<p>মুক্তি পেয়েছে প্রত্যাশিত চলচ্চিত্র ‘দ্য আর্চিস।’ বলিউডের প্রভাবশালী তারকাদের সন্তানেরা প্রথমবারের মতো পর্দায় হাজির হয়েছেন সিনেমাটির মাধ্যমে। তাই মুক্তির আগে থেকেই বেশ আলোচনায় ছিল ‘দ্য আর্চিস।’ আমেরিকান ‘আর্চি’ কমিক্স থেকে অনুপ্রানিত হয়ে নির্মিত জোয়া আখতারের এই সিনেমা। নেটফ্লিক্সে সদ্য রিলিজ হয়েছে ‘দ্য আর্চিস।’ জোয়া আখতার গল্পে নিয়ে এসেছেন বন্ধুত্ব, পরিবেশ বাঁচানোর লড়াই এবং এই জাতীয় কিছু বিষয়। বহুতল শপিংমল ও যান্ত্রিকতায় ভরে যাওয়া শহর যখন দমবন্ধ অবস্থায় নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই তরতাজা হওয়ার গল্প ‘দ্য আর্চিস’ নিয়ে এসেছে জোয়া আখতার। </p> <p>আর্চিসের ট্রেলার রিলিজের পর থেকেই অনেক আলোচনা এবং সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে এই সিনেমা সংশ্লিষ্টদের। সমালোচনার পিছনে মূল কারণ ছিলো মাত্র একটা শব্দ, ‘নেপোটিজম!’ বলিউডে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর এই বিষয়টা নিয়ে সেই যে সমালোচনা শুরু হয়েছিলো সেটা এখনো চলে আসছে। এই সিনেমায় অভিনয় করেছে এক ঝাঁক তরুণ মুখ। অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগ্যস্ত নন্দা, গৌরি খান ও শাহরুখ খানের মেয়ে সুহানা, প্রয়াত অভিনেত্রী শ্রীদেবী ও বলিউডের বিখ্যাত প্রযোজক বনি কাপুরের ছোট মেয়ে খুশি কাপুর এবং প্রয়াত সংগীতশিল্পী অমিত সায়গলের কন্যা অদিতির পাশাপাশি আরও কিছু নতুন মুখ। এখন নিশ্চয় বুঝতে পারছেন সমালোচনার মূল কারণ! </p> <p>যদিও নেপোকিড অভিনয় করলেই যে সিনেমা খারাপ হবে এমন ভাবনা হয়ত সবসময় সত্যি নাও হতে পারে। তবে ‘দ্য আর্চিস’ কি আদৌ ব্যতিক্রম কিছু হতে পেরেছে? জোয়া আখতার কি সমালোচকদের সিনেমা দিয়ে বশে আনতে পেরেছে! </p> <figure class="image"><img alt="1" height="315" src="https://s01.sgp1.cdn.digitaloceanspaces.com/article/174367-hdayjhufiy-1652547653.jpeg" width="600" /> <figcaption><sub><em>‘দ্য আর্চিস’-এ সুহানা খান, অদিতি সাইগাল ও খুশি কাপুর</em></sub></figcaption> </figure> <p>‘দ্য আর্চিস’ ভারতীয় সিনেমা হলেও এর এক্সিকিউশন করা হয়েছে পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন সিনেমার মতো। ওয়েস অ্যান্ডারসন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দৃশ্যায়ন করা হয়েছে এমন মনে হতে পারে দর্শকদের। ওয়েস্টার্ন মিউজিক্যাল সিনেমা যেমন হয় ঠিক তেমন ট্রিটমেন্টে নির্মিত ‘দ্য আর্চিস।’</p> <p>সিনেমার গল্পে দেখা যায়, ষাটের দশকের ভারতের দৃশ্য। উত্তর ভারতের পাহাড়ি ছোট্ট শহর রিভারডেল। ১৯১৪ সালে জনাব রিভারডেল এই শহরটি তৈরি করেন। পরে এটি হয়ে ওঠে অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের শহর। শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি পার্কের সঙ্গে শহরের সকলের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। কারণ, শহরের প্রতিটি শিশুর বয়স ৫ বছর হলেই, তাদের প্রত্যেকে একটি করে গাছ বপন করে এই পার্কে। সকলে নয়, বেশির ভাগের। একটা সময় আবেগে পরিপূর্ণ এই পার্কটিকে কেড়ে নিয়ে হোটেল বানাতে চায় এক ব্যবসায়ী। ভেরোনিকা লজের বাবা। আর্চি, ভেরোনিকা, রেগি, বেটি, জাগহেট এবং শহরের বাকিরা কি পারবে নিজেদের পার্ককে বাঁচাতে? তা জানতে দেখতে হবে ‘দ্য আর্চিস।’</p> <p>জোয়া আখতার নামটা বলিউডের পরিচিত এক নাম। দারুণ দারুণ সব সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে তার অন্য সিনেমাগুলোর সাথে তুলনা করতে গেলে ‘দ্য আর্চিস’ অনেকটাই পিছিয়ে থাকবে। তার কারণ, সিনেমায় অভিনয় যারা করেছে তারা বেশীরভাগই নবাগত যে কারণে সিনেমার গল্পকে তারা চরিত্র দিয়ে পুরোপুরিভাবে ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে সুহানা খান, খুশি কাপুর এবং অগ্যস্ত নন্দা বেশ দূর্বল ছিলো। তবে মিহির আহুজা, বেদাঙ্গ রায়না এবং অদিতি অন্যদের তুলনায় অনেকটা সাবলীল ছিল।</p> <p>আগেই বলেছিলাম এই সিনেমা অনেকটাই ওয়েস্টার্ন ধারায় নির্মিত। যে কারণে এই গল্পটার সাথে ভারতীয় দর্শকরা সহজে নিজেদের মেলাতে পারবে না। গতানুগতিক বলিউড সিনেমার থেকে অনেকটাই ভিন্ন ‘দ্য আর্চিস।’</p> <p>সিনেমার সবচেয়ে পজিটিভ দিক হচ্ছে এর লোকেশন। সিনেমায় দুর্দান্ত সব লোকেশন রয়েছে। সিনেমাটোগ্রাফিও বেশ ভালো করেছে। সিনেমার গানগুলো সিনেমার প্রাণ; পাশাপাশি আবহ সঙ্গীতও খুব ভালো হয়েছে বলা চলে। জোয়া আখতারের নির্মাণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না তবে নতুনদের অভিনয়ের জন্য সিনেমাটা সমালোচনার মুখোমুখি হতে পারে দর্শক সমালোচকদের কাছে। </p> <p>পরিশেষে বলতে চাই, ‘দ্য আর্চিস’ আধা রান্না করা মোটামুটি খাবারের মতো। যেখানে মশলা ঠিকঠাক দেওয়া হয়েছিলো কিন্তু একটা ভুলের কারণে শেষমেশ রান্নাটা জমল না।<br /> এখানে অভিনয় করা প্রায় সবাই নবাগত। সামনে তাদের জন্য একটা লম্বা পথ রয়েছে। প্রথম এই সিনেমা থেকে তারা তাদের ভুলগুলো আমলে নিয়ে ভবিষ্যতে শুধরে নিলে ভালো কিছু করতে পারবে। তবে দর্শকরা ভিন্ন আর নতুন কিছু পরখ করতে চাইলে একবার দেখে নিতে পারেন ‘দ্য আর্চিস।’</p>