<p>‘কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ৮ বাস যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের (লোটাস কামাল) ঢাকার গুলশানের বাসায় পরিকল্পনার বৈঠক হয়েছিল। সেখানে লোটাস কামাল ছাড়াও সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে তারা দুজন গণভবনে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই নাশকতার পরিকল্পনা উপস্থাপন করলে তিনি সেটি বাস্তবায়নে সহযোগিতার দায়িত্ব দেন র‌্যাব-পুলিশকে।’ </p> <p>২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হরতাল-অবরোধ চলাকালে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে বাসের ৮ যাত্রীকে পেট্রল বোমা মেরে পুড়িয়ে হত্যার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এসব দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনিরুল হক চৌধুরী।</p> <p>মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা আদালতের আইনজীবী সমিতি ভবনের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব তথ্য জানান। </p> <p>সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ওই সময় আন্দোলন দমাতে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসানোর জন্য লোটাস কামাল ও মুজিবুল হকের পরিকল্পনায় এবং সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে র‌্যাব-পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বাসটিতে গানপাউডার দিয়ে নাশকতার এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আর ২০১৫ সালে পুলিশের করা দুই মামলার এজাহার ও পরবর্তীতে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণে আমার নাম না থাকলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও হয়রানির উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে সম্পূরক চার্জশিটে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পেট্রল বোমা মেরে বাসটি পোড়ানোর কথা সে সময় পুলিশ মামলায় উল্লেখ করলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।’</p> <p>মনিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সেদিন আশিকুর রহমান বাপ্পী নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বরিশালের সাবেক এমপি পঙ্কজ দেবনাথের কাছ থেকে সংগ্রহ করে গানপাউডার দিয়ে বাসটি পোড়ানোর তথ্য এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। এসব তথ্য মামলার পরবর্তী তারিখে আদালতে জমা দেব এবং আদালত তা আমলে নিয়ে প্রকৃত নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এমন প্রত্যাশা করছি।’ </p> <p>গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকা অভিমুখী আইকন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় পৌঁছালে পেট্রল বোমা মেরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এতে বাবা-মেয়েসহ বাসের ৮ ঘুমন্ত যাত্রী আগুনে দ্বগ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে চৌদ্দগ্রাম থানায় পৃথক ২টি মামলা করে। মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও আসামি করা হয়। </p> <p>এদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই বাসের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবুল খায়ের বাদী হয়ে কুমিল্লার আদালতে সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, পুলিশের সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি চৌদ্দগ্রাম থানায় এফআইআর (রেকর্ড) করা হয়।</p>