<p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনে একপ্রকার অচল হয়ে পড়েছিল দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক। কারফিউয়ের কারণে মহাসড়কে কোনো প্রকার যানবাহন এমনকি দূর পাল্লার কোনো বাস চলেনি। টানা এক সপ্তাহের অচলাবস্থার পর গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।</p> <p>দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সব পরিবহণই এদিন মহাসড়কে যাত্রী পরিবহণ করেছে। এদিন কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে মহাসড়কে নেমে আসে প্রায় সব ধরনের গণপরিবহণ। একইভাবে সেসব স্থান থেকে পটিয়ায়ও ফিরে আসে বিভিন্ন পরিবহণ। প্রায় প্রতিটা বাস কাউন্টারেই দেখা গেছে যাত্রীদের উপস্থিতি।</p> <p>সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) পটিয়ার বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, এনা, পূর্বানী, তিশা, রয়েল, সেন্টমার্টিন, লন্ডন এক্সপ্রেস পরিবহনসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িও ছেড়ে যায়। একই সময় রাজধানী ঢাকাসহ আরো বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও গাড়ি ছেড়ে আসছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা। </p> <p>সৌদিয়া পরিবহণের পটিয়া কাউন্টারের ম্যানেজার মো. শাকিল বলেন, ‘মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সড়কে গাড়ি নামিয়েছি। যাত্রীর উপস্থিতিও ভালো।’</p> <p>আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল বুধবার সকাল থেকেই থেকেই চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস ছেড়ে যায়। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থান থেকেও গাড়ি আসছে। মহাসড়কে নিরাপত্তা থাকার কারণে যাত্রীরাও খুশি আর টানা কয়েকদিন পরে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাতে পেরে আমাদের চালক ও শ্রমিকরা খুশি।’</p> <p>এদিকে, চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক ছিল বলে জানান যাত্রীরা। </p> <p>পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক বলেন, ‘কারফিউ শিথিল হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহনের অনেকটা স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে। কোথাও যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য হাইওয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’</p> <p>অপরদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিএনপি জামায়াতের সহিংসতা রোধে চট্টগ্রামের পটিয়ায় সতর্ক অবস্থানে ছিল স্হানীয় সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল। পাশাপাশি পটিয়া থানা পুলিশও ছিল বেশ সতর্ক অবস্থায়। তাই কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা সহিংসতা করতে পারেনি দুর্বৃত্তরা।</p> <p>গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ায় বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘুরে স্হানীয় সাংবাদিকদের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি।</p> <p>প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপি একটি উদ্দেশ্য নিয়ে কোটা আন্দোলন নিয়ে সহিংসতায় জড়িয়েছে। কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা স্বীকার করেছে তারা কোনোভাবেই এ সহিংসতার সাথে জড়িত ছিল না। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ বিএনপি জামায়াতের নিষ্ঠুরতা দেখেছে, বর্বরতা দেখেছে, ধ্বংসলীলা দেখেছে। আমরা দেখেছি, সেতুভবন, বিটিভি ভবন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিটিভিতে শত বছরের আর্কাইভ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই অফিসের ইন্টারনেটের ব্যবস্থাগুলোও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। স্বপ্নের মেট্রো রেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসে আঘাত করা হয়েছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘একটার পর একটা থানায় তারা আঘাত করতে যাচ্ছিল। এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরাও করেনি। তারা যুদ্ধের কৌশল হিসেবে সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট উপড়ে ফেলছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে। এভাবে সরকারি স্থাপনাগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিএনপি জামায়াত আবারো বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর দেশে পরিণত করার জন্য পেছন থেকে যারা আন্দোলনে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছিল, ছাত্রদের বাদ দিয়ে তারা সামনে চলে এসেছে। এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য এখন সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।’</p>