<p>বন্যার পানি নামার সাথে সাথে নেত্রকোনার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষত। ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল তোড়ে সীমান্ত এলাকার প্রায় সবগুলো গ্রামীণ সড়ক, উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক সড়কের বিভিন্ন অংশ ও সেতু কালভার্ট ভেঙে গেছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা। এসব সড়কে এখন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সীমান্ত জনপদের হাজারো মানুষ।</p> <p>স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নেত্রকোনা সূত্র জানায়, বন্যায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা সড়ক, ইউপি সড়ক ও গ্রামীণ সড়ক মিলে প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এসব সড়কের বেশকিছু সেতু-কালভার্ট ভেঙে গেছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে জেলায় প্রায় ১৪৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্রা ও হাওরাঞ্চল খ্যাত মদন উপজেলায়। মদন উপজেলায় ৫১ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙে ক্ষতি হয়েছে ৫৫ কোটি টাকার। বারহাট্রায় ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কলমাকান্দায় ২৮ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। দুর্গাপুরে ৪৫ মিটার সেতু-কালভার্ট ও ১৩ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙে ১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কেন্দুয়ায় ৩৫ মিটার সেতু-কালভার্ট ও নয় কিলোমিটার সড়ক ভেঙেছে। ক্ষতির পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা। আটপাড়া উপজেলায় ২১০ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট ও আড়াই কিলোমিটার রাস্তা ভেঙে ক্ষতি হয়েছে সাত কোটি ৯৪ লাখ টাকা।</p> <p>সরেজমিন কলমাকান্দা উপজেলার পাঁচগাঁও, খারনৈ, গোবিন্দপুর, রংছাতি, বড়কাপন, গুতুরা এলাকার কয়েকটি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বেহাল সড়ক দিয়ে চরম ভোগান্তি আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন এসব এলাকার যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। কমলাকান্দা-পাঁচগাঁও সড়কের কয়রাখালী, কালিহালা, আমগড়া, পাঁচগাঁওবাজার এলাকায় রাস্তায় অসংখ্য ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তার একপাশ ভেঙে ছোট হয়ে গেছে। এই সড়কের অটোরিকশা চালক কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘সড়কের যে অবস্থা, গর্তে পড়ে গাড়ি নষ্ট হয়। যাত্রীর কষ্ট হয়। এইসব দেখার কেউ নাই।’</p> <p>খারনৈ এলাকার বাসিন্দা মোবারক মিয়া বলেন, ‘পানির স্রোতে রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ভাঙ্গা রাস্তায় এখন হাঁটারও উপায় নাই। আমরা খুব কষ্টে আছি। রাস্তার জন্য ঘর থেকে বের হতেই মন চায় না।’</p> <p>স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করছি। এখন পর্যন্ত সরেজমিনে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ভাঙা রাস্তা পেয়েছি। রাস্তা মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। দ্রুতই ভাঙা সেতু-রাস্তাগুলো মেরামতের আওতায় নিয়ে আসব।’</p>