<p style="text-align:justify">শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ মহাষ্টমীতে ‘কুমারী পূজা’র আয়োজন। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠে এ পূজার আয়োজন করা হয়। দেশের বিভিন্ন মণ্ডপে আজ একই আয়োজন ছিল। কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করেন ভক্তরা। এবার কুমারী পূজায় ছিল ভক্তদের উপচেপড়া ভিড়। </p> <p style="text-align:justify">পূজার আয়োজকরা জানান, রামকৃষ্ণ মিশনে সকাল ৬টা ৫২ মিনিটে অষ্টমী পূজা শুরু ও ৭টা ৪১ মিনিটের মধ্যে সন্ধীপূজা শেষ হয়। আর সকাল সাড়ে ১০টায় কুমারী পূজা শুরু হয়ে দুপুর ১টায় শেষ হয়। এবারের মাতৃরূপী দেবী দুর্গার শাস্ত্রীয় নাম পূঞ্জিকা, আর জীবন্ত রূপের নাম সংহিতা ভট্টাচার্য। বয়স ৮ বছর। দুর্গাপূজার পঞ্চম তিথিতে তার জন্ম। তাকে ভোরে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। তারপর সাজিয়ে কপালে সিঁদুর, পায়ে আলতা ও হাতে ফুল দেওয়া হয়। পরে তাকে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে (১৬ উপাদান) দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। এ সময় চারদিকে শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বোল, উলুধ্বনি ও দেবী স্তুতিতে মুখর হয়ে ওঠে। পূজা চলাকালে ওই কুমারী ভক্তদের আশীর্বাদ করে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নিয়মিত অভিযানে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728642188-d792b8b490aef953d009f0fbd3211c80.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নিয়মিত অভিযানে কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/10/11/1434085" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">পূজার কার্যক্রম শেষে কুমারী মায়ের নাম জানান এবারের পূজার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বামী হরিপ্রেমানন্দ (স্বপন মহারাজ)। তিনি বলেন, ‘দেবীদুর্গাকে সম্মান জানাতেই অষ্টমীতে আয়োজন করা হয় কুমারী পূজার। ১৬টি উপকরণ দিয়ে  কুমারী পূজার আনুষ্ঠানিকতার সূত্রপাত। এর মাধ্যমে নারী জাতির প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল হবে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘আধুনিক পৃথিবীতে সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংকট নিরসন করে অগ্রগামী হতে হলে মাতৃজাতির প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। জগতের অনেক স্থানে নারীকে সম্মান দেওয়া হয় পত্নীরূপে বা সহকারিণীরূপে। কিন্তু নারীর সবচেয়ে মহিমময় রূপ তার মাতৃরূপ। তাই মহাষ্টমী তিথিতে আমরা জগতের সব মাতৃজাতিকে উদ্দেশ্য করে কুমারী মাতাকে প্রণাম জানাই। তার মাধ্যমে আদ্যাশক্তিকে আমাদের প্রণাম নিবেদন করি।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা শিগগিরই : উপদেষ্টা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728642125-d6d55a82f7452d28747769bddd786a39.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ঘোষণা শিগগিরই : উপদেষ্টা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/11/1434084" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">এদিকে কুমারী পূজা উপলক্ষে রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে এদিন ছিল হাজার অনুরাগীর ঢল। পূজামণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, কাঁসরঘণ্টা, শঙ্খের আওয়াজ আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হয় পুরো প্রাঙ্গণ। রাজধানীর নারিন্দা থেকে কুমারী পূজায় আসা তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অপর্ণা দেবনাথ বলেন, ‘কুমারী পূজায় কুমারী রূপে মা দুর্গার আরাধনা করা হয়। আমি প্রতিবছর কুমারী পূজায় আসি। এবারও বাবা-মায়ের সঙ্গে ভোরবেলা এসেছি।’</p> <p style="text-align:justify">রামকৃষ্ণ মন্দির ছাড়াও দেশের বিভিন্ন মণ্ডপ-মন্দিরে কুমারী পূজার আয়োজন ছিল। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই দেবী দর্শনে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সকালে অষ্টমী পূজার পুষ্পাঞ্জলি শুরু হলে ভিড় বাড়তে থাকে। ফুলে-ফলে ভরে যায় মন্দির চত্বর। বাহারি সজ্জায় সাজানো হয়েছে পুরো ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণ। পুরো মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ-আনসারসহ একাধিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকেশ্বরী ছাড়াও রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালীমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, শাঁখারীবাজার পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে নানা অনুষ্ঠানের কারণে সারা দিনই ভক্ত-দর্শনার্থীদের সমাগম ছিল। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সজল দত্তের অনুরোধে পূজামণ্ডপে ইসলামী গান, করা হলো বহিষ্কার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/11/1728639995-d6d55a82f7452d28747769bddd786a39.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সজল দত্তের অনুরোধে পূজামণ্ডপে ইসলামী গান, করা হলো বহিষ্কার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/11/1434079" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify"><strong>আগামীকাল মহানবমী </strong>: পঞ্জিকানুযায়ী আগামীকাল শনিবার মহানবমী পূজা। ওই দিন সকাল ৭টা ৪১ মিনিট পর মহানবমী আরম্ভ ও ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহানবমীর বিহিত পূজা শেষ হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেকের বিশ্বাস, মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার ক্ষণ। এই দিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেওয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এই দিনই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী নিশীথে উৎসবের রাত শেষ হয়। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। এসব বিবেচনা করে অনেকেই মনে করেন, নবমীর দিন আধ্যাত্মিকতার চেয়েও অনেক বেশি লোকায়ত ভাবনায় ভাবিত থাকে মন। </p> <p style="text-align:justify">আগামী রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এ বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।</p>