<p style="text-align:justify">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিহত গার্মেন্ট শ্রমিক আব্দুল আজিজের স্ত্রীর এক লাখ টাকা দেনমোহর পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শেরপুরের নকলা উপজেলা শাখার আমির গোলাম সারোয়ার নিহত আব্দুল আজিজের স্ত্রী হোসনা বেগমের হাতে বিয়ের কাবিন বাবদ দেনমোহরের এ অর্থ তুলে দেন।</p> <p style="text-align:justify">এসময় জামায়াতের ইউনিয়ন সভাপতি আতিক আলম, নারায়ণখোলা বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ইমরান হোসেন সবুজ, সমাজসেবক মতিউর রহমান মতিসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নকলা উপজেলার ৮ নম্বর চরঅষ্টধর ইউনিয়নের মৃত মোজাম্মেল হকের মেঝো ছেলে ছিলেন শহীদ আব্দুল আজিজ (৩০)। তিনি গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় টেক্সইউরোপ বিডি লিমিটেড নামে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ১ জুলাই আব্দুল আজিজের সঙ্গে পারিবারিকভাবে হোসনা বেগমের একলাখ টাকা দেনমোহর সাব্যস্ত করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। আগস্ট মাসের বেতন ভাতা নিয়ে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করার কথা ছিল। তবে এর আগেই গত ৫ আগস্ট গাজীপুর কর্মস্থলের কাছে নিজ মোবাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও করার সময় পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে আব্দুল আজিজ নিহত হন।</p> <p style="text-align:justify">বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নকলা উপজেলার আমীর আমির গোলাম সারোয়ার বলেন, স্ত্রী হোসনা বেগমের দেনমোহর ইসলামী শরিয়া মোতাবেক পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। তাই শহীদ আব্দুল আজিজের কাবিনের এ দেনমোহর পরিশোধ করে তাকে দায়মুক্ত করা হল।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, শহীদ আব্দুল আজিজ আমাদের জাতীয় সম্পদে পরিণত হয়েছে। শহীদ আব্দুল আজিজের কাছে এ জাতি অনেক ঋণী হয়ে পড়েছে। আমরা বেঁচে থাকতে শহীদ পরিবার ঋণের মধ্যে থাকবেন, দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে বসে থাকতে পারে না।</p> <p style="text-align:justify">গোলাম সারোয়ার জানান, শহীদ আজিজের স্বপ্ন ছিল খুব শীঘ্রই স্ত্রীকে ঘরে নিয়ে আসবেন। ভাগ্যের পরিহাস জুলুমবাজ জালিমেরা তার সেই স্বপ্নপূরণ হতে দেয়নি। এই কিশোরীরও স্বপ্ন ছিল লাল শাড়ি পড়ে স্বামীর বাড়িতে যাবে, তা হয়ে উঠলো না। যেহেতু শহিদ আব্দুল আজিজ ভাই ছিলেন একজন ধার্মিক মানুষ। তার স্বপ্ন ছিল দেনমোহর পরিশোধ করেই স্ত্রীকে ঘরে তুলে নিয়ে আসবেন। মজলুম সাংগঠনিক কর্মী হিসেবে শহিদের স্বপ্নপূরণ করা আমাদের দায়িত্ব। এই দায়িত্বের জায়গা থেকেই এক লাখ টাকা দেনমোহর পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই পরিবারের প্রয়োজনে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।</p> <p style="text-align:justify">উল্লেখ্য, এর আগে নিহত আব্দুল আজিজের পরিবারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা ও জামায়াতে ইসলামীর শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করেছেন।</p>