জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’ উপন্যাস অবলম্বনে নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রযোজনায় বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার হল রুমে এ নাটক মঞ্চস্থ হয়। প্রখ্যাত উপন্যাসিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধায়ের ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’ উপন্যাসের গল্পানুসারে নাটকের মূল নাট্যরূপ তৈরি করা হয়। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন উক্ত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুসরাত শারমিন তানিয়া।
এ নাটকে উঠে এসেছে লোকায়িত জগতের অতলে লুকিয়ে থাকা এক আদিম সমাজচিত্র। কোপাই নদীর বৃত্তাকার ধরনের বাঁক, নারীদের গলার অলংকার হাঁসুলীর অনুরূপ। সেই বাঁকে নিবিড় নিশ্ছিদ্র বাঁশবন, বেতবন। সূর্যের আলো সেখানে প্রবেশ করার মতো পথ পায় না। বাঁশবাদির কাহারদের বসবাস এখানে। লৌকিক দেবতা অপদেবতার নির্দেশে কাহারদের সমাজ পরিচালিত হয়। মানুষের সমস্ত আচরণকে এখানে নিয়ন্ত্রণ করে কুসংস্কার, লোকবিশ্বাস. রীতি, প্রথা, করণ-কারণ মতো কঠোর অনুশাসন। আঞ্চলিক পটভূমির জ্ঞান, ভূমি ব্যবস্থার এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সঠিক চিত্র অঙ্কন ইত্যাদি এই নাটকে ফুটে উঠেছে।
নাটকটি সম্পর্কে নির্দেশক নুসরাত শারমিন তানিয়া জানান, প্রান্তিক মানুষের জীবন সংগ্রামের ইতিহাস আমাদের কাছে নতুন হয়তো নয়। কিন্তু নতুন করে অনুভব করার অনুরণনের ইচ্ছা বহুকালের। শুধু শিল্পরস সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নয়, বরং জীবনকে আরো সূক্ষ্ম চোখে দেখার প্রত্যাশায়। প্রতি সন্ধ্যায় যে থিয়েটারের জন্ম হয় সে থিয়েটারে আমরা শিল্পরস অন্বেষণ করি নাকি জীবনরস, এই বহু প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথার’ এই সন্ধ্যায়।
মন্তব্য