<p style="text-align:justify">রায়পুরায় মেঘনা নদীতে পান্থশালা-সায়দাবাদ রুটে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে অরাজকতা চালাচ্ছে ইজারাদার। নির্ধারিত টোলের বিপরীতে ১০ থেকে ৩০ গুণ বেশি টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা সম্প্রতি জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">সওজ ও স্থানীয়রা জানান, রায়পুরা উপজেলার ২৪ ইউনিয়নের মধ্যে আটটি ইউনিয়ন মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চল।</p> <p style="text-align:justify">ইঞ্জিনচালিত নৌকাই এসব এলাকার প্রধান বাহন। গত ২০১২ সালে চরাঞ্চলে যাতায়াত সুবিধার কথা চিন্তা করে সড়ক ও জনপথের আওতায় মেঘনার শাখা নদীতে একটি সেতু ও মেঘনা নদীতে পান্থশালা থেকে সায়দাবাদ ফেরি চলাচল চালু করা হয়। নরসিংদী সড়ক বিভাগ ফেরি দিয়ে মোট ১৩ ধরনের যানবাহনের যাতায়াতের জন্য টোল নির্ধারণ করে দেয়। এর মধ্যে ট্রেইলার ২৫০ টাকা, ভারী ট্রাক ২০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ১০০ টাকা, বড় বাস (৩১ আসনবিশিষ্ট) ৯০ টাকা, মিনি ট্রাক ৭৫ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহৃত যান ৬০ টাকা, মিনিবাস ৫০ টাকা, মাইক্রোবাস ৪০ টাকা, ফোর হুইলচালিত যান (পিকআপ, জিপ) ৪০ টাকা, সিডার কার ২৫ টাকা।</p> <p style="text-align:justify">এ ছাড়া তিন ও চার চাকার মোটরাইজড যান (অটো, টেম্পো, সিএনজি, অটোরিকশা, অটোভ্যান) ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যান বাইসাইকেল ও ঠেলাগাড়ি পাঁচ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে সড়ক বিভাগের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা মানছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদীয়া এন্টারপ্রাইজ। ফেরি পারাপারে প্রতি যানবাহনে ১০ গুণ থেকে ৩০ গুণ পর্যন্ত বেশি টোল আদায় করা হচ্ছে। বিকল্প পথ না থাকায় চলাচলকারী যানবাহনের চালকরা অনেকটাই জিম্মি ফেরি ইজারাদারের কাছে।</p> <p style="text-align:justify">ভুক্তভোগী খোরশেদ আলম, সাহাবুদ্দিন, আঙুর মিয়া, শাকিল ও বিল্লাল জানান, উপজেলা সদর থেকে দুর্গম চরাঞ্চলে যেতে ফেরিতে যানবাহন পারাপার করতে হয়। এতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সরকারনির্ধারিত টোলের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ গুণ টোল আদায় করছেন ইজারাদার। টোকেন বা রসিদ ছাড়াই দুই চাকার যান ১০০ টাকা, তিন চাকার যান ৩০০ টাকা, পিকআপ ও ট্রলি থেকে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত হারে রসিদের মাধ্যমে টোল আদায়ের দাবি জানান তাঁরা।</p> <p style="text-align:justify">ভ্যানগাড়িচালক কাজী আলকাছ উদ্দিন বলেন, ‘পাঁচ টাকার টোল ৭৫ টাকা নিচ্ছে। কিন্তু কোনো রসিদ দিচ্ছে না।’</p> <p style="text-align:justify">অটোরিকশাচালক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়েছে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত অটোরিকশার টোল ১০ টাকা।’</p> <p style="text-align:justify">শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাকে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। টোল বেশি আদায় হচ্ছে ভিন্নভাবে। অনেক সময় গাড়ির সংকট থাকে। তখন হয়তো ফেরি ও যানবাহনের চালকদের কম্প্রোমাইজের মাধ্যমে বেশি টাকা আদায় করা হয়।’ টোল আদায়কারী ইজারাদার নদীয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মোশাররফ ভাণ্ডারী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ১০ বছর ধরে ফেরিটি চালাচ্ছি। এই সড়কটি সচল না। যেই গাড়ি পার করি আবার সেই গাড়ির জন্যই বসে থাকি। অনেক সময় চালকরাই আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বাড়তি টোল দেন, আবার অনেক সময় আমাদেরও বেশি নিতে হয়। বেশি গাড়ি চলাচল করলে হয়তো এই সমস্যাটি হতো না।’</p> <p style="text-align:justify">সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী হামিদুল ইসলাম বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>