<p style="text-align:justify">ঝিনাইদহের ডিএসবির পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তিনি যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন সেই দলের অনুগত বলে নিজেকে দাবি করেন। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে অভিযোগ। এর আগে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সেই সখ্যতা গড়ে তুলে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। </p> <p style="text-align:justify">জেলার সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এক নামেই মো. কামরুজ্জামানকে চেনেন বা জানেন। তিনি ঝিনাইদহের ডিএসবির পরিদর্শক ও একই সঙ্গে সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বছরের পর বছর ধরে ঝিনাইদহ জেলাতেই চাকরি করে যাচ্ছেন তিনি। সেই সুবাদে জেলা পুলিশের একক নিয়ন্ত্রণ পরিদর্শক কামরুজ্জামানের হাতে। অভিযোগ রয়েছে এই অদৃশ্য ক্ষমতায় ঝিনাইদহসহ আশপাশের জেলায় গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, ২০০৯ সালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশে যোগদান করেন কামরুজ্জামান। জেলার কয়েকটি থানা ও ডিএসবিতে চাকরি করেছেন তিনি। এক দশকের অধিক সময় একই জেলায় থাকার কারণে অপরাধ সাম্রাজ্যের সঙ্গে বিশেষ সখ্যতা গড়ে ওঠে তার।</p> <p style="text-align:justify">সেখান থেকে জেলার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে সে। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের দমন করতে বিশেষ ভুমিকা রাখেন তিনি। এমনকি তাদের মিথ্যা মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে আদায় করেন মোটা অংকের টাকা।</p> <p style="text-align:justify">সূত্র বলছে, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঝিনাইদহ জেলায় একটানা চাকরি করার সুবাদে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। জেলা শহরের এলজিইডি ভবনের পেছনে বিলাসবহুল বাড়ি, পার্কপাড়ায় উন্নত ফ্লাট, পায়রা চত্ত্বরে মোবাইলের শোরুম, ঠিকাদারি ব্যবসা, মাছের আড়ত ও যশোররে এমএম কলেজের খড়কি এলাকায় কয়েক কোটি টাকার জমি রয়েছে তার।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহে কর্মরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, জেলায় যখন যে পুলিশ সুপারই আসুক না কেন, কৌশলে তাদের নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতো কামরুজ্জামান। এই পুলিশ কর্মকর্তা বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে হাতিয়েছেন বিপুল পরিমাণ টাকা। এখন আবার দেখছি তাদের সাথেই সখ্যতা গড়ে তুলছে সে। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর নানা ধরণের দমন-পীড়ন করা হতো।</p> <p style="text-align:justify">তবে পুলিশ পরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেন, আমি কাউকে কখনো দমন-পীড়ন ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে কোনো টাকা আয় করিনি। আমার সকল সম্পদ-সম্পত্তিই বৈধ আয়ের টাকায় কেনা।</p> <p style="text-align:justify">সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা কমিটির সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী আমিনুর রহমান টুকু জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনেক আমলারা অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। এই পুলিশ কর্মকর্তাও তাদের বাইরে নয়। সরকারের উচিত এ সমস্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পদের অনুসন্ধান চালিয়ে তা জব্দ করা।</p> <p style="text-align:justify">ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এ জেলায় কর্মরত রয়েছেন ও একই সঙ্গে সদর পুলিশ ফাঁড়ি ও ডিএসবির পরিদর্শক পদে চাকরি করছেন বলে আমি জানি। তার সম্পদের বিষয় আমার জানা নেই।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক জানান, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। আমার রেঞ্জের সকল অসাধু কর্মকর্তাদের তালিকা করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>