<p>জামালপুরের মেলান্দহে রাতের আঁধারে ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে আসবাবপত্র পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দিবাগত (৬ ডিসেম্বর) রাতে মুন্সী নাংলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর পর থেকেই ঘরছাড়া হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।</p> <p>মেলান্দহ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনার সময় একজন আহত হয়ে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।</p> <p>অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রশিদ ও রসুল মিয়ার বাড়িতে হামলা করেন জাকির হোসেনের লোকজন। এ সময় রশিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে আহত করেন তারা। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও আসবাবপত্র পুকুরে ভাসিয়ে দেয় হামলাকারীরা। ১০ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।</p> <p>ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছে প্রতিপক্ষ জাকির হোসেনের লোকজনের সঙ্গে। সেই বিরোধের জেরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন জাকির হোসেনের লোকজন। এ সময় রশিদকে হত্যা করেন তারা। ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে জিনিসপত্রসহ সব কিছুই পুকুরে ফেলে দেন হামলাকারীরা। তার পর থেকে ঘরবাড়িছাড়া হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।</p> <p>আহত আব্দুর রশিদের বোন পারভীন আক্তার বলেন, ‘আমাদের কেনা জায়গায় দখলে যেতে দেয় না তারা। এর আগেও একবার গিয়েছিলাম, তখনো ঘরবাড়ি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। গত রাতে নতুন করে সাত-আটজন মিলে আবার সব ভেঙে দিয়েছে। এ সময় আমার ভাই বাধা দিতে গেলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করেন তারা। আমরা এখন বাড়িছাড়া। তারা হুমকি দিচ্ছে, বাড়িতে যে যাবে তাকেই মেরে ফেলবে।'</p> <p>ভুক্তভোগী রশিদের মা রওশনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মারার জন্য বাড়িতে হামলা করে। ঘরবাড়ির জিনিসপত্র সব কিছুই পুকুরে ফেলে দিয়েছে। রাত থেকে আমরা আর বাড়িতে যেতে পারিনি। রাস্তার পাশে বসে আছি। আমাদের কোনো খাওয়াদাওয়া নেই। ছেলের হাত কেটে দিয়েছে, সে এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।’</p> <p>স্থানীয়রা জানান, ‘রাত ১২টায় হঠাৎ ডাকচিৎকার শোনা যায়। এ সময় ভাঙচুরের শব্দও শোনা যায়। তবে ঘরবাড়ি কে বা কারা ভাঙচুর করছে তা দেখিনি। সকালে দেখি ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সকালবেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসেছিলেন। </p> <p>জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি ঢাকায় আছি, এ ঘটনায় আমি কিভাবে জড়িত! কবরস্থানের জমি দখল করার জন্য নিজেরাই এ ঘটনা করে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।'</p> <p>অভিযুক্তরা বলেন, কবরস্থানের জায়গা দখল করার জন্য তারা নিজেরাই রাতে নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। ভাঙচুর করে সমাজের লোকজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন তারা। নিজেরা নিজেরাই ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।</p> <p>মেলান্দহ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল হাসান হিমন বলেন, ‘রাতে একজন ব্যক্তি আহত অবস্থায় থানায় আসে। এরপর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’</p>