পুরনো বন্ধুরা। স্কুলের বন্ধুদের পাশাপাশি নানা সাংগঠনিক বন্ধুরাও আসেন তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে। তাঁদেরই একজন গোপালগঞ্জ জেলা উদীচী সভাপতি নাজমুল ইসলাম। তিনি  সংগীতশিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহর সহপাঠী ও বন্ধু। পুরনো স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘খালিদ সাইফুল্লাহ  আর আমি একসঙ্গে এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছি। গানবাজনা যেখানে, ও সেখানে থাকত।  শুধু খালিদই নয়, ওদের পুরো পরিবারই একটা সাংস্কৃতিক পরিবার ছিল। ওরা তিন ভাই। বড় ভাই ড. মহিউদ্দিন ফারুক বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী অ্যাসোসিয়েশনের (বেলা) প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মেজো ভাই মেজবাহ উদ্দিন হাসান ছিলেন ব্যবসায়ী। আর খালিদ সাইফুল্লাহ ভাইদের মধ্যে ছোট। আমরা যখন ছোট তখন গোপালগঞ্জ ছিল মহকুমা। মহকুমার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এই পরিবারের কেউ না কেউ সম্পৃক্ত থাকত। খালিদ তাদের মধ্যে অন্যতম। স্কুলে লেখাপড়ার ফাঁকে সে খালি গলায় গান গাইত। আমরা যারা বন্ধু ছিলাম এর মধ্যে খালিদ, বাদল, আমি নাজমুল, বুলবুল<span lang="DA" style="font-size:12.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">―</span></span>আমরা চারজন একসঙ্গে ক্লাসের প্রথম বেঞ্চে বসতাম। এক দিনের একটা ঘটনা মনে পড়ে, আমরা তখন নবম শ্রেণির ছাত্র। খালিদকে গান গাইতে বললাম। বলতে না বলতে ও গান ধরে বসল। গান শুনে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা ছুটে আসেন। তখন আমাদের ক্লাসের সবাইকে প্রধান শিক্ষক বেত্রাঘাত করেছিলেন।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করে খালিদ ঢাকায় চলে যায়। এরপর একসঙ্গে কম মেশা হয়েছে। গোপালগঞ্জে এলে আড্ডা হতো। অন্য যে বন্ধুরা ছিল তারা সবাই এক হয়ে গানের আসর বসাতাম। ভালোই ছিল সে সময়ের দিনগুলো। আবার আমি যখন ঢাকা যেতাম, তখন সন্ধ্যার পর বা বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, বিশেষ করে টিএসসিতে আড্ডা হতো।’ </p> <p>আরেক বন্ধু এস্কেন্দার আলী বলেন, ‘খালিদের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক ছিল। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে লেখাপড়া করেছি। স্কুল-কলেজ একসঙ্গে যেতাম। গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ সংসদ নির্বাচনে খালিদ ছাত্রলীগ থেকে আর আমি ছাত্র ইউনিয়ন থেকে নির্বাচন করেছিলাম। দুজনই আলাদা আলাদা পোস্টে বিজয়ী হই। এমন সম্পর্ক ছিল যে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা বা ভোট চাওয়ার মতো কাজ একসঙ্গে করেছি। এরপর ও ঢাকায় যায়, আর আমি গোপালগঞ্জেই থেকে যাই। দূরে থাকার কারণে আমাদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। তবে অন্তরের টানে ফোনে কথাবার্তা হতো। এ ছাড়া বন্ধুদের মধ্যে খালিদের জনপ্রিয়তা একটু বেশি ছিল। সারা গোপালগঞ্জের মানুষ ওকে ভালো জানত। কোনো অনুষ্ঠান হলে খালিদ সেখানে গান গাইত আর লোকে লোকারণ্য হতো। গোপালগঞ্জের শ্রেষ্ঠ শিল্পী হিসেবে খ্যাতি ছিল তার।’</p>