<p>১৯৩৫ সালে সৌদি আরবের বাদশাহ ইবনে সৌদ ফিলিস্তিন ভ্রমণে যান। এই ভ্রমণ নিয়ে ইব্রাহিম হাসান সেরহান একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন, এটিই ফিলিস্তিনের প্রথম চলচ্চিত্র। ১৯৪৫ সালে এই নির্মাতা আরব ফিল্ম কম্পানি নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সে বছরই পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি ‘হলিডে ইভ’ নির্মাণ করেন।</p> <p>পরের ছবি ‘আ স্টোর্ম অ্যাট হোম’ নির্মাণের সময় থেকেই ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য পরিবর্তন হতে থাকে।  ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে বোমা বর্ষণে সেই ছবির রিল হারিয়ে ফেলেন। জাফফা শহর ছেড়ে পালিয়ে জর্দান চলে যান সেরহান। ১৯৪৮ সালের পর দুই দশকের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ফিলিস্তিনিদের সিনেমা তৈরির প্রচেষ্টা।</p> <p>তবে নির্মাতা সেরহান জর্দানে গিয়েও বসে থাকেননি, দেশটির প্রথম সিনেমা ‘দ্য স্ট্রাগল ইন জারাশ’ [১৯৫৭] নির্মাণ করেন তিনিই। সে দেশেই ১৯৬৪ সালে ফিলিস্তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে নির্মাণ করেন ‘মাই হোমল্যান্ড, মাই লাভ’।</p> <p>মধ্য ষাটের দশকে ফিলিস্তিনি সিনেমা নতুন দিশা খুঁজে পায়। ফাতাহ, পিএফএলপি, ডিএফএলপি-এর মতো সংগঠনগুলো চলচ্চিত্রের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।</p> <p>এই সময়ে ৬০টির বেশি ছবি নির্মিত হয়, বেশির ভাগই তথ্যচিত্র। ১৯৭৩ সালে ইরাকের বাগদাদে ফিলিস্তিনি ছবির একটি উৎসব হয়। ১৯৭৬ ও ১৯৮০ সালে হয় আরো দুটি উৎসব। মোস্তফা আবু আলি ফিলিস্তিনি পরিচালক, যিনি বৈরুতে ১৯৭৩ সালে প্যালেস্টাইন সিনেমা অ্যাসোসিয়েশন তৈরিতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য ফিচার ফিল্ম ‘রিটার্ন টু হাইফা’। এর গল্প নেওয়া হয় পিএফএলপি নেতা ও লেখক ঘাসসান কানাফানির উপন্যাস থেকে।</p> <p>১৯৯৬ সালে এলিয়া সুলেমান পরিচালিত ‘ক্রনিকল অব আ ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ ছবিটি আন্তর্জাতিক সমালোচকদের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এটি প্রথম ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায়। সিয়াটল ও ভেনিসের মতো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয়। এই সময়ে মিশেল খলিফি, রশিদ মাশরাউই, আলী নাসারের মতো নির্মাতারা বিশ্বদরবারে প্রশংসিত হন। </p> <p>২০১০ সালে চিত্র ফের বদলে যায়। গাজার দায়িত্ব নেয় হামাস। এরপর সেখানে নির্মিত ছবিগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ‘সামথিং সুইট’ ছবির চার সেকেন্ডের একটি দৃশ্যের জন্য ছবিটি ফিলিস্তিনে নিষিদ্ধ হয়। যেখানে এক নারীর চুল খোলা দেখানো হয়। এভাবেই চলছিল ফিলিস্তিনির চলচ্চিত্র।</p>