গ্ল্যামার দুনিয়া শুধু আর্থিক সচ্ছল পরিবারের ছেলে-মেয়েদের জন্যই। এমন ধারণা ভেঙে দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মান্যা সিং। পেশায় অটোচালক বাবার মেয়ে মান্যা জিতে নিয়েছেন ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া রানার আপ-এর মুকুট। শিখিয়েছেন- সমস্ত প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে স্বপ্ন পূরণ করতে শুধু জেদ আর স্বপ্ন দেখাটাই প্রয়োজন।
মিস ইন্ডিয়ার রানার আপের খেতাব জেতার পর মঙ্গলবার মান্যাকে সংবর্ধনা দিল মুম্বাইয়ের 'ঠাকুর কলেজ অ্যান্ড সায়েন্স অ্যান্ড কমার্স'। মান্যা এই কলেজেরই ছাত্রী। মঙ্গলবার সেখানেই পৌঁছেছিলেন তিনি। তবে কোনো দামি গাড়িতে নয়, বাবার অটোতে চড়েই সেখানে পৌঁছেন 'ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া রানার আপ'। সঙ্গে ছিলেন মান্যা সিংয়ের মা। কলেজে ঢোকার আগে মা মনোরমা সিংয়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখা গেল তাঁকে। এদিন মেয়ের সাফল্যে চোখে জল এসে যায় মান্যার বাবা ওমপ্রকাশ সিংয়ের। বাবার চোখে জল মুছিয়ে দিতে দেখা গেল মেয়েকে।
বর্তমানে মুম্বাইয়ে থাকলেও মান্যা সিংয়ের আদিবাড়ি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে। ছোট থেকেই দারিদ্র্যের মোকাবেলা করতে হয়েছে মান্যাকে। এমন সময়ও গিয়েছে, যখন তাঁকে খালি পেটেই শুয়ে পড়তে হয়েছে।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি ১৪ বছর বয়স থেকেই কাজ করতে শুরু করি। প্রথমে পিৎজার দোকানে কাজ করতাম। এমনকি লোকের বাড়িতে বাসনও মেজেছি। এমনও দিন গিয়েছে, যখন আমাকে অন্যের জুতা পরিষ্কার করতে হয়েছে। পরে কলেজে স্নাতক স্তরে পড়ার সময় কল-সেন্টারে কাজ করে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি।
প্রসংগত মান্যার এক ভাই আছে। সে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
অভাবের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো মান্যার বাবাকে। ফলে মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে তিনি পারেননি। ফলে তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ঠিকভাবে স্কুলে যেতে পারেননি মান্যা।
তিনি বলেন, আমার বাবা-মা স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে যাতে আমাকে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁরা শুধু আমার পরীক্ষার খরচটুকুই জোগাড় করতে পেরেছিলেন। কিন্তু, স্কুলের ফি দিতে পারেননি। এভাবেই দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়েছিলেন মান্যা। পরে কলেজে উঠলে তাঁর পড়ার খরচ তুলতে মায়ের রুপার নূপুর বিক্রি করতে হয়েছিল। জি-নিউজ।
মন্তব্য