<p style="margin-bottom:13px">দেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক মান্না। তার পুরো নাম আসলাম তালুকদার। তবে তিনি মান্না নামেই পরিচিতি পেয়েছেন ভক্তদের কাছে। জীবিত থাকতে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য সুপারহিট ছবি। তাকে বলা হয়ে থাকে গণমানুষের নায়ক। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন শাবনূর, পূর্ণিমা, মৌসুমী, পপি থেকে প্রথম সারির অনেক নায়িকা।</p> <p>কিন্তু ২০০৮ সালের আজকের দিনে বিদায় নিয়েছেন এই নায়ক। তার মৃত্যুর চেয়ে ওই সময় আর কোনো আকস্মিক খবর ছিল না ভক্তদের কাছে। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে, যখন ক্যারিয়ারের গ্রাফ তুঙ্গে, তখন তার এমন বিদায় কাম্য ছিল না কারো। ধারণা করা হয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা। তবে তার মৃত্য নিয়েও আছে নানা জল্পনাকল্পনা।</p> <p>তবে মান্নার মৃত্যুর ১৬ বছর পার হলেও তার জনপ্রিয়তার এতটুকুও কমেনি। এখনো শ্রদ্ধাভরে তাকে স্মরণ করেন ভক্তরা। আজও অভিনেতার সিনেমাগুলো দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে। বলে রাখা ভালো, ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল মান্নার। ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই প্রতিযোগিতার সূত্র ধরেই রুপালি জগতে পা রাখেন মান্না। এ সময় ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন তিনি।</p> <p>মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলি’। তবে ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের নজরে আসেন মান্না। এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন মান্না। কাজী হায়াত নির্মিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের ভরসার নাম। মোস্তফা আনোয়ার নির্মিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ সিনেমাগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে মান্নাকে। ১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় এ সুপারস্টার।</p> <p>তবে শুধু অভিনেতা হিসেবেই নিজের বিস্তার থামিয়ে রাখেননি। নাম লেখান প্রযোজক হিসেবেও। গড়ে তোলেন কৃতাঞ্জলি নামে একটি প্রযোজনা সংস্থাও। তার প্রযোজনা করা সিনেমাগুলো হচ্ছে— ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা মাতার আমানত’।</p> <p>সিনেমায় অবদানের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।</p> <p>১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন মান্না। ব্যক্তিগত জীবনে শেলী কাদেরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এই দম্পতির সিয়াম ইলতিমাস মান্না নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে। মৃত্যুর পর তাকে দাফন করা হয় তার জন্মস্থান কালিহাতীতেই। সেখানেই প্রতিবছর অসংখ্য ভক্ত তাকে স্মরণ করেন।</p>