বাবা সাবেক বিচারপতি মেয়ে নায়িকা, মা পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভিক্ষা করছেন। ধানমন্ডিতে ওই অবস্থায় নারীর ভিডিও করে ফেসবুকে ছাড়েন মজার টিভি নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের সত্ত্বাধিকারী মাহসান স্বপ্ন। এরপরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওর ওই নারীর নাম তুহিন সুলতানা তপু।
জানা যায়, ওই নারীর বাবা আসলেই একজন সাবেক বিচারপতি। এবং টেলিভিশনের মডেল। তবে এই ভিডিও প্রকাশে ক্ষিপ্ত হয়েছেন বিচারপত বাবা। তাঁর দাবি মেয়ে বেপরোয়া জীবন যাপন করছেন। এই ভিডিও, ভিক্ষা করা এসব উদ্দশ্যপ্রণোদিত এবং পরিবারকে অপমান করার জন্যই করছেন তপু।
সাবেক বিচারপতি মো. শামসুল হুদা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মেয়ে তুহিন সুলতানা তপুর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। শাহাবাগ থানা থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে, জিডিতে বলা হয়, তাঁর মেয়ে তুহিন সুলতানা স্বামীকে তালাক দিয়ে আরেকজনের সঙ্গে চলে গেছেন। তাই তাঁর সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগ নেই। মাঝে একদিন তুহিন সুলতান বিচারপতির বাসায় এসে স্বর্ণালংকার নিয়ে যান। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। শামসুল হুদার স্ত্রীর নামে নিবন্ধন করা মোবাইল সিম ব্যবহার করে মজার টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহসান স্বপ্নর সঙ্গে আঁতাত করে তিনি শামসুল হুদার মানহানি করেছেন। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে প্রয়োজনে মামলা করবেন বলেও জিডিতে বলা হয়।
তবে মাহসান স্বপ্ন কালের কণ্ঠকে বলছেন, আমার কাজ ভিডিও করা। আমি দেখেশুনে বুঝেই ভিডিও করি। আমি ওই নারীর ভিডিও করেছি, তিনি পথে পথে ভিক্ষা করছিলেন। তার মেয়ে নায়িকা বলছেন তিনি। বাবা সাবেক বিচারপতি। আমি তো কারো নাম প্রকাশ করিনি। আমি ভিডিও না করলেও তিনি ভিক্ষা করতেন। শুনেছি জিডি করা হয়েছে। আমার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, আমি নাকি আঁতাত করেছি। এসব কথার কোনো যুক্তিই নেই। এই ভিডিও নিয়ে আমার কাছে অনবরত অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে হুমকি আসছে। আমি ভিডিও ডিলিট করে দিয়েছি।
মেজো মেয়ে তুহিনকে নিয়ে বিব্রত বিচারপতি মো. শামসুল হুদা একটি নিউজ পোর্টালকে বলেছেন, ‘ও (তুহিন) ছোটবেলা থেকেই লোভী। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাস করার কথা বললেও আসলে সে এসএসসিও পাস করতে পারেনি। আমি ওর বাবা হয়েও বলছি, ওরে তিনবার ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেওয়াইছি, তিনবারই ফেল করেছে। একটা ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু তার সঙ্গে সংসার টেকেনি। ও আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ওর সঙ্গে এখন যে মেয়েটি আছে তার বাবার নাম আব্দুস সামাদ লিটন। আর আমরা বিয়ে দিয়েছিলাম যার সঙ্গে সে এখন নিউজিল্যান্ডে থাকে। বিদেশে থাকলেও ওর সঙ্গে আমাদের এখনো যোগাযোগ আছে।’
বিচারপতি বাবা বলছেন, তুহিন প্রচণ্ড লোভী হওয়ায় বাসায় এলেই চুরি করত। সর্বশেষ এসে ১০টি মোবাইল চুরি করেছে। তুহিনের বেপরোয়া জীবনের তথ্য জানিয়ে সুমি বলেন, ‘সে তার প্রথম স্বামীকে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে যদিও তার বিয়ে হয়নি, তাকেও পিটিয়ে বের করে দিয়েছে। এখন তার সঙ্গে যে মেয়েটি আছে, তাকে নিয়ে ঘুরে ঘুরে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে।’
জানা গেছে, তুহিন এখন টাঙ্গাইলে অবস্থান করছে।
মন্তব্য