<p>পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছেন উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী। তিনি এ উপজেলার পূর্বতন নাম ‘জিয়ানগর’ রাখতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর আবেদপত্র পাঠিয়েছেন। আবেদনপত্রের শেষে তিনি নিজেকে পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন। এ আবেদনপত্রের সঙ্গে উপজেলার ৩০০৪ জন মানুষের স্বাক্ষর সংযুক্তি হিসেবেও প্রদান করেছেন।   </p> <p>আবেদনপত্রের বিষয়বস্তু তিনি লিখেছেন, পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার নাম পরিবর্তন করে পূর্বতন নাম ‘জিয়ানগর’ পুনর্বহাল করা প্রসঙ্গে।</p> <p>তিনি লিখেছেন, “আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা (পূর্বতন নাম জিয়ানগর)-এর স্থায়ী বাসিন্দা।</p> <p>অত্র উপজেলাটি পিরোজপুর জেলার সদর উপজেলার সঙ্গে একীভূত ছিল। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০০২ সালের ২৭ মার্চ প্রশাসনিক পুনর্গঠন ও সংস্কারের জন্য জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) ৮৭তম বৈঠকে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থানাকে ‘জিয়ানগর’ উপজেলা নামে নামকরণের প্রস্তাব আনা হয়। এরপর ২০০২ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পিরোজপুর সদর উপজেলার পত্তাশী, পারেরহাট, ও বালিপাড়া - এই ৩টি ইউনিয়নের ৯৪.৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তন এলাকা নিয়ে জিয়ানগর উপজেলা নামে একটি নতুন প্রশাসনিক উপজেলা গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তের বলে ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্থানীয় জনগনের দাবির প্রেক্ষিতে ইন্দুরকানী সফর করে ইন্দুরকানী কলেজ মাঠে এক জনসভায় ইন্দুরকানী থানাকে জিয়ানগর উপজেলা নামে উদ্বোধন করেন।</p> <p>পরবর্তীতে, ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)-এর ১১৩তম সভায় পিরোজপুরের সপ্তম উপজেলা জিয়ানগরের নাম পরিবর্তন করে পূর্বের ইন্দুরকানী থানার নামে নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ (উপজেলা-১ শাখা)-এর জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।</p> <p>জিয়ানগর নাম বাতিলের পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, উক্ত নাম পরিবর্তনের পেছনে জিয়ানগর নামের সঙ্গে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামের সামঞ্জস্যতা থাকায় কেবলমাত্র রাজনৈতিক বিদ্বেষ এবং হীনমন্যতা ব্যতীত আর কোনো কারণ ছিল না। বিগত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায় আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ এই নাম পরিবর্তনের কোনো সুসংগঠিত প্রতিবাদ করতে পারিনি।</p> <p>যেহেতু বিগত ৫ আগস্ট, ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত আত্মত্যাগের পথে উঠে আসা গণ-অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছে এবং ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।</p> <p>সুতরাং বিগত সরকারের রেখে যাওয়া বিভিন্ন অপকর্ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে রয়েছে, যে লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজও করে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে, আমাদের জন্মস্থান এই উপজেলার শ্রুতিকটু নাম ‘ইন্দুরকানী’ পরিবর্তন করে এর পূর্বতন নাম ‘জিয়ানগর’ প্রতিস্থাপন করা অতীব জরুরি। উপজেলার এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আমাদের স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি এবং গণমানুষের আত্মত্যাগের ওপর প্রতিষ্ঠিত এই দেশপ্রেমিক সরকার আমাদের দাবিটি মেনে নেবে বলে আমরা স্থানীয় জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।”</p>