<p>দীর্ঘ দুই সপ্তার পর আবারো জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনের পাশাপাশি অন্যান্য দিনেও পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। দেশের নানা প্রান্তের ভ্রমণপিপাসু লোকজনের ভিড় বাড়ছে। </p> <p>কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এমনিতেই পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়। কিন্তু জুলাই-আগস্টে দেশের পট পরিবর্তনের পর পর্যটন ব্যবসা স্থবির হয়ে পড়েছিল। তা ছাড়া এবারের বর্ষা মৌসুমে ভারি বর্ষণ হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের টানা ভারি বর্ষণসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পর্যটকদের সময় গেছে অত্যন্ত নিরানন্দে। এ সময় পর্যটকের তেমন ভিড় ছিল না। যারা এসেছিলেন তারাও ফিরে গেছেন অতৃপ্ত মনে।</p> <p>টানা দুই সপ্তাহের বেশ মন্দার পর গতকাল শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটির প্রথম দিনে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। সৈকতে গতকাল সকালে এক রকম দৃশ্য দেখা গেলেও বিকালে হয়ে গেছে আরেক রকম। হাজার হাজার পর্যটকের পদচারণায় উৎসবের মিলন মেলায় পরিণত হয়ে পড়ে বিস্তৃত সৈকত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভ্রমণকারীরা ইচ্ছামতো সাগর উপভোগ করেন। </p> <p>রাজধানী ঢাকার শান্তিনগরের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জিয়াউল হক বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের ১০ সদস্য নিয়ে বেড়াতে এসেছেন কক্সবাজার সৈকতে। তিনি উঠেছেন মেরিন ড্রাইভের ইনানী সৈকত এলাকার সাগরলতা নামের একটি রিসর্টে। কক্সবাজারের শহরকেন্দ্রিক সৈকতের হৈ-হুল্লোড় বাদ দিয়ে নির্জন ইনানী সৈকতের মজাই অন্যরকমের বলে জানান জিয়াউল। তাই সবাইকে নিয়ে সেখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। </p> <p>কক্সবাজার সাগর পাড়ের হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো থাকায় আজ (গতকাল) শুক্রবার প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। আমার হোটেলের ২৮টি কক্ষ ২-৩ দিনের জন্য ভাড়া হয়ে গেছে। আরো অনেকেই আসবেন শনিবার (আজ)।’</p> <p>এদিকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ। সেই সঙ্গে সৈকতে তৎপরতাও বাড়িয়েছে উদ্ধারকারী সি সেভ লাইফগার্ড কর্তৃপক্ষও। </p> <p>সি সেভ লাইফগার্ডের উদ্ধারকারী দলের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ সিপাত কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কক্সবাজার সৈকতের তিনটি পয়েন্টে ৯ জন করে ২৭ জন উদ্ধারকারীদল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদা তৎপর রয়েছে পর্যটকদের সেবায়।’ </p> <p>তিনি জানান, ‘বর্ষা মৌসুম এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। এ কারণে সাগরের পানি এখনো উত্তাল। তাই সৈকতে লাল পতাকা দিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে পর্যটকদের।’</p> <p><strong>ইনানী সৈকতে এক পর্যটকের মৃত্যু</strong></p> <p>এদিকে কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে গোসল করতে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাগরে ভাটার টানে ভেসে যায়। দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ থাকার পর বিকালে জোয়ারের পানিতে নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ বালুচরে ভেসে আসে। </p> <p>জেলা প্রশাসনের সৈকত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত বিচকর্মী মাহবুবুল আলম জানান, মৃত পর্যটকের নাম নাফি শাহরিয়ার (৩০)। তিনি ঢাকার বংশালের গাংগুলীর বাসিন্দা নূর মোহাম্মদের পুত্র।</p>